,

দীঘলবাক উচ্চ বিদ্যালয়ের ৭০ বছর পূর্তি উৎসবের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন শিক্ষামন্ত্রী ও অতিথিদের স্বাগত জানাতে প্রস্তুত এলাকাবাসী

শাহ্ মনসুর আলী নোমান ॥ নবীগঞ্জ উপজেলার ঐতিহ্যবাহী সুপ্রাচীন, দীঘলবাক উচ্চ বিদ্যালয়ের ৭০ বছর পূর্তি ও প্রাক্তন শিক্ষার্থী পূনর্মিলনী উৎসব-২০১৬ এর সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। স্থানীয়বাসী প্রস্তুত অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি শিক্ষামন্ত্রী নূরুল ইসলাম নাহিদ এম.পি ও অন্যান্য অতিথিদের স্বাগত জানানোর জন্য। ব্যানার, ফেস্টুন, গেইট, তোরণ দিয়ে সাজানো হয়েছে অতিথিদের আগমনের রাস্তা। সৈয়দপুর থেকে দীঘলবাক উচ্চ বিদ্যালয় পর্যন্ত ব্যক্তি, রাজনৈতিক দল, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সাংস্কৃতিক সংগঠনের উদ্যোগে নির্মিত হয়েছে অনেক গেইট এবং অনেকগুলো নির্মাণাধীন। ইতিমধ্যে ৭০ বছর পূর্তি উদ্যাপন ইউ.কে কমিটির প্রতিনিধি দল সিলেট এসে পৌঁছেছেন। প্রতিনিধি দলে আছেন এ.কে আজাদ ছোটন, শেখ শামীম আহমদ, মিছাবাহ উদ্দিন রউফ, মোনায়েম খাঁন, আলমগীর সরকার সহ আরও অনেকে। প্রস্তুতি সম্পর্কে জানতে চাইলে ৭০ বছর উদ্যাপন কমিটির আহ্বায়ক, বিশিষ্ট কলামিস্ট এডভোকেট আনসার খান জানান, দীঘলবাক উচ্চ বিদ্যালয়ের ৭০ বছর পূর্তি উৎসব প্রাক্তন ছাত্রছাত্রীদের পূনর্মিলনী মন্ত্রী মহোদয়ের আগমন উপলক্ষে সকল প্রকার আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয়েছে। তিনি বলেন এই ঐতিহাসিক উচ্চ বিদ্যালয়ের মহা মিলনের এই অনুষ্ঠানকে সার্বিকভাবে সাফল্যজনকভাবে সম্পন্ন করতে এক ঝাঁক কর্মী বাহিনী, ৭০ বছর পূর্তি উদ্যাপন কমিটি, উপ-কমিটি, উপদেষ্টা কমিটি, সাবেক-বর্তমান শিক্ষক-শিক্ষার্থী, জনপ্রতিনিধি নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। এছাড়া স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসন, জেলা প্রশাসন, সংসদ সদস্যবৃন্দ, রাজনৈতিক, সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ তাদের সহযোগিতা হাত সম্প্রসারণ করেছেন এবং তাহা অব্যাহত থাকবে বলে তিনি জানান। দীঘলবাক উচ্চ বিদ্যালয় সংলগ্ন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, বাড়ি-ঘর, রাস্তাঘাট, সরেজমিনে ঘুরে ঘুরে দেখা গেছে সর্বত্র এক উৎসবের আমেজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো সাজতেছে বর্নিল সাজে। ব্যানার ফেস্টুন লাগাতে ব্যস্ত স্থানীয়বাসী। দীঘলবাক উচ্চ বিদ্যালয়ের বেশ কয়েকটি ইউনিয়নের স্থানীয় মহল ৯ জানুয়ারী ২০১৬ এর ৭০ বছর পূর্তি ও পূনর্মিলনী মহা উৎসব উপলক্ষ্যে দাওয়াত করেছেন তাদের আত্মীয়স্বজনদের। সবাই এই অনুষ্ঠানের অংশীদর হতে এবং মহান অতিথিদের সাথে সাক্ষাত করতে ৭ তারিখ থেকে আত্মীয়ের বাড়িতে এসে জমায়েত হবেন। বিশেষ করে শিক্ষামন্ত্রী, অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রীর আগমনের বার্তা জানতে পেরে স্থানীয়বাসীর মধ্যে সৃষ্টি হয়েছে আনন্দের জোয়ার। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক, অনুষ্ঠানের অন্যতম পৃষ্ঠপোষক মোঃ নিজামুল ইসলাম এবং বিদ্যালয়ের পরিচালনা পরিষদের সভাপতি ও অনুষ্ঠানের সদস্য সচিব আজিজুল হক শিবলী জানান, ৫ জানুয়ারী নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মাছুম বিল্লাহ্ অনুষ্ঠানের স্থান, দীঘলবাক উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে দীঘলবাক উচ্চ বিদ্যালয় ও সার্বিক অবস্থা, অতিথিদের আগমনের প্রবেশপথ পর্যবেক্ষণ করে সন্তোষ প্রকাশ করেন। মোঃ মাছুম বিল্লাহ এক মত বিনিময় সভায় মিলিত হয়ে অনুষ্ঠানকে সুন্দরভাবে গড়ে তুলতে সবার প্রতি আহ্বান জানান এবং অনুষ্ঠানকে আরও আকর্ষণীয় করে তুলতে বিভিন্ন বিষয়ে নির্দেশনা প্রদান করেন। অনুষ্ঠানের যুগ্ম আহ্বায়ক, শাহজাহান সিরাজ জানান, ঐতিহ্যবাহী এ প্রতিষ্ঠানের ৭০ বছর পূর্তি উৎসবকে একটি মহা মিলন উৎসব হিসেবে পালন করতে সব ধরণের প্রস্তুতি আমরা সম্পন্ন করেছি। তিনি বলেন, প্রাক্তন শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও আমন্ত্রিত অতিথিদের অংশগ্রহণে এই অনুষ্ঠানটি ইতিহাসের পাতায় স্থান পাবে বলে আমি মনে করি। কথা হয় অনুষ্ঠানের আরেক যুগ্ম আহ্বায়ক ও বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের সদস্য আব্দুল বারিক রনি’র সাথে, তিনি জানান, এই মহামিলন উৎসবকে সাফল্যমন্ডিত করে তুলতে অনুষ্ঠানের মূল প্যান্ডেল ও এর আশেপাশে প্রায় ১০-১২ হাজার লোক যাতে অনুষ্ঠান উপভোগ করতে পারে, আমরা সেভাবে প্রস্তুতি গ্রহণ করেছি। তিনি আরও জানান, অনুষ্ঠানের দিন প্রধান অতিথি শিক্ষামন্ত্রী নরুল ইসলাম নাহিদ সকাল ১০টায় শুভাগমনের পর প্রধান অতিথি কর্তৃক জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানমালার উদ্বোধন হবে। জানা যায়, দীঘলবাক উচ্চ বিদ্যালয়ের ৭০ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে মহামান্য রাষ্ট্রপতি, শিক্ষামন্ত্রী নূরুল ইসলাম নাহিদ এম.পি, অর্থ পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম.এ মান্নান এম.পি, বিশ্বের স্বনামধন্য ইতিহাসবিদ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রো-ভিসি ও বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের সদ্যসাবেক সদস্য, হবিগঞ্জ জেলার সংসদ সদস্যবৃন্দ ও বিভিন্ন প্রথিতযশা, রাজনৈতিক, সামাজিক ও দেশের সরকারী-বেসরকারী উচ্চ পদস্থ ব্যক্তিবর্গ এই অনুষ্ঠানের সার্বিক সফলতা ও উন্নতি কামনা করে বাণী দিয়েছেন। মহামান্য রাষ্ট্রপতি তাঁর বাণীতে উল্লেখ করেন, “আমি আশা করছি, বাংলাদেশের গৌরবময় চেতনাকে লালন করে সরকার ঘোষিত ‘রূপকল্প-২০২১’ ও ‘রূপকল্প-২০৪১’ বাস্তবায়নে এ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীগণ বলিষ্ট ভূমিকা পালন করবে।” কথা হয় উৎসব কমিটির উপদেষ্টা ও দীঘলবাক উচ্চ বিদ্যালয়ের পরিচালনা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মতিউর রহমান চুনু মিয়া, উপদেষ্টা ও সাবেক চেয়ারম্যান পরিচালনা পরিষদ দীঘলবাক উচ্চ বিদ্যালয়, শাহ আশ্রব আলী, উপদেষ্টা ও দীঘলবাক ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোঃ ছালিক মিয়া ও উপদেষ্টা নূরুল ইসলাম সহ প্রমুখ ৭০ বছর পূর্তি অনুষ্ঠান সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গের সাথে। উনারা জানান, আমরা আনন্দিত, আমরা গৌরবান্বিত যে, আমাদের এই প্রাণপ্রিয় বিদ্যালয়টির ৭০ বছর পূর্তি অনুষ্ঠানের সকল আয়োজন সম্পন্ন করতে পেরেছি। আমরা ৯ জানুয়ারীর সেই মহামিলনের দিনের প্রত্যাশায় আছি। এই মহামিলন অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী নূরুল ইসলাম নাহিদ, প্রধান অতিথি, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব শ্রী বনমালী ভৌমিক (সাবেক ছাত্র দীঘলবাক উচ্চ বিদ্যালয়), অর্থ পরিকল্পনা মন্ত্রী এম.এ মান্নান, বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের সদ্যসাবেক সদস্য প্রফেসর ড. আতফুল হাই, শিবলী, হবিগঞ্জ জেলার সংসদ সদস্যবৃন্দ, সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডা: মোর্শেদ আহমদ চৌধুরী, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক লুৎফুল হাই জামী, হবিগঞ্জ জেলা পরিষদ এর চেয়ারম্যান ডা: মুশফিক হোসেন চৌধুরী ও নবীগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান এডভোকেট আলমগীর চৌধুরী বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকার সদয় সম্মতি জ্ঞাপন করেছেন বলে আয়োজককে জানান। এছাড়াও সিলেট বিভাগের সামাজিক, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ, সরকারী-বেসরকারী ও বিভিন্ন এনজিও এর কর্মকর্তাবৃন্দ সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বলে আশা করা হচ্ছে।


     এই বিভাগের আরো খবর