,

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের নীতিমালার তোয়াক্কা নেইবাহুবলে নতুন মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয় নির্ধারণে অনিয়মের অভিযোগ

বাহুবল প্রতিনিধি ॥ বাহুবলে নতুন মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয় গড়ে তোলার জন্য বিদ্যালয় বাছাইয়ে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের নীতিমালার তোয়াক্কা করা হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে। উপজেলার মানসম্পন্ন বিদ্যালয়গুলোকে আমলে না নিয়ে রাজনৈতিক বিবেচনাকে প্রাধান্য দেয়া হয়েছে। বিষয়টিকে ঘিরে সংশ্লিষ্টদের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে উপজেলা শিক্ষা অফিসার জ্যোতিষ চন্দ্র চন্দ বলেন, একটি বিদ্যালয়ের পক্ষে দুই এমপি ও উপজেলা চেয়ারম্যানের সুপারিশ থাকায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার ওই বিদ্যালয়টিকেই নির্ধারণ করেছেন। গত মাসে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর প্রতিটি উপজেলা, জেলা ও মহানগরে একটি করে নতুন মডেল বিদ্যালয় গড়ে তোলার উদ্যোগ নেয়। একটি করে বিদ্যালয় নির্ধারণের জন্য জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অি ফসারদের ৬ নভেম্বর পত্র প্রেরণ করে। পত্রে জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সাথে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়ার কথা বলা হয়। যে সমস্ত বিদ্যালয়ে সুপরিসর প্রাঙ্গন (খেলার মাঠ, বাগানসহ), আকর্ষণীয় ভৌত সুবিধাদি, প্রয়োজনীয় সংখ্যক সজ্জিত শ্রেণিক (আসবাবপত্র সহ), প্রয়োজনীয় টয়লেট/ ওয়াশব্লক, কম্পিউটার ল্যাব, গ্রন্থাগার, দক্ষ ও অভিজ্ঞ প্রধান শিকসহ প্রয়োজনীয় শিক্ষকমন্ডলী (সহকারী শিক্ষক), ক্লাব শিক্ষক ও চলমান ক্লাবিং কার্যক্রম, নিয়মিত (প্রতিবছর) বৃত্তি প্রাপ্ত সহ সমাপনী পরীক্ষায় ভাল ফলাফল এবং বিদ্যালয়ের ক্যাচম্যান্ট এলাকায় জরীপকৃত শিশুদের ৯৫%-১০০% শিশুই ওই বিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছে- এরূপ বৈশিষ্ট সম্পন্ন বিদ্যালয় নির্ধারণের নির্দেশনা রয়েছে উল্লেখিত পত্রে। এদিকে, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার সংশ্লিষ্ট উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে বিদ্যালয় নির্ধারণের দায়িত্ব প্রদান করেন। এ প্রেক্ষিতে বাহুবল উপজেলা শিক্ষা অফিসার নির্ধারিত ছকে বিদ্যালয়ের তথ্য আহ্বান করেন। উপজেলার ভাদেশ্বর ইউনিয়নের পশ্চিম ভাদেশ্বর, লামাতাসী ইউনিয়নের হাজীপুর, সাতকাপন ইউনিয়নের খরিয়া, বিষ্ণুপুর ও হরাইটেকা এবং মিরপুর ইউনিয়নের কচুয়াদি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সহ ৭টি বিদ্যালয় নির্ধারিত ছকে তথ্য জমা দেয়। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নতুন মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয় নির্ধারণের লক্ষ্যে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের বেঁধে দেয়া ২৩টি বিধির মাঝে অধিকাংশ শর্তপূরণকারী বিদ্যালয়গুলো প্রাধান্য পায়নি। মানসম্পন্ন বিদ্যালয়গুলোকে বাদ দিয়ে সম্পূর্ণ রাজনৈতিক বিবেচনায় একটি বিদ্যালয়কে নির্ধারণ করা হয়েছে। এ ব্যাপারে ভাদেশ্বর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান বশির বলেন, আমার ইউনিয়নের পশ্চিম ভাদেশ্বর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি উপজেলার সেরা প্রাথমিক বিদ্যালয়। বিদ্যালয়টি মডেল বিদ্যালয় হিসেবে মনোনয়ন পাওয়ার অন্যতম দাবিদার। গত কয়েক বছরধরে পিএসসি পরীক্ষার ফলাফলে উপজেলার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর মধ্যে পশ্চিম ভাদেশ্বর শীর্ষস্থান দখল করে আছে। বিগত ৩ বছরে বিদ্যালয়টি ৬টি বৃত্তি লাভ করেছে। বিদ্যালয়ে একটি সুসজ্জিত ওয়াশব্লক, শহীদ মিনার, খেলারমাঠ, পর্যাপ্ত শিক্ষক, শ্রেণীক্ষক ও কম্পিউটারসহ মাল্টিমিডিয়া সুবিধা বিদ্যমান আছে। আমার ইউনিয়ন পরিষদসহ স্থানীয় জনগণের সহায়তায় বিদ্যালয়টিতে মিড-ডে মিল চালু আছে, যা ইতোমধ্যে জেলা প্রশাসক সাবিনা আলম পরিদর্শন করেছেন। এমন একটি মান সম্পন্ন বিদ্যালয়কে মডেল বিদ্যালয় হিসেবে মনোনিত না করার বিষয়টি মেনে নেয়া যায় না। এ ব্যাপারে উপজেলা শিক্ষা অফিসার জ্যোতিষ চন্দ্র চন্দ-এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, নতুন মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয় গড়ে তোলার জন্য বিদ্যালয় বাছাইয়ে ৭টি বিদ্যালয় আবেদন করে। এরমধ্যে হাজীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পক্ষে দুই এমপি ডিও লেটার প্রদান করেন। এছাড়া ওই বিদ্যালয়ের জন্য উপজেলা চেয়ারম্যান মোঃ আব্দুল হাই-এর সুপারিশ ছিল। এসব কারণে উপজেলা নির্বাহী অফিসার হাজীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টিকে নির্ধারণ করেন।


     এই বিভাগের আরো খবর