,

রাষ্ট্রপক্ষের আবেদন খারিজ করে হাইকোর্টের আদেশ বহাল জি কে গউছ এর মেয়রের দায়িত্ব নিতে আইনগত আর কোন বাধাঁ নেই

স্টাফ রিপোর্টার ॥ হবিগঞ্জ পৌরসভার মেয়র জি কে গউছের সাময়িক বরখাস্থের আদেশ স্থগিত করে হাইকোর্টের দেয়া রায় বহাল রেখেছেন আপিল বিভগের চেম্বার বিচারপতি। গতকাল সোমবার চেম্বার বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন রাষ্ট্রপক্ষের আবেদন খারিজ করে হাইকোর্টের আদেশ বহাল রেখেছেন। এই আদেশের ফলে মেয়র জি কে গউছকে হবিগঞ্জ পৌরসভার মেয়রের দায়িত্ব নিতে আইনগত আর কোন বাধাঁ রইল না। এরপূর্বে ২০১৬ সালের ২০ মার্চ স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগ এক আদেশে মেয়র জি কে গউছকে সাময়িক বরখাস্থ করে। এই আদেশের বিরুদ্ধে সদ্য কারামুক্ত মেয়র জি কে গউছ গত ২২ জানুয়ারী হাইকোর্টে একটি রিট পিটিশন দায়ের করেন। গত ২৩ জানুয়ারী মেয়র জি কে গউছকে সাময়িক বরখাস্থ করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের দেওয়া আদেশ স্থগিত করেন হাইকোর্ট। বিচারপতি নাইমা হায়দার ও খান মোঃ সাইফুর রহমানের বেঞ্চ এই স্থগিতের আদেশ দেন। এই আদেশের বিরুদ্ধে গতকাল সোমবার রাষ্টপক্ষ হাইকোর্ট বিভাগের চেম্বার আদালতে আপিল করেন। আদালত শোনানী শেষে হাইকোর্টের দেয়া আদেশ বহাল রাখেন। শোনানীতে মেয়র জি কে গউছের পক্ষে অংশ নেন সুপ্রিম কোর্ট বার কাউন্সিলের সভাপতি ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন ও সিনিয়র আইনজীবি শ ম রেজাউল করিম। রাষ্টপক্ষে ছিলেন অতিরিক্ত এ্যাটর্নী জেনারেল মুখলেছুর রহমান। উল্লেখ্য, ২০০৫ সালের ২৭ জানুয়ারী হবিগঞ্জের বৈদ্যের বাজারে স্থানীয় আওয়ামীলীগ আয়োজিত জনসভায় দুর্বৃত্তদের গ্রেনেড হামলায় নিহত হন সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়া। এই হত্যাকান্ডের প্রায় ১০ বছর পর ৩য় সম্পূরক চার্জশীটে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সমবায় বিষয়ক সম্পাদক ও হবিগঞ্জ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মেয়র জি কে গউছকে আসামী করা হয়। ২০১৪ সালের ২১ ডিসেম্বর কিবরিয়া হত্যা মামলার চার্জশীট আদালতে গৃহীত হলে ২৮ ডিসেম্বর স্বেচ্ছায় আদালতে আত্মসমর্পন করেন তিনি। আদালত মেয়র জি কে গউছের জামিন না মঞ্জুর করে কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেন। কারাগারে থাকা অবস্থায় ২০০৪ সালের ২১ জুন সুনামগঞ্জে সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের জনসভায় বোমা হামলার ঘটনায় দীর্ঘ প্রায় ১২ বছর পর মেয়র জি কে গউছকে শ্যোন এরেস্ট দেখানো হয়। ২০১৫ সালের ৩০ ডিসেম্বর কারাগার থেকেই হবিগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন মেয়র জি কে গউছ। এই নির্বাচনে অনেকটা অভিভাবকহীন অবস্থায় প্রতিদ্বন্ধিতা করেছেন তিনি। কিন্তু জনগনের ভালবাসার কাছে সকল রক্তচক্ষু ধুলিস্যাৎ হয়ে যায়। টানা ৩য় বারের মত মেয়র নির্বাচিত হন জি কে গউছ। এই বিজয়ের উল্লাসে গর্জে উঠেছিল হবিগঞ্জ পৌরবাসী। পৌরবাসী মনে করেছিল, তাদের রায়ের সম্মান পাবে, কারামুক্ত হয়ে ফিরে আসবে তাদের নির্বাচিত অভিভাবক। আবারও প্রাণ চাঞ্চল্য ফিরে আসবে পৌর শহরে। কিন্তু মামলার জটে কারাগার থেকে বেড়িয়ে আসতে পারেননি জনতার রায়ে নির্বাচিত মেয়র জি কে গউছ। উপরন্ত ২০১৬ সালের ২০ মার্চ মেয়র জি কে গউছকে দায়িত্ব বুঝিয়ে না দিয়েই সাময়িক বরখাস্থ করে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়। এরপূর্বে ২৭ জানুয়ারী প্যারোলে মুক্তি দিয়ে মেয়র জি কে গউছকে শপথ নেয়ার সুযোগ করে দেয়া হয়েছিল। ২০১৭ সালের ৪ জানুয়ারী ৭শ ৩৯ দিন কারাভোগের পর সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে জামিনে মুক্তি পান মেয়র জি কে গউছ। আর এই মুক্তির মধ্য দিয়ে আবারো পৌরবাসীর সেবা করার পথ সুগম হয় মেয়র জি কে গউছের।


     এই বিভাগের আরো খবর