,

চান্দপুর-দেউন্দি ও শানখলা সড়ক যোগাযোগ বন্ধবালি বোঝাই ট্রাক সহ দেউন্দি চা বাগানের বেইলী ব্রীঝটি ভেঙ্গেঁ গেছে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বৈদেশিক মুদ্র অর্জনকারী দেউন্দি চা বাগানের গেলানী ফাড়ি বাগানে বেইলী ব্রীজটি ভেঙ্গেঁ গেছে। ফলে চা বাগানের সাথে সংযুক্ত দেউন্দি-লস্করপুর চান্দঁপুর, বদরগাজী, শানখলা, শায়েস্থাগঞ্জ সড়কের যান ও পন্যবাহী গাড়ি চলাচল বন্ধ হয়ে পড়েছে। গতকাল শুক্রবার সকালে সিলিকা বালু বুঝাই ট্রাক (বগুড়া ট-১১-০৩১৭) গাদাছড়া বালি মহাল থেকে বুঝাই করে দেউন্দি চা বাগানের ভেতর দেউন্দি-চান্দপুর সড়ক দিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার উদ্যেশে রওয়া হয়। দেউন্দির ফাড়ি গেলানী চা বাগানের বেইলী ব্রীজে ট্রাকটি উঠামাত্র ব্রীজটি ধেবে ভেঙ্গেঁ চায়। মুহুর্তের মধ্যে বিকট আওয়াজ করে ট্রাকটি বেইলী ব্রীজ ভেঙ্গেঁ নিচে চলে যায়। দেউন্দি চা বাগান ব্যবস্থাপক মোঃ রিয়াজ উদ্দিন জানান, ১৯৮৪/৮৫ ইং-এর দিকে তৎকালীন সরকার এল জিইডি’র মাধ্যমে বেইলী ব্রীজটি নির্মাণ করেন। দীর্ঘ সময়ে ব্রীজটি মরিচা ধরে ভাঙ্গুর অবস্থা। ফলে চা বাগান কর্তৃপক্ষ বিপদজনক সেতু ও ভারী যানবাহন চলাচলে নিষেধাজ্ঞা সাইন বোর্ড টাঙ্গানো হয়। বেইলী ব্রীজটি যেকোন সময় ধ্বসে পড়তে পারে আশঙ্কা প্রকাশ করে দেউন্দি চা বাগান ব্যবস্থাপক ২০১৩ সালের ৩ সেপ্টেম্বর নির্বাহী প্রকৌশলী হবিগঞ্জকে সাবেক সমাজ কল্যাণ মন্ত্রী এনামুল হক মোস্তফা শহীদ এর সুপারিশ সহকারে প্রেরণ করেন। পরবর্তীতে অনুরূপভাবে গত ১ মে এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী হবিগঞ্জ বরাবর আরেকটি পত্র লেখেন। প্রতিদিন ব্রীজটি দিয়ে ১০/১২টি ভারী ট্রাক ওই ব্রীজ দিয়ে চলাচল করায় ব্রীজটির অবস্থা আরও নাজুক হয় এবং ভেঙ্গে পেড়ে। ব্রীজটি ভেঙ্গেঁ যাওয়ার ফলে দেউন্দি চা বাগানের উৎপাদিত চা যেমন আটকা পড়েছে তেমনি দেউন্দি চা বাগানের সহকারী ব্যবস্থাপক দেবাশীস দাস টিটো জানান, বাগানের গো-ডাউনে ৩ লাখ কেজি চা মজুদ রয়েছে। যাহার বাজার মূল্য পায় ৭ কোটি টাকা। ব্রীজটি ভেঙ্গে যাওয়ায় বাগানের চা চট্টগ্রাম প্রেরণ করা সম্ভব হবে না। পাশাপাশি বাগান থেকে উত্তোলনকৃত কাচা চা পাতা ফ্যাক্টরিতে প্রেরণ করা সম্ভব হবে না। তিনি আরও জানান, বাগান থেকে-শায়েস্থাগঞ্জ পর্যন্ত যে রাস্তাটি রয়েছে সেই রাস্তার বদরগাজী নামক স্থানে সুতাং নদীর উপর ব্রীজটি এক বছর পূর্বে ভেঙ্গে যায়। এখন দুই দিকেই ব্রীজ ভাঙ্গায় বাগানের সাথে কার্যত যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। পাশাপাশি চান্দপুর, লস্করপুর, দেউন্দি, শানখলা, গোরামী, মির্জাপুর, বদরগাজী এলাকার সকল প্রকার যান চলাচল বন্ধ হয়ে পড়েছে। গ্যালানিয়া ফাঁড়ি চা বাগানের সিনিয়র সহকারী ব্যবস্থাপক ফরহাদ হোসেন জানান, তার বাগানের উৎপাদিত কাঁচা পাতা দেউন্দি চা বাগানের ফ্যাক্টরিতে পরিবহন করতে হয়। ব্রীজটি ভেঙ্গে পড়ায় এখন পাতা উত্তোলন সম্ভব হবে না। ফলে চা উৎপাদনের পরিমাণ কমার পাশাপাশি চায়ের গুণগত মানও কমে যাবে। স্থানীয় চা শ্রমিক নেতা ও ইউপি মেম্বার কার্তিক বাকতি জানান, বাগানের ৩/৪ হাজার শ্রমিক চানপুর বাজারে গিয়ে বাজার করেন। ব্রীজটি ভাঙ্গায় এখন তারা বেকায়দায় পড়েছেন। দেউন্দি চা বাগানের গাড়ী চালক মোহন লাল জানান, বালু বোঝাই ভারী ট্রাক চলাচল করায় ব্রীজটি ভেঙ্গে পড়েঝে। অনতিবিলম্ভে ব্রীজটি সংস্কার না করলে বাগানটি জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে। পাইকপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সামছুজ্জামান শামীম জানান, ব্রীজটি শুধু বাগানেরই নয়, বরং তার ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকার হাজার হাজার জনগনের চলাচলের একমাত্র অবলম্ভন। তাই অনতিডিবলম্ভে ব্রীজটি সংস্কারের দাবী জানান তিনি।ি হবিগঞ্জ এলজিইিডির নির্বাহী প্রকৌশলী জাকির হোসেন মজুমদার জানান, তিনি ব্রীজ ভাঙ্গর খবর পেয়েছেন। আজ শনিবার তিনি ব্রীজটি পরিদর্শন করবেন। পরিদর্শনের পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে তিনি জানান।


     এই বিভাগের আরো খবর