,

নবীগঞ্জে চাঞ্চল্যকর কলেজ ছাত্র অনুজ হত্যাকান্ড : প্রধান আসামী সুজন দাশ ১ বছর পর নারায়নগঞ্জ থেকে গ্রেফতার

স্টাফ রিপোর্টার ॥ নবীগঞ্জ উপজেলার পশ্চিম বড় ভাকৈর ইউনিয়নের জগন্নাথপুর গ্রামের চাঞ্চল্যকর কলেজ ছাত্র অনুজ কান্তি রায় হত্যা মামলার প্রধান আসামী সুজন দাশ (৩০) কে দীর্ঘ প্রায় ১ বছর পর নারায়নগঞ্জ থেকে গ্রেফতার করেছে ডিবি পুলিশ। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ৬টায় ডিবির এসআই সুদ্বিপ রায়ের নেতৃত্বে একদল পুলিশ নারায়নগঞ্জ জেলার ফতুল্লা থানার হাজীপাড়া গ্রামে অভিযান চালায়। এ সময় ওই এলাকার একটি ভাড়া বাসা থেকে সুজনকে গ্রেফতার করে হবিগঞ্জে নিয়ে আসা হয়। আসামী সুজন দাশ নবীগঞ্জ পশ্চিম বড় ভাকৈর ইউনিয়নের জগন্নাথপুর গ্রামের সুখলাল দাশের পুত্র। পুলিশ জানায়, ২০১৫ সালের ১১ নভেম্বর বাড়ি থেকে সিলেট কলেজে যাবার পথে অনুজ কান্তি নিখোঁজ হয়। পরদিন দুপুরে একই গ্রামের সুদিন দাশের ধানের গোলায় তার লাশ পাওয়া যায়। হত্যাকান্ডের পরপরই আসামীরা আত্মগোপনে চলে যায়। এ ঘটনায় অকিল রায়ের স্ত্রী ও নিহত অনুজ কান্তির মা সবিতা রায় বাদি হয়ে নবীগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়েরের পর নবীগঞ্জ থানা পুলিশ সুজন দাশের মা নিয়তি রাণী দাশ, বোন শিল্পী রাণী দাশ ও ভাই সুমন দাশকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে কোর্টের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করে। তারা পুলিশের কাছে স্বীকার করে ঘটনার সাথে সুজন দাশ ও তার ছোট ভাই নিহত অনুজ কান্তি দাশের বন্ধু ইমন দাশ জড়িত রয়েছে। দীর্ঘদিন কারাগার ভোগ করে আটককৃতরা জামিন লাভ করে। এদিকে ঘটনার পর থেকে ইমন দাশ ও সুজন দাশ আত্মগোপন করে। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গত বুধবার রাত ১২টার দিকে হবিগঞ্জের ডিবি পুলিশের একটি দল নারায়নগঞ্জের ফতুল্লায় অভিযান চালায়। পুলিশ জানায়, সুজন সেখানে নাম বদল করে একটি গার্মেন্টেসে কাজ করে আসছিল। যেভাবে অনুজ কান্তি রায় খুন হল ঃ অনুজ কান্তি আর ইমন দাস দুইজন একে অপরের ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিল। একজন আরেকজনকে ছাড়া কোথাও চলাচল বা যাতায়াত করতো না। ঘটনার দিন অনুজ কান্তি মাস্টার্স ফাইনাল পরীক্ষার ফিস জমা দিতে তার বন্ধু ইমন দাসকে নিয়ে সিলেটের মদন মোহন কলেজের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়। ওই দিন রাত থেকে অনুজের মোবাইল ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। পরেরদিন বিভিন্নস্থানে খোঁজাখুজি করে একই গ্রামের সুদিন নামের এক ব্যক্তির বাড়ির ধানের গোলা থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। এরপর নবীগঞ্জ থানা পুলিশ কললিষ্টের সুত্রধরে তিনজনকে আটক করে। তাদের স্বীকারোক্তিতে বেরিয়ে আসে হত্যাকাণ্ডের মুল রহস্য। তবে নবীগঞ্জ থানা পুলিশ হত্যা মামলাটি সুরাহা করতে না পারায় আদালতের নির্দেশে মামলাটি জেলা গোয়েন্দা শাখায় হস্তান্তর করা হয়। এরপর থেকে তদন্তকারী কর্মকর্তা সুদ্বিপ রায় হত্যার রহস্য উদঘাটনে মাঠে নামেন এবং গতকাল সুজন দাশকে গ্রেফতার করেন। পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সুজন দাশ হত্যাকান্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। তবে হত্যাকাণ্ডের মূল রহস্য উদঘাটন করতে সুজন দাশকে রিমান্ডে এনে আরো ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ প্রয়োজন বলে মনে করছে পুলিশ। এছাড়াও এ মামলার প্রধান পলাতক আসামী ইমন দাশকে গ্রেফতার করতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। পুলিশ জানায় সে ধরা পড়লেই মামলাটির চার্জশীট আদালতে দাখিল করা হবে। আজ শুক্রবার সুজন দাশকে কোর্টে প্রেরণ করা হবে।


     এই বিভাগের আরো খবর