,

লাখাইয়ে স্বামীর বাড়িতে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতনের শিকার গৃহবধূ : হাত-মুখ বাধা অবস্থায় খালের পাড় থেকে উদ্ধার

লাখাই প্রতিনিধি ॥ লাখাই উপজেলার করাব গ্রামে স্বামী, শ্বশুর, শ্বাশুড়ি ও ভাসুরের হাতে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতনের শিকার হয়ে মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এসেছে এক গৃহবধূ। তাকে শারিরীক নির্যাতন করে হাত-মুখ বেধে রাতের আধারে একটি খালের পাড়ে ফেলে রাখা হয়। ভাগ্যগুনে এক নারী তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে। নির্যাতনের ক্ষতচিহ্ন নিয়ে ওই গৃহবধূ হবিগঞ্জ হাসপাতালের কাতরাচ্ছে। নির্যাতিত ওই গৃহবধূ হচ্ছেন লাখাই উপজেলার করাব গ্রামের নুরুল মিয়ার স্ত্রী এবং সদর উপজেলার হুরগাঁও গ্রামের দারোগা আলী মিয়ার মেয়ে নাছিমা আক্তার (২২)। গতকাল বুধবার সকালে হবিগঞ্জ সদর উপজেলার কাটাখালি গ্রাম সংলগ্ন তেলিখালের পাড় থেকে তাকে হাত ও মুখ বাধা অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। নাছিমা আক্তারের চাচা জালাল মিয়া জানান, গত সোমবার হুরগাও পিতার বাড়ি থেকে তাকে (নাছিমাকে) তার স্বামী নুরুল মিয়া নিজ বাড়িতে নিয়ে যান। পরদিন মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে নাছিমার স্বামী জালাল মিয়াকে ফোনে জানান যে, তাকে (নাছিমাকে) পাওয়া যাচ্ছেনা। এ খবর পেয়ে জালাল মিয়ার ভাই কাজল মিয়া করাব গ্রামে যান। তিনিও খোঁজাখুঁজি করে নাছিমাকে না পেয়ে স্থানীয় মুরব্বিদের বিষয়টি অবগত করে চলে আসেন। এরই মধ্যে গতকাল বুধবার সকালের দিকে প্রাণ কোম্পানীর জনৈক নারী শ্রমিক বাড়ি ফেরার সময় তেলিখালের কাছে পৌছার পর নাছিমাকে হাত ও মুখ বাধা অবস্থায় দেখতে পান। এ সময় মুখের বাধ খোলার পর সে তার ঠিকানা জানায়। পরে তাকে ওই শ্রমিক একটি গাড়িতে তুলে দেয় হবিগঞ্জ শহরে পৌছে দেয়ার জন্য। গাড়ি থেকে তাকে হবিগঞ্জ সদর মডেল থানার সামনে নামিয়ে দেয়া হয়। এ সময় অপর এক মহিলার মোবাইলে নাছিমা তার পিত্রালয়ে ফোন করে তার অবস্থান জানায়। পরে বাড়ি থেকে লোকজন এতে আহত অবস্থায় নাছিমাকে হবিগঞ্জ হাসপাতালে ভর্তি করেন। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন নাছিমা আক্তার জানান, সোমবার বিকেলে তার স্বামী তাকে পিতার বাড়ি থেকে নিজের বাড়িতে নিয়ে যান। ওই দিন রাতে নাছিমার স্বর্ণালংকার বিক্রি করা নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এসময় নাছিমার শ্বশুর, শ্বাশুড়ি ও ভাসুর উপস্থিত হয়। এক পর্যায়ে সবাই মিলে নাছিমাকে শারিরীকভাবে নির্যাতন শুরু করে। নির্যাতনের পর নাছিমার হাত ও মুখ বেধে একটি ঘরে আটকে রাখে। মঙ্গলবার সারাদিন ওই ঘরে আটকে রাখার পর রাতে তাকে তেলিখালের পাড়ে ফেলে রাখা হয়। গতকাল বুধবার সকালে এক নারী শ্রমিক তাকে উদ্ধার করেন।


     এই বিভাগের আরো খবর