বাহুবল প্রতিনিধি ॥ বাহুবল উপজেলার হাফিজুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পুকুরে বিদ্যুতস্পৃষ্ট হয়ে কিশোরের মৃত্যুর ঘটনায় মামলা দায়ের করেছে তার ভাই। অপমৃত্যুর ঘটনাকে পরিকল্পিত হত্যার ঘটনা সাজিয়ে একটি স্বার্থান্বেষী মহল ফায়দা হাসিলে তৎপর হয়ে উঠেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। নিহত ইমনের ভাই বানিয়াচং উপজেলার পৈলারকান্দি গ্রামের বাসিন্দা ছায়েদ মিয়া বাদি হয়ে ৭ নভেম্বর এ মামলা দায়ের করে। মামলার বিবরণে সে উল্লেখ করে তার ভাই ইমন হবিগঞ্জ শহরতলীর বহুলা গ্রামের এক আত্মীয়ের বাড়িতে গত ১ নভেম্বর বেড়াতে আসে। এ সময় টিউবওয়েল বসানোর সাব ঠিকাদার কাওছার প্রলোভন দিয়ে বাহুবলের হাফিজপুর বিদ্যালয়ে কাজে নিয়ে যায়। মামলায় উল্লেখ করা হয় ওই দিন হবিগঞ্জ শহরের সুলতান মাহমুদ এলাকার আকল মিয়ার পুত্র মাসুক মিয়া, সাব ঠিকাদার কাওছার, বহুলা গ্রামের জাকির হোসেন, বাহুবলের জয়ফুর গ্রামের ফেরদৌস চৌধুরী তুষার ও সাহবাজপুর গ্রামের কামাল মিয়া পরিকল্পিতভাবে পুকুরে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়। মাছ চুরির আশংকায় আগে থেকে ওই পুকুরের মালিক বিদ্যুত সংযোগ দিয়ে রাখায় ইমনের মৃত্যু হয়। এলাকাবাসি ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, হাফিজপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে চুক্তিপত্রের মাধ্যমে টিউবওয়েল বসানোর কাজ পান কাওছার আহমেদ নামের এক ব্যক্তি। অন্যান্য দিনের মতো ২ নভেম্বর টিউবওয়েল বসানোর জন্য শ্রমিকরা বিদ্যালয়ে কাজ শুরু করে। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে টিউবওয়েল বসানোর একটি পাইপ পুকুরে পড়ে গেলে পাইপটি তুলে আনতে যায় শ্রমিক ইমন। এ সময় পূর্ব থেকে বিদ্যুত সংযোগ দিয়ে রাখায় পানিতে নেমে পাইপটি তুলার সময় িিবদ্যুতস্পৃষ্ট হয় ইমন। তার চিৎকার শুনে তার সহকর্মী রিয়াদুল এগিয়ে যায়। এ সময় পানিতে পা দেয়ামাত্র সেও বিদ্যুতের ঝাকুনি অনুভব করে। এ সময় উপস্থিত থাকা ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষক বিদ্যুত সংযোগটি দ্রুত বন্ধ করে দেন। পরে আহত অবস্থায় ইমনকে উদ্ধার করে হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিয়ে এলে ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ওই দিন হাসপাতালে ইমনের লাশের সাথে থাকা তার সহকর্মীরা সাংবাদিকদের জানায়, ইমন বিদ্যুতস্পৃষ্ট হয়ে মারা গেছে। তাকে কেউ হত্যা করেনি। কিন্তু ঘটনার ৪ দিন পর তার মৃত্যুর ঘটনাকে হত্যা সাজিয়ে একটি মহল ওই কাজের ঠিকাদার, সাব ঠিকাদারদের বিরুদ্ধে মামলা করায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। উল্লেখ্য ওই পুকুরটি ফেরদৌস আহমেদ তুষা ও কামাল ইজারা দিয়ে ওই পুকুরে অবৈধভাবে বিদ্যুত সংযোগ দিয়ে মাছ চাষ করছে। এ ব্যাপারে ঠিকাদার মাসুক মিয়া জানান, কাওছারকে চুক্তি পত্রের মাধ্যমে কাজ দেয়া হয়। কাজ চলাকালীন কোন ঘটনা বা দুর্ঘটনা ঘটলে এর দায়ভার আমার নয়। একটি চক্র অবৈধ ফায়দা হাসিল করতে আমাকে এ মামলায় জড়িয়েছে।