,

নবীগঞ্জে পৈত্রিক স্বত্ত্ব দখলীয় ভূমিতে চাষাবাদকালে হামলার জের ধরে সংঘর্ষে আহত ১০ ॥ মামলা দায়ের ॥ গ্রেফতার ১

সংবাদদাতা ॥ নবীগঞ্জ উপজেলার খনকারীপাড়া গ্রামে মোঃ তোফায়েল আহমেদ তাহাদের পৈত্রিক স্বত্ত্ব দখলীয় ভূমিতে চাষাবাদ করায় সময় একই গ্রামের আবু বক্কর ও তাহার লোকজন মোঃ তোফায়েল আহমেদ এর উপর অতর্কিত হামলা চালায়। এসময় তোফায়েল আহমদের শোর চিৎকারে তাহার ভাই ও আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসলে উভয়পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধে। এতে জুয়েল আহমেদ, শাজাহান মিয়া, তোফায়েল আহমেদ, সোহাগ মিয়া, শাহীন মিয়া সহ ১০ জন মারাত্মক আহত হয়। আহত অবস্থায় তাদেরকে নবীগঞ্জ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। জানা যায়, নবীগঞ্জ উপজেলার খনকারীপাড়া গ্রামের আবু বক্কর দীর্ঘদিন পূর্বে একই গ্রামের মোঃ জুয়েল আহমদ এর পৈত্রিক ভূমির সীমানা খুটি তুলে ফেলে। এনিয়ে গ্রামে শালিস বৈঠকের মাধ্যমে বিষয়টির নিষ্পত্তি হয়। কিছুদিন পর এরই জের ধরে আবু বক্কর গংরা কাগজপত্র না থাকা সত্ত্বেও একই গ্রামের অধ্যাপক আব্দুন নুর এর নিকট জমির অংশ দাবী করে। এ নিয়েও গ্রামে কয়েকটি শালিস বৈঠক হয়। সর্বশেষ শালিস বৈঠকে বাজার কমিটির সভাপতি আব্দুল গফুর চৌধুরী ও নবীগঞ্জের বিশিষ্ট মুরুব্বি সাবেক মেম্বার বশির মিয়া, সাবেক কাউন্সিল রিজভী আহমেদ খালেদ, নবীগঞ্জ উপজেলা যুবদল সাধারণ সম্পাদক সোহেল আহমদ চৌধুরী রিপন, আব্দুল মুকিত চৌধুরী, জিল্লুর রহমান শিপু, উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক গোলাম রসুল চৌধুরী রাহেল ও পাঞ্জারাই গ্রামের শফিক মিয়াকে নিয়ে একটি বোর্ড গঠন করা হয়। উক্ত বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুসারে বিষয়টি চূড়ান্তভাবে নিষ্পত্তির লক্ষ্যে নবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার সাথে পরামর্শক্রমে উভয়পক্ষ একজন সার্ভেয়ার নিযুক্ত করে এবং বোর্ডের পক্ষ হইতে সিভিল কোর্ড সার্ভেয়ার মোঃ শাহজাহানকে নিযুক্ত করিয়া সহকারী কমিশনার ভূমি নবীগঞ্জ অফিসের সার্ভেয়ারের উপস্থিতিতে সীমানা চূড়ান্তভাবে ঠিক করিয়া খুঁটি দেওয়া হয়। অধ্যাপক আব্দুর নুর বোর্ডের সিদ্ধান্ত মানিয়া তাহার স্বত্ত্ব দখলীয় ভূমিতে সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করিতে উদ্যোগ নিলে আবু বক্কর মিথ্যা বর্ণনা দিয়া ১৪৪ ধারায় একখানা মামলা দায়ের করেন। সরজমিনে আরও জানা যায় খনকারীপাড়া গ্রামে বিগত উরুস মোবারকে মোটর রেইস ও সার্কাস পার্টি সহ বিভিন্ন সরঞ্জাম ট্রাকে করিয়া গ্রামে আনিলে গ্রামবাসীর বাঁধার মুখে মালামালসহ ট্রাক ফেরত নিতে বাধ্য হয় ৩ হত্যা মামলার আসামী রায়েছ চৌধুরী ও তাহার ভাই সোহান চৌধুরী। এ নিয়ে গ্রামবাসীর সহিত রায়েছ চৌধুরী ও আবু বক্কর এর পরিবারের মনোমালিন্যর সৃষ্টি হয়। গত শনিবার পৈত্রিক জমিতে চাষাবাদের সময় মোঃ তোফায়েল আহমদ এর উপর অতর্কিত হামলা চালায় আবু বক্কর ও তার লোকজন। এসময় তোফায়েল আহমেদ এর শোর চিৎকারে তাহার ভাই ও আশ পাশের লোকজন এগিয়ে আসলে উভয়পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধে। এতে জুয়েল আহমেদ, জুবায়ের আহমেদ, তোফায়েল আহমেদ, সোহাগ মিয়া, শাজাহান মিয়াসহ ১০ জন মারাত্মক আহত হন। আহত অবস্থায় তাদেরকে নবীগঞ্জ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালে গোলাম রসুল চৌধুরী রাহেল, সোহেল আহমদ চৌধুরী রিপন, জিল্লুর রহমান শিপু সহ এলাকার অনেক মানুষ আহতদের দেখতে গেলে রায়েছ মিয়া ও তার ভাই সোহান মিয়া গোলাম রসুল চৌধুরী রাহেলকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও হুমকি প্রদান করে। ঐ দিনই রাহেল চৌধুরী, সোহেল আহমদ চৌধুরী রিপন ও রনি চৌধুরী মোটরসাইকেল যোগে আউশকান্দি যাওয়ার পথে নবীগঞ্জ পৌরবাস টার্মিনালের নিকট পৌছামাত্র রায়েছ মিয়া ও তার সঙ্গীয় লোকজন দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়া রাহেল এর উপর হামলা চালায়। এই খবর পেয়ে গ্রামবাসী ঘটনাস্থলে পৌছলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। এঘটনায় জুয়েল আহমেদ বাদী হইয়া আবু বক্কর ও রায়েছ চৌধুরী গংদের বিরুদ্ধে নবীগঞ্জ থানায় ১১/৬২ নং মামলা দায়ের করেন। মামলার প্রেক্ষিতে গত রবিবার রাতে নবীগঞ্জ থানা পুলিশ উক্ত মামলার ৪ নং আসামী সজ্জাদ মিয়াকে গ্রেফতার করে জেল হাজতে প্রেরণ করে। উল্লেখ্য যে, রায়েছ চৌধুরী নবীগঞ্জ বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আব্দুল গফুর চৌধুরী ও সোহেল আহমেদ চৌধুরী রিপনকে খুন করার হুমকি প্রদান করিলে আব্দুল গফুর চৌধুরী নবীগঞ্জ থানায় ১৩/০৩/২০১৬ইং তারিখে ৫০১ নং সাধারণ ডায়রী করেন। মামলার বিষয়ে জুয়েল আহমেদ জানান, আবু বক্কর বিভিন্ন মামলা দ্বারা জুয়েল আহমদের চরম সর্বনাশ ঘটাইবেন মর্মে হুমকি প্রদান করছেন।


     এই বিভাগের আরো খবর