,

পোনা মাছ নিধন বন্ধে নবীগঞ্জের বাউসা ইউপিতে বিশাল মানবন্ধন

সংবাদদাতা ॥ ‘পোনা মাছ ধরবো না, দেশের ক্ষতি করবো না’ এই স্লোগানকে সামনে রেখে গতকাল সোমবার নবীগঞ্জ উপজেলার বাউসা ইউনিয়নের দৌলতপুর গ্রামের দিনমজুর মছদ্দর আলীর উদ্যোগে চৌধুরী বাজার ও ভূমিহীন বাজারে স্বতস্ফুর্তভাবে বিশাল মানবন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে উপস্থিত ছিলেন বাউসা ইউপি আওয়ামীলীগের সাবেক সভাপতি ও ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি হাজী আব্দুল মুহিত দুলু, ইউপি সদস্য সাইফুর রহমান, আব্দুল মুকিত চৌধুরী, হাজী ছাবু মিয়া, মাস্টার হাম্মাদ চৌধুরী আব্দুল মোমিন, আব্দুল হক লিটন সাবেক মেম্বার আব্দুল আজিজ, শাহ্ সেলিম আহমেদ, ইছমত আহমেদ, মাহতাব উদ্দিন, ফরহাদ আহমেদ, আলেক মিয়া, মুক্তিযোদ্ধা সন্তান মুর্শেদ আলী সবুজ, নবীগঞ্জ বাজারস্থ তামিম হার্ডওয়্যারের স্বত্বাধিকারী শাহ্ লিমন আহমেদ, বাউসা ইউপি আয়ান ক্যাবেল টিভি নেটওয়ার্কের পরিচালক আলমগীর আহমেদ, ডাঃ সুবল ঘোষ, ডাঃ স্বজল ঘোষসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার কয়েক শতাধিক জনতা। উল্লেখ্য, মোঃ মছদ্দর আলী দীর্ঘদিন ইরানে প্রবাস জীবন কাটিয়ে বিগত ২০ বছর যাবৎ দেশে এসে স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন। তখন থেকেই তার পৈত্রিক সম্পত্তি বিক্রি করে সব ধরনের ডিমওয়ালা পোনা মাছ রক্ষায় আন্দোলনে নেমে পড়েন। তিনি নিজেই নবীগঞ্জ উপজেলার হাটবাজারে লোকজন জড়ো করে ডিমওয়ালা ও পোনা মাছ রক্ষায় সচেতনতামূলক বক্তব্য দিয়ে আসছেন। দেশ ও জাতির কল্যাণে নিজের টাকা খরচ করে দীর্ঘদিন যাবত ব্যানার, ফেস্টুন, লিফলেট মানববন্ধনসহ প্রচার প্রচারণা করে আসছেন। দিনমজুন মছদ্দর আলীর সাথে আলাপাকালে তিনি জানান, বাজারে মাছ খরিদ করার জন্য গেলে দেখা যায় বিত্তশালীরা বেশী টাকা দিয়ে মাছ খরিদ করে নিয়ে যাচ্ছে। আমাদের মত অসহায়রা শুধু চেয়ে চেয়ে থাকি। কারণ বাজারে মাছের আকাল। যদি বরাক নদী, মকার হাওর, মাকালকান্দির হাওর, গুঙ্গিজুরী হাওর, বাথাইরা নদী, আনোয়ারখালী নদী, বাল্লা বিল, জলাশয় খাল বিল নদ নদী গুলোর প্রবেশ পথে বেল জাল ও পাইয়্যা জাল পেতে না রাখত তাহলে বাজারে মাছের আকাল পড়তো না। বৈশাখ, জৈষ্ঠ ও আষাঢ় মাসে সব ধরণের ডিমওয়ালা মাছগুলোর ডিম পাড়ার সময়। এই তিন মাস মাছ না ধরলে ‘মাছে ভাতে বাঙ্গালীরা’ সব সময় মাছ-ভাত খেতে পারত। বিভিন্ন হাট বাজার ঘুরে দেখলাম কিছু অসাধু জেলেরা পুটি মাছের পোনা, কই মাছের পোনা সহ বিভিন্ন ধরণের পোনা মাছ ধরে ডেগ দিয়ে নিয়ে আসে বাজারে বিক্রি করার জন্য। প্রতি ডেগে প্রায় ২০/৩০লক্ষ পোনা মাছ রয়েছে। এসব ডিমওয়ালা মাছ ও পোনামাছ নিধন বন্ধের দাবিতে বিগত কয়েক বছর যাবত সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে আবেদন করেছি তাতে কোন ফল পাইনি। এ ব্যাপারে আমি নবীগঞ্জ-বাহুবল আসনের সংসদ সদস্য, উপজেলা চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, উপজেলা মৎস কর্মকর্তাকে লিখিতভাবে আবেদন জানিয়েছি। বৈশাখ, জৈষ্ঠ ও আষাঢ় এই তিন মাস ডিমওয়ালা ও পোনা মাছ রক্ষায় উপজেলার সবকটি নদ নদী হাওর জলাশয় খাল বিলের প্রবেশ পথে সবধরণের বেল জাল ও পাইয়্যা জাল পাতানো বন্ধে বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও বাংলাদেশ মৎস অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। তিনি আরোও বলেন, যতক্ষণ পর্যন্ত জাতীয় ভাবে আইন করে এই তিন মাস পোনামাছ নিধন বন্ধ করা না হচ্ছে ততক্ষণ পর্যন্ত আমার শেষ সহায় সম্বল বিক্রি করে হলেও দেশ ও জাতির কল্যাণে ডিমওয়ালা পোনা মাছ নিধন বন্ধে আমার আন্দোলন চালিয়ে যাব।


     এই বিভাগের আরো খবর