,

বাহুবলে মানব পাচারকারীদের কবলে তরুনের রহস্যজনক মৃত্যু

সংবাদদাতা ॥ মানব পাচারকারীদের কবলে পড়ে বাহুবলের এক তরুনের দক্ষিণ আফ্রিকায় রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। তার সহযাত্রী অপর তরুন সংকটে রয়েছে। স্থানীয় এক দালালের মাধ্যমে সিলেটের তাজ ওভারসিজ নামক এক ট্রাভেল ওই দু’তরুন সহ ১২ জনের একটি দলকে গত ৫ অক্টোবর পাচার করেছিল। নিহত তরুনের নাম কাওসার এলাহী। সে উপজেলা সদরের হাসপাতাল এলাকার বাসিন্দা মরহুম মাওলানা আশিক এলাহীর পুত্র ও একই এলাকার ইউনিভার্সেল কেমিস্ট-এর মালিক হাবিবুর রহমান (মকছুদ) এবং বাহুবল বাজারের তামিম ট্রাভেলস এর মালিক আবুল কাশেম-এর ভাতিজা। গত ৯ অক্টোবর রাতে কাওসার এলাহীর মৃত্যুর খবর আসে। নিহত যুবক কাওসার এলাহীর পরিবারের সদস্যরা জানান, নিহত কাওসারের পিতা প্রায় ১৯ বছর আগে লন্ডনে মৃত্যুবরণ করেন। পিতার মৃত্যুর পর থেকে কাওসার তার মা ও চাচাদের তত্ত্বাবধানে বড় হয়। নিহত কাওসারের বড় বোন লন্ডনে বসবাস করেন। সম্প্রতি সে লন্ডন যাবার জন্য চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। এরপর সে মধ্যপ্রাচ্য সহ বিভিন্ন দেশে যাবার জন্য উদগ্রীব হয়ে উঠে। সম্প্রতি সে জালাল মিয়া নামে স্থানীয় এক দালালের মাধ্যমে দক্ষিণ আফ্রিকা যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। নিহত কাওসার ও উপজেলার ছোঁয়াপুর গ্রামের আব্দুর রউফ মেম্বারের পুত্র আশিকুর রহমান কাওসার সিলেটের তাজ ওভারসিজ নামক একটি ট্রাভেলস-এর মাধ্যমে জনপ্রতি ৬ লাখ টাকা কন্ট্রাকে দক্ষিণ আফ্রিকা যাওয়ার বন্দোবস্ত করে। গত ৫ অক্টোবর ঢাকা থেকে বিমানযোগে বোম্বে ও বোম্বে থেকে ইতোফিয়া এবং ইতোফিয়া থেকে মুজাব্বিকে যাত্রা করে তারা। পচার হওয়া দলটিতে বাহুবলের কাওসার এলাহী ও আশিকুর রহমান কাওসার সহ মোট ১২ জন ছিল। দালালরা ১২ সদস্যের দলটিকে মুজাব্বিক থেকে বাইরোডে পাচার পরে দক্ষিণ আফ্রিকায়। গত ৮ অক্টোবর তারা দক্ষিণ আফ্রিকায় পৌঁছে। ৯ অক্টোবর দালালদের মাধ্যমে খবর আসে কাওসার এলাহী অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে। ওইদিনই রাতের বেলা দালালরা স্বীকার করে কাওসার এলাহী দক্ষিণ আফ্রিকায় মারা গেছে। গতকাল সোমবার রাতে নিহত কাওসারের বাসায় গিয়ে দেখা গেছে শোকের মাতম চলছে। কাওসারের মা একমাত্র পুত্রকে হারিয়ে বাকরুদ্ধ হয়েগেছে। তিনি বলেন, ওরা মিথ্যা বলছে, আমার ছেলে বেঁচে আছে। নিহতের চাচা হাবিবুর রহমান (মকছুদ) জানান, দালাল মারফত আমরা তার (কাওসার এলাহী) মৃত্যুর খবর নিশ্চিত হয়েছি। দালালরা তার মৃত্যুর যে কারণ বলছে তা আমাদের বিশ্বাস হচ্ছে না। তিনি আরো বলেন, মৃত্যুর খবর জানানোর ২৪ ঘন্টা পরও দালালরা আমাদের হাসপাতালের (যে হাসপাতালে কাওসার মারা গেছে) ঠিকানা দিতে পারেনি। এতে তার মৃত্যুকে ঘিরে রহস্য দানা বাঁধছে। এক প্রশ্নের জবাবে হাবিবুর রহমান বলেন, দলালরা লাশ দেশে আনার ব্যবস্থা করছে বলে আমাদের জানিয়েছে। তিনি বলেন, সোমবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে আশিকুর রহমান কাওসার (নিহত কাওসারের সহযাত্রী) তার পিতার মোবাইলে কল দিয়ে ৩০ সেকেন্ড কথা বলেছে। এ সময় সে জানিয়েছে, কাওসার এলাহী মারা গেছে, আমিও বাঁচব না, আমার জন্য দোয়া করো। তিনি আরো জানান, বিষয়টি বাহুবল মডেল থানা পুলিশকে লিখিত ভাবে জানিয়েছেন নিহতের মা মাহমুদা আখঞ্জী।


     এই বিভাগের আরো খবর