,

মাধবপুরে দুটি মন্দিরে হামলা-মুর্তি ভাংচুর

মাধবপুর প্রতিনিধি ॥ হবিগঞ্জ জেলার পার্শ্ববর্তী ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর উপজেলার হরিপুর গ্রামের রসরাজ দাস নামে এক যুবক ইসলাম ধর্মের অনুভুতিতে আঘাত করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছবি আপলোড করার প্রতিবাদে সমাবেশ করেছে আহলে সুন্নাতওয়াল জামাত। সমাবেশ চলাকালে মাধবপুর বাজারে অবস্থিত দুটি মন্দিরে হামলা ভাংচুর করেছে উশৃঙ্খল কিছু যুবক। এ সময় কয়েকটি বাসা বাড়িতেও হামলা করে আতংক ছড়ানো হয়। আতংকে দোকানপাট বন্ধ করে দেয় স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। গতকাল রোববার বিকেলে উপজেলা চত্বরে আহলে সুন্নাতওয়াল জামাতের উদ্যাগে আয়োজিত প্রতিবাদ সভার আয়োজন করা হয়। প্রতিবাদ সভায় মাধবপুর উপজেলার বিভিন্ন এলাকা সহ পার্শ্ববর্তা ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বিজয়নগর, নাসিরনগর উপজেলার লোকজন দল বেধে প্রতিবাদ সভায় অংশগ্রহণ করেন। খবর পেয়ে পুলিশ উপজেলা চত্বরে জড়ো হয়। এ সময় প্রতিবাদ সভায় থেকে একটি অংশ মিছিল নিয়ে বের হতে চাইলে পুলিশ বাধা দেয়। খবর পেয়ে সহকারী পুলিশ সুপার রাসেলুর রহমান সহ একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে আসেন। পুরো শহরে উত্তেজনা ছড়িয়ে পরলে ২ প্লাটুন বিজিবি (বডার গার্ড বাংলাদেশ), র‌্যাব ৯ শ্রীমঙ্গল ক্যাম্পের অধিনায়ক মাঈন উদ্দিন চৌধুরীর নেতৃত্বে একটি দল উপজেলা সদরে আসলে পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হয়। এ সময় বাজারের ব্যবসায়ীরা আতংকে দোকানপাট বন্ধ করে ফেলে। প্রতিবাদ সভা চলাকালীন সময়ে একদল যুবক মাধবপুরে বাজারে প্রবেশ করে ঝুলন মন্দিরের মূর্তি ভাংচুর ও কালি মন্দিরের গেইট ও আসবাবপত্র ভাংচুর করে। দ্রুত র‌্যাব ও বিজিবি ঘটনাস্থলে পৌছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। পরে স্থানীয় সংসদ সদস্য এডভোকেট মাহবুব আলী, পুলিশ সুপার জয়দেব কুমার ভদ্র, জেলা ডেপুটি ম্যাজিষ্ট্রেট (এডিএম) এমরান হোসেন, উপজেলা চেয়ারম্যান সৈয়দ ফজলে আকবর মোঃ শাহজাহান, উপজেলা নিবার্হী কমকর্তা মোকলেছুর রহমান, থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোকতাদির হোসেন, পরিদশক (তদন্ত) সাজেদুল ইসলাম পলাশ, ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল আজিজ, উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক তাজুল ইসলাম ঘটনাস্থল পরির্দশন করেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মন্দিরের সামনে পুলিশ মোতায়েন থাকার কথা। কিন্তু হামলার সময় পুলিশ সেখানে ছিল না। স্থানীয় কাউন্সিলর অজিত পাল জানান, ১৫/২০ জন যুবক মন্দিরে হামলা করেছে। এ সময় বাসা বাড়িতে হামলা করে কাচ ভাংচুর করা হয়েছে। উপজেলা পুজা উদযাপন কমিটির সভাপতি সুনীল দাস জানান, মন্দিরে হামলার ঘটনায় আমরা মর্মাহত। এ ব্যাপারে ৫৫ বিজিবির অধিনায়ক লে.কর্ণেল সাজ্জাদ হোসেন জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রন করার জন্য ২ প্লাটুন বিজিবি সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। র‌্যাব -৯ শ্রীমঙ্গল ক্যাম্পের অধিনায়ক মাঈন উদ্দিন জানান, র‌্যাব উপস্থিত হওয়ার আগেই মন্দিরে হামলা করা হয়েছে। তবে কারা মন্দিরে হামলা করেছে প্রমান পাওয়া গেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পুলিশ সপার জয়দেব কুমার ভদ্র বলেন, যারা মন্দিরে হামলা ভাংচুর করে আতংক সৃষ্টি করেছে তদন্ত করে ব্যবস্থা তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


     এই বিভাগের আরো খবর