,

আউশকান্দিতে জায়গা সংক্রান্ত বিরোধ নিয়ে বাসাবাড়ীতে হামলা : মহিলাসহ আহত ১৫ ॥ ৩ দাঙ্গাবাজ আটক

স্টাফ রিপোর্টার ॥ নবীগঞ্জের আউশকান্দিতে জায়গা সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে প্রতিপক্ষের ভাড়াটিয়াদের বাসা বাড়ীতে হামলার ঘটনা ঘটেছে। এসময় তাদের হামলায় মহিলাসহ অন্তত ১০/১৫ জন আহত হয়। খবর পেয়ে বাসার মালিক নুরুল হোসেন, তার স্ত্রী, বোন, এগিয়ে আসলে তাদের উপরও হামলা চালানো হয়। আহত নুরুল হোসেন ও তার স্ত্রীকে উদ্ধার করতে তার বোন হাসপাতালে নিয়ে যেতে চাইলে আজমান ও তার দলবল তার বোনকে দা, রামদা খুপিয়ে ক্ষতবিক্ষত করে। এ ঘটনায় পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ৩ দাঙ্গাবাজকে আটক করেছে। এ নিয়ে আউশকান্দি এলাকায় টানটান উত্তেজনা বিরাজ করছে। জানা গেছে, কিশোরগঞ্জ জেলার মিঠামইন উপজেলার কুলাখানি গ্রামের আব্দুল মালেকের পুত্র আজমান মিয়া ৫/৬ বছর পুর্বে নবীগঞ্জ উপজেলার আউিশকান্দি ইউনিয়নের মিঠাপুর গ্রামের মৃত ফটিক মিয়ার পুত্র নুরুল হোসেনের নিকট থেকে ৩/৪ বছর পুর্বে বাসা বাড়ি করার জন্য ৩ শতাংশ ভুমি ক্রয় করে। ঐ ভূমিতে সে বাসা বাড়ি নির্মান করে বসবাস করে আসছে। ইদানিং আজমান নুরুল হোসেনের আরেকটি বাসা জোর পূর্বক দখল করবে নানা রকম হুমকি ধামকি দিয়ে আসছিলো। এনিয়ে এলাকার মুরব্বিয়ান কয়েক বার সালিস বৈঠক করেন। গত ১৬ই আগষ্ট মঙ্গলবার বিকেল ৬টায় আজমান তার দল বল নিয়ে অস্ত্র সস্ত্রে সজ্জিত হয়ে নুুরুল হোসেনের বাসা দখল করতে আসে। এসময় একটি বাসার দরজায় তালা ঝুলিয়ে দিতে চাইলে ভাড়াটিয়রা বাধা দেয়। এসময় আজমান ও তার লোকজন মধ্যযুগীয় কায়দায় তাদের উপর হামলা চালায়। তাদের শুর-চিৎকারে আশপাশের লোকজন ও আউশকান্দি হীরাগঞ্জ বাজার ব্যবসায়ীরা এগিয়ে আসলে তাদের উপরও আজমানের ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসীরা হামলা চালায়। এমনকি সন্ত্রাসীদের হাতে থাকা দেশীয় অস্ত্র দা, রামদা, পিকল দিয়ে নারী-পুরুষদের বেধরক পেটাতে থাকে। এক পর্যায়ে তাদের এহেন সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে স্থানীয় জনসাধারণ ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে ও হামলাকারীদের ঘেরাও করে উত্তম মধ্যম দিয়ে আটক করে রাখে। খবর পেয়ে আউশকান্দি ইউপির নব-নির্বাচিত চেয়ারম্যান হাজী মুহিবুর রহমান হারুন, ৮নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য খালেদ আহমদ জজ, ৭নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ফজলুল করিম মিছবাহ সহ বাজার এলাকার বিভিন্ন শ্রেনী পেশার কয়েক শতাধিক জনতার উপস্থিতিতে উত্তপ্ত পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হয়। এ সংঘর্ষের খবর নবীগঞ্জ থানার ওসি আব্দুল বাতেনকে মোবাইল ফোনে জানালে তিনি থানার সেকেন্ড অফিসার মোবারক হোসেনকে দিয়ে একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে পাঠালে সেখানে তারা উপস্থিত হয়ে দু’পক্ষের জবানবন্ধি ও স্থানীরদের সাথে আলাপ আলোচনা করে ঘটনাস্থল থেকে আজমান মিয়া (৩২), নুর মোহাম্মদ (২৮), আমির হোসেন (৩০)কে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। অপরদিকে হামলায় আহত নুরুল হোসেন ও তার স্ত্রী ফাতেহা বেগম, বোন সিতারুন বেগম, পুত্র মিজান মিয়া, সুহেল মিয়া, মুক্তার মিয়ার পুত্র রোমান মিয়া, আলম মিয়ার পুত্র আলী হোসেন, আব্দুল কাদির মিয়ার পুত্র ইমন মিয়া, মৃত তালেব মিয়ার পুত্র এলাইছ মিয়া সহ ১০/১৫ জনকে উদ্ধার করে নবীগঞ্জ উপজেলা হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক সিতারুন বেগমকে তার অবস্থার অবনতি দেখে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। অপর আহতদের নবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় ৭জনকে আসামী ও আরো ১০/১২ জনকে অজ্ঞাত করে জখমী নুরুল হোসেন বাদী হয়ে নবীগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেন। গতকাল বুধবার আটককৃত ৩ দাঙ্গাবাজকে হবিগঞ্জ জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।


     এই বিভাগের আরো খবর