,

মুক্তিযুদ্ধে গুলিবিদ্ধ অভিনাশের আক্ষেপ বেঁেচ থাকার অধিকার বাস্তবায়ন না হলে সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব নয়

আনোয়ার হোসেন মিঠু \ বেঁেচ থাকার অধিকার বাস্তবায়ন না হলে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব নয়। দেশে বর্তমানে সৎ, নিষ্টাবান ও আর্দশিক রাজনৈতিক নেতার খুবই অভাব। শুধু শেখ হাসিনার একার পক্ষে সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব নয়। যারা সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠা করতে মূখ্য ভূমিকা পালন করবে তাদের সেদিকে কোন লক্ষ্য নেই। সকলেই তাদের নিজেদের আখের গোছাতে ব্যস্ত। দেশের গরীব মানুষরা দিন দিন শুধু গরীব হচ্ছে আর ধনীরা হচ্ছে সম্পদশালী। এভাবে চলতে থাকলে দেশের অবস্থা দিন দিন খুবই খারাপ হবে। এভাবেই ক্ষোভে ফেঁেট পড়ে নিজের আক্ষেপ প্রকাশ করেন মুক্তিযোদ্ধে গুলিবিদ্ধ অর্ধেন্দু রায় অভিনাশ। গতকাল শুক্রবার রাতে তিনি একান্ত স্বাক্ষাতকারে উপরোক্ত কথাগুলো বলেন। নবীগঞ্জ উপজেলার পূর্ব বড় ভাকৈর ইউপির হরিনগর গ্রামের স্বর্গীয় অধীর চন্দ্র রায় পটলের পুত্র অভিনাশ জীবিকার তাগিদে বর্তমানে হোটেল শ্রমিকের কাজ করেন। মুক্তিযোদ্ধের প্রায় ১০/১৫ বছর পূর্বে তার পিতা অধীর রায় পৈত্রিক বাড়ী হরিনগর ছেড়ে নবীগঞ্জ সদর ইউনিয়নের পশ্চিম তিমিরপুর গ্রামে চলে আসেন। ৪ পুত্র ও ৩ কন্যা সন্তান নিয়ে অধীর রায় পশ্চিম তিমিরপুর গ্রামেই স্থায়ীভাবে বসবাস করতে থাকেন। ১৯৭১ইং সালে অভিনাশের বয়স যখন মাত্র ৭ বছর তখন মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়। শ্রাবন মাসের ৩০ তারিখ রাত। প্রচন্ড বর্ষন হচ্ছিল। হঠাৎ শুরু হয় প্রচন্ড গুলাগুলি। নবীগঞ্জ থানায় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর উপর আক্রমন চালায় মুক্তিসেনারা। উভয় পক্ষের প্রচন্ড গুলাগুলি শুরু হলে আশপাশের গ্রামগুলোর মানুষজন নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যেতে শুরু করেন। এ সময় একটি গুলি অধীর রায়ের বাড়িতে গিয়ে পড়ে। গুলিবিদ্ধ হন শিশু অভিনাশ। চিকিৎসার জন্য তাকে ডাক্তারের কাছে আনার সাহস ছিলো না কারো। কাপড় দিয়ে তার মাথা বেঁেধ দ্রুত নৌকাযোগে অধীর রায় তার পরিবারের সদস্যদের নিয়ে পার্শ্ববর্তী বানিয়াচং থানার বেতকান্দি গ্রামে চলে যান। সেখানে তার পরিচিত এক মুসলিম বাড়িতে ১০/১২ দিন থাকার পর একই থানার ঝেড়ানগর গ্রামে তাদের এক আত্মীয় রবীন্দ্র রায়ের বাড়িতে ২/৩ মাস অবস্থান করেন। ১৫ ডিসেম্বর স্বাধীনতা ঘোষণার আগের রাত রবীন্দ্র রায়ের বাড়িতে রাজাকাররা চালায় লুটপাট। স^র্বস্ব হারিয়ে পরদিন স্বাধীনতা ঘোষণার খবর পেয়ে অধীর রায় পুনরায় চলে আসেন নবীগঞ্জে। অভিনাশ রায় আক্ষেপ করে আরো বলেন, বর্তমানে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা বৃদ্ধি করার কারণে ভূয়া মুক্তিযোদ্ধাদের অবাধ ছড়াছড়ি। তিনি বলেন, আমি যুদ্ধের সময় গুলি খেয়েছি এতে আমার কোন দুঃখ নেই তবে মুক্তিযোদ্ধাদের অসম্মানিত হতে দেখলে মনে খুব কষ্ট লাগে। আজ যখন দেখি বানিয়াচঙ্গে ৭৪ জন আবেদনকারীর মধ্যে ৭২ জনই ভূয়া তখন কি আর বলব। বলার কি কিছু আছে!


     এই বিভাগের আরো খবর