,

বানিয়াচঙ্গের ৩নং ইউপির ভূমি তহশীলদার কুতুব উদ্দিন ও সাবেক চেয়ারম্যান নুরুল ইসলামের বিরুদ্ধে জাল-জালিয়াতি ও অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ

সংবাদদাতা ॥ বানিয়াচঙ্গের ৩নং ইউনিয়নের ভূমি অফিসের সহকারী কর্মকর্তা (তহশীলদার) মোঃ কুতুব উদ্দিন ও ৬নং কাগাপাশা ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান মোঃ নুরুল ইসলাম এর বিরুদ্ধে জাল-জালিয়াতি ও অনিয়ম দুর্নীতির নানা অভিযোগ পাওয়া গেছে। এব্যাপারে ১০/০৭/২০১৬ ইং তারিখে তাদের বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসক বরাবরে অভিযোগ দায়ের করেছেন কাগাপাশা ইউপির মকা গ্রামের মোঃ শামছুল হুদা চৌধুরী ওরফে ছয়ফুল আলম চৌধুরী। অভিযোগের বিবরনে জানা যায়, বানিয়াচঙ্গের ৩নং ইউনিয়ন ভূমি অফিসের সহকারী কর্মকর্তা (তহশীলদার) সু-চতুর মোঃ কুতুব উদ্দিন ৬নং কাগাপাশা ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান মোঃ নুরুল ইসলামের যোগসাজশে ভূয়া ওয়ারিশান সার্টিফিকেট দিয়ে জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে ভূয়া ব্যক্তির নামে নামজারি করে মোঃ শামছুল হুদা চৌধুরী ও তার পুত্রদের নামে ক্রয়কৃত ভূমি আত্মসাৎ করার পায়তারায় লিপ্ত রয়েছেন। অভিযোগে জানা যায়, বানিয়াচং থানার মকা মৌজার এস.এ খতিয়ান নং- ২৩৫ ও আর এস খতিয়ান নং- ৩৩০, দাগ নং এস এ ৬৫৩, দাগ নং- আর এস ৬৬৯, মোয়াজী ২.০৩ একর বোরো রকম ভূমি এর ষোলআনার মালিক ছিলেন মাকালকান্দি গ্রামের কামিনী চরণ দাসের স্ত্রী রঙ্গময়ী দাস। তাহার মৃত্যুর পর তাহার ত্যাজ্যবিত্তে ওয়ারিশ হিসেবে তার একমাত্র পুত্র সন্তান সুবল চন্দ্র দাস উক্ত ভূমির ষোলআনা মালিক প্রাপ্ত হয়। গত ৩০/০১/১১ ইং তারিখে সুবল চন্দ্র দাস উক্ত ভূমি মোঃ শামছুল হুদা চৌধুরীর পুত্র তামজিদ হুদা চৌধুরী ও তাম্ভীর হুদা চৌধুরীর নিকট বানিয়াচং এস.আর অফিসের রেজিঃ দলিল নং ৩৬১/১১ ইং সাফ্-কবালা দলিলের মাধ্যমে বিক্রি করেন এবং দখল সমজাইয়া দেন। কিন্তু খাজনাদি দিতে গিয়ে তারা জানতে পারে বানিয়াচঙ্গের ৩নং ইউনিয়ন ভূমি অফিসের সহকারী কর্মকর্তা (তহশীলদার) মোঃ কুতুব উদ্দিন ও ৬নং কাগাপাশা ইউপির তৎকালীন চেয়ারম্যান মোঃ নুরুল ইসলামের যোগসাজসে বিগত ১৪/০২/২০১২ ইং তারিখে রঙ্গময়ী দাসের ওয়ারিশ না হওয়া স্বত্ত্বেও দীনেশ দাসকে ছেলে বানাইয়া এবং তৎপর দীনেশ দাসের মৃত্যুর পর তার পুত্র হিসেবে দীপেশ দাস ও জুয়েল দাসকে ওয়ারিশ দেখাইয়া নামজারী মোকদ্দমা নং- ১৫৩৮/১২ইং মাধ্যমে বিগত ১৫/০২/২০১২ইং নিঃস্বত্ববান লোকদের নামে একটি ভূয়া নামজারী করেন এবং নামজারীর বলে বিগত ১৯/০২/১২ইং তারিখে জাল রেজিঃ দলিল নং ৪৫৭/১২ইং এর মাধ্যমে সোলেমানের নিকট উক্ত জমি দীপেশ দাস গং বিক্রি করেন। প্রকৃতপক্ষে দীপেশ দাস ও জুয়েল দাস রঙ্গময়ী দাসের কোন ধরণের ওয়ারিশ কিংবা কোন ধরনের আত্মীয়ও নয়। এব্যাপারে মোঃ শামছুল হুদা চৌধুরী তৎকালীন চেয়ারম্যান নুরুল ইসলামের কাছে রঙ্গময়ী দাসের ওয়ারিশ সনদ এবং যাহাদের নামে নামজারী হয়েছে তাদের দাদা ধরনী দাসের ওয়ারিশদের সনদ চাইলে তিনি বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে সময় কর্তন করতে থাকেন। এরপর শামছুল হুদা নিরুপায় হয়ে বানিয়াচং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বানিয়াচং বরাবরে অভিযোগ দায়ের করেন। এরপর চেয়ারম্যান নুুরুল ইসলাম রঙ্গময়ী দাসকে ধরনী দাসের বোন সাজাইয়া আরেকটি জাল ওয়ারিশান সনদ তৈরি করেন। এরপরও নামজারী মোকদ্দমা নং- ১৫৩৮/১৩ইং এর মধ্যে বিগত ০৪/১১/১৫ইংও আরো ১টি জাল সনদ দিয়া সুবাস দাসের নামেও উক্ত নামজারী খতিয়ানে অন্তর্ভূক্ত করেন। এ মোকদ্দমায় সুচতুর তহশীলদার মোঃ কুতুব উদ্দিন সরাসরি জাল জালিয়াতি জানিয়া ও তাদের কোন ধরনের দখল না থাকলেও অনিয়মের মাধ্যমে নামজারী করেন। অভিযুক্ত ব্যক্তিগন, মকা মৌজায় আরো সাবেক এস এ দাগ নং- ৮০, আর এস দাগ নং- ১৩১, মোয়াজী- ০.৯৫ শতক ভূমি এর মালিক ছিলেন অমরচন্দ দাস। তার মৃত্যুর পর ত্যাজ্যবিত্তে ওয়ারিশ হিসেবে ১। নিরেশ রঞ্জন দাস, ২। রাজশ্বরী দাস ৩। প্রমিলা রানী দাস ৪। বাসন্তী রানী দাস মালিকানা প্রাপ্ত হয়ে ভোগ-দখলে থেকে বিগত ২৮/১০/১৯৮৬ইং তারিখে বানিয়চং এস আর অফিসের রেজি দলিল নং নং ৩৭২২/৮৬ইং মাধ্যমে মকা গ্রামের দিগেন্দ্র দাশের স্ত্রী বাসন্তী রানী দাসের কাছে বিক্রি করেন। এরপর বাসন্তী রানী দাস ক্রয়সুত্রে ভোগ দখলে থাকিয়া বিগত মাঠ জরিপে তার নামে মাঠ পর্চা প্রস্তুত হয় এবং আর,এস ফাইনাল রেকর্ডও হয়। পরে বাসন্তী রানী দাশ বিগত ২৮/১১/০২ ইং তারিখে রেজিঃ দলিল নং- ৪৩৯৬/০২ ইং মাধ্যমে মোঃ শামছুল হুদা চৌধুরীর নিকট উক্ত ভূমি বিক্রি করেন। ইদানিং ভূমি নামজারী করাইতে মোঃ শামছুল হুদা চৌধুরী তহশীল অফিসে গেলে জানতে পারেন চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম ২৯/০৭/১২ ইং তারিখে অন্য গ্রামের ভূয়া বাসন্তী রানী সাজাইয়া ভূয়া ওয়ারিশান দিয়ে তহশীলদারের যোগসাজসে মিথ্যা জাল-জালিয়াতির আশ্রয় নিয়ে মোঃ শামছুল হুদা চৌধুরীর মালিকানাধীন জায়গা বিগত ০৮/০৭/১৩ইং তারিখে নামজারী মোকদ্দমা নং-৮৯৫/১৩ ইং মাধ্যমে জনৈক আঃ সালাম ও তার স্ত্রী ইয়াসমিন এর নামে ভূয়া নামজারী খতিয়ান সৃষ্টি করেন। উক্ত তহশীল অফিসে শামছুল হুদা চৌধুরী পিতার পরিবারের ৫টি স্টেইটম্যান্ট আছে। উক্ত স্টেইটমেন্টগুলোতে শামছুল হুদা চৌধুরীর পিতার যাবতীয় সম্পত্তির বিবরণী আছে। কিন্তু তার বৈমাত্রিক ভাই চেয়ারম্যান নুরুল আমিন চৌধুরীর কু-প্ররোচনায় তহশীলদার কুতুব উদ্দিন শামছুল হুদা চৌধুরীকে তথ্য না দিয়ে শুধু চ ঙ নাম্বার দিয়ে খাজনা আদায় করেন। সু-চতুর তহশীলদার কুতুব উদ্দিন অর্থ আত্মসাৎ, দুর্নীতি ও অর্থের বিনিময়ে জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে ভূয়া নামজারী চালিয়ে যাচ্ছেন নির্বিঘেœ। এব্যাপারে ভূক্তভোগী মোঃ শামছুল হুদা চৌধুরী বলেন, ৩/৪ বার বদলীর আদেশ হওয়ার পরেও সু-চতুর তহশীলদার কুতুব উদ্দিন বদলী বাতিল করে বহাল তবিয়তে থেকে দাপটের সহিত অনিয়ম দুর্নীতি চালিয়ে যাচ্ছেন। শামছুল হুদা চৌধুরী আরো বলেন ১০/০৭/২০১৬ ইং তারিখে অভিযোগ দায়ের উক্ত অভিযোগ জেলা প্রশাসক বানিয়াচঙ্গের এসিল্যান্ড বরাবরে তদন্ত করে প্রতিবেদন দেওয়ার আদেশ দেন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে এসিল্যান্ড ২৩/০৮/২০১৬ ইং তারিখে উভয়পক্ষকে হাজির হওয়ার জন্য নোটিশ দেন। অভিযোগকারী শামছুল হুদা চৌধুরী কাগজপত্র নিয়ে হাজির থাকলেও রহস্যজনক কারনে তহশীলদার কুতুব উদ্দিন ও চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম হাজির হন নাই। প্রতিবেদন দিতে বিলম্ভ হইলে আমি এসিল্যান্ডের কাছে বারবার গিয়েও তদন্তের কোন সুরাহা না হওয়ায় বিগত ২১/০৯/২০১৬ ও ০২/১১/২০১৬ ইং আমি জেলা প্রশাসকের কাছে গেলে তিনি এসিল্যান্ডের রিমান্ডার দেন। কিন্তু এরপরেও তহশীলদারে বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহন না করায় তহশীলদার কর্তৃক আরো ক্ষতির আশংকা করছেন মোঃ শামছুল হুদা চৌধুরী।


     এই বিভাগের আরো খবর