,

কেয়া চৌধুরী এমপি’র উদ্যোগে সবুজ পাহাড়ে ১৭ উপজাতি মুক্তিযোদ্ধা স্মরণে তীরন্দাজ মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতিস্থম্ভ

বাহুবল প্রতিনিধি ॥ বাহুবল উপজেলার মধুপুর চা-বাগান। পাশেই পুটিজুরী বনবিট। পাহাড়-টিলায় সবুজের ছায়াঘেঁরা। এমনি মন-মাতানো কালীগজিয়া ত্রিপুরা পল্লী। এ পল্লীতে শত শত বছর ধরে আদিবাসীরা বসবাস করছে। মুক্তিযুদ্ধের সময় বীরমুক্তিযোদ্ধা কমান্ডেন্ট মানিক চৌধুরীর নেতৃত্বে এখানে গড়ে উঠে মুক্তিবাহিনীর ক্যাম্প। যুদ্ধ চলাকালে প্রায়ই তিনি এখানে অবস্থান করে আদিবাসী মুক্তিযোদ্ধাদেরকে নানা পরামর্শ দিতেন। এ ক্যাম্পে মজুদ করা হতো অস্ত্র। এখান থেকে অস্ত্রগুলো বিভিন্নস্থানে সরবরাহ করা হতো। শুধু তাই নয়, আদিবাসীসহ স্থানীয়রা এ ক্যাম্প থেকে তীর ধনুক ও অস্ত্র নিয়ে কমানডেন্ট মানিক চৌধুরীর নেতৃত্বে পাকবাহিনীর উপর ঝাঁপিয়ে পড়তেন। কমান্ডেন্ট মানিক চৌধুরীর নেতৃত্বে আদিবাসী মুক্তিযোদ্ধারা পায়ে হেঁটে শেরপুর-সাদীপুরে তীর ধনুক নিয়ে পাকবাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন। আদিবাসীরা তীর-ধনু পরিচালনায় অত্যন্ত পারদর্শী ছিলেন। এজন্য তারা তীর-ধনুক দিয়েই পাক সেনাদের বিরুদ্ধে তুমুল লড়াই গড়ে তোলেন এবং সফল হন। এ ক্যাম্পটি মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে বিরাট ভূমিকা পালন করেছিল। শুধু তাই নয়, আদিবাসী নারীরা মুক্তিযোদ্ধাদের খাবার যোগান দিয়েও সহযোগিতা করেছেন। ২০১৩ সালের নির্বাচনে আওয়ামীলীগ পুনরায় ক্ষমতায় আসার পর কমান্ডেন্ট মানিক চৌধুরী তনয়া কেয়া চৌধুরী এমপি হন। তিনি ২০১৫ সালের ১১ ডিসেম্বর কালিগজিয়ার ত্রিপুরা পল্লীতে পরিদর্শনে যান। সে সময় স্থানীয় আদিবাসী মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে এমপি কেয়া চৌধুরী কথা বলে উপরোক্ত তথ্য জানতে পারেন। এ সময় তিনি এখানকার ১৭ মুক্তিযোদ্ধা স্মরণে স্মৃতিস্থম্ভ নির্মাণে বরাদ্দ দেয়ার প্রতিশ্র“তি দেন। পরে তার দেয়া বরাদ্দের ৬০ হাজার টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয় তীরন্দাজ মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতিস্থম্ভ। এর সাথে স্থানীয় মন্দিরের উন্নয়ন কাজের জন্যও এমপি কেয়া চৌধুরী বরাদ্দ দেন। তার বরাদ্দে পল্লীতে একটি ভ্যানগাড়ীও দেয়া হয়। বিজয়ের এ মাসে আনুষ্ঠানিকভাবে নবনির্মিত এ স্মৃতিস্থম্ভ উদ্বোধন করেন এমপি কেয়া চৌধুরী। অনুষ্ঠানেস্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা, আওয়ামী পরিবারের নেতৃবৃন্দ, আদিবাসী পরিবারের লোকজন উপস্থিত ছিলেন। এ সময় যুদ্ধে ব্যবহৃত তীর-ধনুক, রান্নার পাতিল, কাপড়সহ নানা প্রাচীন জিনিসপত্র আদিবাসী মুক্তিযোদ্ধারা এমপি কেয়া চৌধুরীর হাতে তুলে দেন। এগুলো হবিগঞ্জ শহরে নির্মিতব্য ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা কমানডেন্ট মানিক চৌধুরী জাদুঘরে’ সংরক্ষণ করা হবে। এমপি কেয়া চৌধুরী বলেন, জাতিরজনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধারা লড়াই করে এদেশ স্বাধীন করেছেন। শুধু তাই নয়, অসংখ্য মা-বোনের ইজ্জত হারাতে হয়েছে। তাদের ত্যাগের বিনিময়েই আমরা স্বাধীন দেশের বাসিন্দা। তাই তাদের স্মৃতি রক্ষার্থে কিছু করতে পারলে অন্তরে তৃপ্তি পাওয়া যায়।


     এই বিভাগের আরো খবর