,

হবিগঞ্জে ৪র্থ শ্রেণীর ছাত্রীকে মারধোর করে অপহরণের চেষ্টা

হবিগঞ্জ প্রতিনিধি ॥ হবিগঞ্জ সদর উপজেলার বেকিটেকা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে স্কুল চলাকালীন সময়ে ৪র্থ শ্রেণীর ছাত্রী শাপলা আক্তারকে মারধোর করে অপহরণের চেষ্টা করে একদল যুবক। পরে অন্যান্য শিক্ষার্থীদের বাধার কারনে অহরণকারীরা পালিয়ে যায়। আহত শাপলাকে হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। গতকাল রবিবার দুপুরে এই ঘটনা ঘটে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রবিবার সকালে অন্যান্য সহপাঠীদের সাথে স্কুলে যায় আকদপুর গ্রামের মিয়া হোসেন এর কণ্যা শাপলা আক্তার। বিরতির সময় শাপলা আক্তারকে স্কুলের প্রাঙ্গণে আব্দুল আজিজের পুত্র সুমায়ূন এর নেতৃত্বে একদল যুবক আক্রমণ করে মারধোর করে। এক পর্যায়ে শাপলাকে টেনে হিছড়ে নিয়ে যেতে চাইলে শাপলা চিৎকার শুরু করে। পরে তার সহপাঠীরা গিয়ে শাপলাকে উদ্ধার করে। খবর পেয়ে শাপলার পিতা মিয়া হোসেন স্কুলে গিয়ে মেয়েকে উদ্ধার করে হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে নিয়ে আসেন। একটি সূত্র জানায়, শাপলার পিতা মিয়া হোসেন এর পরিবারের সাথে একই গ্রামের জাহির মিয়া, ওয়াহিদ মিয়া ,আ. জলিলসহ তাদের লোকজনের মাঝে দীর্ঘদিন যাবৎ বিরোধ চলে আসছে। ২০০৪ সালের ৩০ জুলাই মিয়া হোসেন এর মেয়ে রুজিনাকে জাহির মিয়ার পক্ষের লোকজন অপহরণ করে নিয়ে যায়। পরে ২০০৫ সালের ১ জানুয়ারী তারা রুজিনাকে হত্যা করে। এ ব্যাপারে মিয়া হোসেন মামলা দায়ের করলে তাদের মাঝে বিরোধ চরম আকার ধারন করে। মামলা প্র্যাহারের জন্য হুমকি দিয়েও কোন কাজ না হলে ওই পক্ষ ২০০৫ সালের ৮ ফেব্র“য়ারী তারিখে মিয়া হোসেন এর ভাই আদর হোসেনকে হত্যা করে। এ ব্যাপারে মামলা দায়ের করা হলে জাহির মিয়ার যাবৎজীবন কারাদন্ড দেয় আদালত। পাশাপাশি তার পক্ষের লোকজনকেও বিভিন্ন মেয়াদে শাস্তি প্রদান করা হয়। এ ব্যাপারে আপীল দায়ের করে আসামীরা জামিনে এসে মিয়া হোসেন এর পরিবারের উপর হত্যাচার বাড়িয়ে দিলে তিনি পরিবার নিয়ে পার্শ্ববর্তী ডোংরা গ্রামে আশ্রয় নেন। তিনি জমি-জমাও আবাদ করতে পারেন না। জমিতে আবাদ করতে গেলে দিন দুপুরে আসামীরা তার ট্রাক্টর ও দুটি গরু চিনিয়ে নেয়। সূত্র আরও জানায়, আসামীরা শুধু মিয়া হোসেন এর দুটি হত্যা মামলার আসামীই নয়। তারা একই এলাকার লাল মিয়া হত্যারও আসামী। এছাড়াও মিয়া হোসেন এর বিভিন্ন মামলায় তাদের বিরুদ্ধে পরোয়ানা থাকলেও তারা এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে। এই ঘটনার ধারাবাহিকতায় রবিবারের ঘটনা ঘটেছে বলে দাবী করেন শাপলা আক্তারের পিতা মিয়া হোসেন। এ ব্যাপারে তিনি প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করেন। তিনি এই ঘটনায় মামলা দায়ের করবেন বলেও জানিয়েছেন। বেকিটেকা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ডালিয়া আক্তার জানান, ছাত্রীদের কাছ থেকে ঘটনা জেনে ছেলেদেরকে ঘটনার কথা জিজ্ঞেস করতে চাইলে তারা স্কুল থেকে চলে যায়। তিনি আরও জানান, পারিবারিক বিরোধ থেকে এই ঘটনা ঘটেছে। এ ব্যাপারে কমিটি ও প্রশাসনকে অবহিত করা হয়েছে। স্কুলের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি সাদেক মিয়া জানান, যারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে তারা খুবই প্রভাবশালী। এলাকার লোকজন তাদেরকে ভয় পায়। তারা তিনটি হত্যা মামলার আসামী। হবিগঞ্জ সদর থানার ওসি ইয়াছিনুল হক জানান, এ ব্যাপারে কোন অভিযোগ পাওয়া যায়নি। তবে দুটি পক্ষের মাঝে দীর্ঘদিন যাবৎ বিরোধ চলে আসছে। এ ব্যাপারে উভয় পক্ষের মাঝে অনেকগুলো মামলা আছে। অভিযোগ পেলে তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।


     এই বিভাগের আরো খবর