,

অমর একুশে আজ

রিপন দেব ॥ ‘আমি বাংলায় কথা কই, আমি বাংলায় ভাসি, বাংলায় হাসি, বাংলায় জেগে রই…। রক্তস্নাত ভাষা আন্দোলনের পথ ধরে পাওয়া রাষ্ট্রভাষাপ্রাপ্তির দিন আজ। আজ একুশে ফেব্র“য়ারি মহান শহীদ দিবস। একইসঙ্গে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। ১৯৫২ সালের এই দিনে মাতৃভাষা বাংলার মর্যাদা রাখতে গিয়ে বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিয়েছিলেন রফিক, সালাম, বরকত, সফিউর জব্বারসহ অনেকে। তাদের রক্তে শৃঙ্খলমুক্ত হয়েছিল মায়ের ভাষা, বাঙালি জেনেছিল তাদের বর্ণমালা এখন কেবলই তাদের একান্ত, যা কেড়ে নিতে পারবে না শাসকেরা। কানে যে গানই বাজুক, সবার মনেস আজ বাজছে একুশের অমরসংগীত ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্র“য়ারি/ আমি কি ভুলিতে পারি…।’ এ দেশের মানুষ প্রথম ঐক্যবদ্ধ হয়েছিল ১৯৫২ সালে। এ ঐক্যের ভিত্তিমূল ছিল মাতৃভাষার অধিকার রক্ষা। বাঙালির বুকের রক্ত সৃষ্টি করেছে অমর একুশে। ’৫২-এর একুশে ফেব্র“য়ারি তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে বাংলা ভাষাকে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতির দাবিতে আত্মোৎসর্গের নজির সৃষ্টি করে বাংলাদেশের মানুষ। ‘অপমানে তুমি জ্বলে উঠেছিলে সেদিন বর্ণমালা/সেই থেকে শুরু/সেই থেকে শুরু দিনবদলের পালা। এ অমর বীরগাথা আজ কেবল এ ভূখণ্ডের সীমানায় আবদ্ধ নেই, বাঙালির আত্মত্যাগ স্মরণে একুশে ফেব্র“য়ারি এখন আন্তর্জাতিক মাতৃভাষার মর্যাদায় অভিষিক্ত। এ গৌরব বাঙালির, বাংলাদেশের। একুশে ফেব্র“য়ারি আমাদের অহংকার। বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সংগ্রামের বীজ বপন হয়েছিল ভাষা আন্দোলনে। একুশের আত্মত্যাগের মাধ্যমে উন্মেষ ঘটে বাঙালি জাতীয়তাবাদের। সেই জাতীয়তাবাদী চেতনার পথ ধরে ১৯৭১-এর গৌরবময় মুক্তিযুদ্ধ। স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়। এখনো জাতির প্রতিটি সংকট মুহুর্তের অনুপ্রেরণা একুশের চেতনা। আজও অমর একুশে অন্যায়-অসত্যের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে, ন্যায় ও সত্যের পক্ষে মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর অন্তর্নিহিত শক্তি আর অদম্য সাহস হয়ে আছে। একুশ মানে মাথা নত না করা। আজ সরকারি ছুটির দিন। অর্ধনমিত রাখা হবে জাতীয় পতাকা। প্রভাতফেরি করে শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ ছাড়াও সব সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হবে। একই সঙ্গে সর্বত্র ওড়ানো হবে শোকের কালো পতাকা। দিবসটি উপলক্ষে বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের পক্ষ থেকে গ্রহণ করা হয়েছে বিভিন্ন কর্মসূচি।


     এই বিভাগের আরো খবর