,

‘ইনশাআল্লাহ’ বলায় বিমান থেকে নামতে হলো

সময় ডেস্ক ॥ মোবাইল ফোনে কথা বলার সময় ‘ইনশাআল্লাহ’ বলায় সাউথওয়েস্ট এয়ারলাইন্সের একটি ফাইটের এক তরুণ যাত্রীকে বিমান থেকে নেমে যেতে বাধ্য করা হয়। এ বছর এপ্রিলে লস অ্যাঞ্জেলেস আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ২৬ বছর বয়সী বার্কলে ইউনিভার্সিটির পলিটিক্যাল সায়েন্সে গ্র্যাজুয়েট খাইরুদ্দিন মাখজুমি এ ঘটনার শিকার হন। বিমানে আসন গ্রহণের পর তিনি বাগদাদে তার এক চাচাকে ফোন করেন। আগের দিন জাতিসঙ্ঘ মহাসচিব বান কি মুনের সঙ্গে সান্ধ্যভোজে অংশগ্রহণের সময় তিনি বান কি মুনকে কী প্রশ্ন করেছিলেন সে সম্পর্কে ফোনে চাচাকে বলছিলেন। কথা বলা শেষ করার আগে তিনি ‘ইনশাআল্লাহ’ উচ্চারণ করেন। কথা শেষ করার পর তিনি দেখেন অন্য আসনের এক নারী যাত্রী তার দিকে স্থির চোখে তাকিয়ে আছেন। খাইরুদ্দিন বলেন, ‘শুরুতে ভেবেছিলাম উচ্চস্বরে কথা বলার কারণে তিনি আমার ওপর বিরক্ত হয়েছেন। দুই মিনিটের মধ্যে এক ব্যক্তি দুইজন পুলিশকে নিয়ে আমার কাছে আসেন। এত দ্রুত তারা আমার কাছে এলেন যে, আমার বিশ্বাস হচ্ছিল না। তারা আমাকে বিমান থেকে নেমে যেতে বললেন। এরপর একজন আমাকে পাহারা দিয়ে বাইরে বের করে দেয় এবং আমাকে বলে ‘বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে’ কেন আমি আরবি শব্দ উচ্চারণ করেছি। আমাকে তারা ‘শহীদদের’ সম্পর্কে যা জানি সব খুলে বলতে বলে।’ খাইরুদ্দিন নিজের পে ব্যাখ্যা দেয়ার আগেই প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কুকুর দিয়ে তার মালপত্র তল্লাশি করা হয়। তিনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র স্বাধীন মানুষদের ভূমি। এখানে মানুষ আইনের শাসনকে সম্মান করে। এরপরও এ দেশে কিভাবে মানুষকে এভাবে হেনেস্তা হতে হয়? এটা সত্যিই খুব বড় ধাক্কা। আমি সাদ্দাম হোসেনের আমলে ইরাকে বসবাস করেছি। আমি জানি বৈষম্যের শিকার হলে কেমন লাগে।’ ২০১০ সালে বড় বোনের সঙ্গে বৈধ অভিবাসী হিসেবে ইরাক থেকে যুক্তরাষ্ট্রে যান খাইরুদ্দিন। এরপর সাউথওয়েস্ট এয়ারলাইন্স কর্তৃপ তাদের ফাইটে খাইরুদ্দিনকে আর উঠতে দেয়নি এবং টিকিটের পুরো অর্থ ফেরত দিয়ে দেয়। পরে তিনি ডেল্টা এয়ারলাইন্সের একটি বিমানে গন্তব্যে যান। খাইরুদ্দিন বলেন, তিনি মাস্টার্সের জন্য আবেদন করেছেন। তাকে ‘শিক্ষা গ্রহণের সেরা ব্যবস্থা করে দেয়া ও অন্যান্য অনেক সুবিধা দেয়ার জন্য তিনি যুক্তরাষ্ট্রের কাছে কৃতজ্ঞ। তিনি বলেন, ‘এখন এটাই আমাদের বাড়ি। আমাদের আর কোনো বাড়ি নেই। এপ্রিলের অভিজ্ঞতা একটি বেদনাদায়ক স্মৃতি ছাড়া আর কিছু নয়।’


     এই বিভাগের আরো খবর