,

চায়ের কাপে ভোটের ঝড়! কে হচ্ছেন নবীগঞ্জের পৌর পিতা ?

মতিউর রহমান মুন্না ॥ আগামী ৩০ ডিসেম্বর নবীগঞ্জ পৌর নির্বাচন গিরে সরগরম হয়ে উঠেছে পৌরসভার জনপদ। চারই দিকে বিরাজ করছে সাজ সাজ রব। পোষ্টার আর ব্যানারে ছেয়ে গেছে পৌর এলাকা। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত মাইকিংয়ে অতিষ্ট হয়ে উঠেছেন পৌর নাগরিকবৃন্দ। বিশেষ করে এই দলীয় প্রতীক নির্বাচনকে নিয়ে চায়ের কাপে উটে গেছে ভোটের ঝড়। পৌর এলাকার সর্বত্র একটাই আলোচনা কে হচ্ছেন নবীগঞ্জের পৌর পিতা? এবার নবীগঞ্জে মেয়র পদে ৫ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। আওয়ামীলীগের মনোনিত প্রার্থী ৩ বারের নির্বাচিত মেয়র তোফাজ্জল ইসলাম চৌধুরী (নৌকা প্রতীক), বিএনপির মনোনিত প্রার্থী ছাবির আহমদ চৌধুরী (ধানের শীষ প্রতীক), স্বতন্ত্র প্রার্থী জাহাঙ্গীর রানা (জগ প্রতীক), জাতীয় পার্টির মনোনিত প্রার্থী মাহমুদ চৌধুরী (লাঙ্গল প্রতীক), স্বতন্ত্র পার্থী আব্দুল জোবায়ের চৌধুরী (মোবাইল প্রতীক) নিয়ে মাঠে নেমেছেন। এবার ত্রিমূখি নির্বাচন হবে বলে ধারনা ভোটারদের। বাঙালি উৎসব প্রিয় জাতি। যেকোনো একটা উপলক্ষ পেলেই মেতে উঠি আনন্দ-উল্লাসে। এই আনন্দের কারণেই হয়তো শত অভাব অনটনের মধ্যে থেকেও গ্যালারিতে বসে বলে উঠতে পারি ‘হাইজ দ্যাট’। আবার প্রতিহিংসার বিপরীতে দাঁড়িয়ে গর্জে উঠে বলতে পারি, মোরা একটি ফুলকে বাঁচাবো বলে যুদ্ধ করি। সেই উৎসব এখন শুরু হয়ে গেছে পৌর এলাকার বিভিন্ন গ্রামের আনাচে কানাচে। ভোটের উৎসব। আসলে উৎসব শুরু হয়েছে অনেক আগেই। পৌর এলাকার চায়ের দোকানে নতুন চেয়ার-টেবিল বা কাপ-পিরিচ এসেছে। কিছুটা ভাঙাচোরা যে দোকানগুলো, সেগুলোও সারানো হয়েছে, নতুন বয়-বেয়ারা নিয়োগ হয়েছে। এসবই সত্যি খবর। আড্ডা চলছে, চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ। বাগবিতন্ডা যে চলছে না তাও নয়। মনোনয়নপত্র জমা, যাচাই বাছাই শেষে, অত:পর এবার প্রতীক বরাদ্দের পর তা আরো ব্যাপক মাত্রা পেয়েছে। ৯টি ওয়ার্ড নিয়ে ১৯৯৭ সালে প্রতিষ্ঠিত নবীগঞ্জ পৌরসভা। পৌরসভার মোট ভোটার সংখ্যা ১৬ হাজার ১৯৫ জন। এবার মেয়র পদে লড়ছেন ৫জন, সংরতি মহিলা আসনের কাউন্সিলর পদে ৯জন, সাধারন ওয়ার্ডের কাউন্সির পদে ৪১জন প্রার্থী। নবীগঞ্জ পৌরসভার প্রতিষ্টা লাভ করার পর থেকেই পৌর পিতা হয়ে রয়েছেন আওয়ামীলীগের মনোনিত প্রার্থী তোফাজ্জল ইসলাম চৌধুরী। টানা ৩ বার তিনি নির্বাচিত হয়ে পৌর এলাকার ব্যাপক উন্নতি করেছেন। আরো কিছু অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত হলে নবীগঞ্জ পৌরসভা একটি মডেল পৌরসভায় রূপান্তরিত হবে। তিনি নবীগঞ্জ ডিগ্রী কলেজের সহকারী অধ্যাপক। তীব্র শীতকে হার মানিয়ে গত কয়েকদিন ধরে পুরো দমে জমে উঠেছে পৌর নির্বাচনের আমেজ। ভোটারদের কাছে বিভিন্ন উন্নয়নের কথা বলে মন জয় করার চেষ্টা করছেন। নির্বাচনী মাঠে কেউ কাউকে ছাড় দিতে নারাজ। প্রার্থীরা প্রতীক বরাদ্দের পরপরই প্রচারনায় নেমে পড়েছেন এবং পৌর এলাকার উন্নয়নের বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভোটারদের মন জয় করতে তীব্র শীত উপক্ষো করে সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত গণসংযোগ, লিফলেট বিতরন, উঠান বৈঠক চালিয়ে যাচ্ছেন। ভোটারদের দিচ্ছেন ডজন ডজন প্রতিশ্র“তি। এদিকে, আওয়ামীলীগ মনোতিত প্রার্থী ৩ বারের নির্বাচিত মেয়র তোফাজ্জল ইসলাম চৌধুরী তিনি বিগত ১৫ বছরের পৌর এলাকায় যে সমস্ত উন্নয়নের বিপ্লব ঘটিয়েছেন এবং বর্তমান সরকারের আমলে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকান্ডের চিত্র তুলে ধরে নবীগঞ্জ পৌরসভাকে একটি আধুনিক পৌরসভা গঠন করার লক্ষ্যে নৌকা প্রতীকে ভোট দিয়ে তাকে ফের নির্বাচিত করার জন্য ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ধরনা দিচ্ছেন। তোফাজ্জল ইসলাম চৌধুরী বলেন- মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ম শেখ হাসিনা ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। আমি মাননীয় প্রধান মন্ত্রীর মনোনিত মেয়র প্রার্থী, নবীগঞ্জ পৌরবাসীর ভালোবাসায় আমি টানা ৩বার নির্বাচিত হয়েছি। তিনি বলেন- স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি নৌকা মার্কা, জাতির জনক শেখ মুজিবুরের নৌকা মার্কা। আর এই নৌকা মার্কা নিয়ে আগামী ৩০ ডিসেম্বর পৌর নির্বাচনে ভোট যুদ্ধে নৌকার বিজয় শুনিশ্চিত করবো ইনশাআল্লাহ। জয়ের ব্যাপারে তিনি শত ভাগ আশাবাদী। অপরদিকে- বিএনপির প্রার্থী ছাবির আহমদ চৌধুরী উন্নয়ন ও পরিবর্তনের অঙ্গীকার নিয়ে আরো আগে থেকেই মাঠে সক্রীয় রয়েছেন। তিনি বলেন- উন্নয়নই পৌরসভার পরির্বতন ঘটাবে, নবীগঞ্জের মানুষ পরিবর্তন চায়। তিনি বলেন- দীর্ঘ ১৭ বছরে নবীগঞ্জের কোন উন্নয়ন হয়নি। নবীগঞ্জে পৌরসভার মানুষ এলাকার উন্নয়ন চায় আর সেই উন্নয়নের সাথে পরিবর্তনও চায়। তাই তিনিও জয়ের ব্যাপারে তিনি শত ভাগ আশাবাদী। ছাবির আহমদ চৌধুরী পৌরসভার বিভিন্ন একালার বিভিন্ন সমস্যার চিত্র তুলে ধরে এবং উন্নয়ন করার লক্ষে তাকে ধানের শীষে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করলে এসব সমস্যার সমাধানও উন্নয়ন করবে মর্মে ভোটরদের বাড়ি বাড়ি ছুটছেন। ছাবির আহমেদ চৌধুরী নবীগঞ্জ পৌর বিএনপির সভাপতি ও পৌরসভার ৩ বারের প্যানেল মেয়র। এবার পৌর নির্বাচনে তাকে বিএনপি থেকে মনোনিত করা হয়েছে। অপর দিকে, স্বতন্ত্র প্রাথী হিসেবে মাঠে শক্ত অবস্থান নিয়ে রয়েছেন লন্ডন প্রবাসী দেশ বরন্য একজন গীতিকার, কবি ও সাহিত্যিক জাহাঙ্গীর রানা। সুশীল সমাজে তার অনেক খ্যাতি রয়েছে। তিনি উচ্চ শিক্ষিত ও ছাত্রদলের প্রতিষ্টাতা সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। লন্ডন যাওয়ার পুর্বে আর্তসামাজিক উন্নয়নে এলাকায় নিবেদিত ছিলেন। অভিজ্ঞ মহল ও সাধারণ ভোটারদের সাথে আলাপ করে জানাযায় এবার মাঠে মেয়র প্রার্থী ৫জন থাকলেও ভোট যুদ্ধে মুল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে ৩ জনের। এবার ত্রীমূখি নির্বাচন হবে বলে মনে করছেন সাধারণ ভোটাররা।


     এই বিভাগের আরো খবর