,

শূণ্য পদ প্রধান শিক্ষক ৪৩, সহকারী শিক্ষক ৭৩ : নবীগঞ্জে ১১৬টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক সংকট

স্টাফ রিপোর্টার ॥ শিক্ষক সংকটের কারণে নবীগঞ্জ উপজেলার ১১৬টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরে ৪৩টি বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক বিহীন অবস্থায় রয়েছে। এছাড়াও সহকারী শিক্ষকের পদ খালি আছে ৭৩টি। সব মিলিয়ে উপজেলার ১৮২টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ১১৬টি বিদ্যালয়ে শিক্ষক সংকট রয়েছে। এছাড়াও উপজেলার ১৪টি গ্রামে প্রাথমিক বিদ্যালয় না থাকায় ওই এলাকার কোমলমতি শিশু-কিশোররা শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত রয়েছে। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সুত্রে জানা যায়, নবীগঞ্জ উপজেলায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা ১৮২টি। মোট ভর্তিকৃত শিক্ষার্থীর সংখ্যা হলো ৪৩ হাজার ৩ শত ৭১ জন। এরমধ্যে ছাত্র ২১ হাজার ৩৬ জন, ছাত্রীর সংখ্যা ২২ হাজার ৩ শত ৩৫ জন। এছাড়াও বেসরকারী সুত্রে জানাগেছে, ভর্তির উপযোগী বিরাট একটি অংশ ভর্তির সুযোগ-সুবিধা থেকে রয়েছে বঞ্চিত। এরমধ্যে কেউ কেউ বিভিন্ন প্রাইভেট বা বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হলেও অনেকেই ঝড়ে পরে আছেন। উপজেলার ১৮২টি বিদ্যালয়ের মধ্যে ৪৩টি বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক পদ শূন্য রয়েছে। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক দিয়ে চলছে এসব প্রতিষ্ঠান। এ ছাড়া উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নে ৭৩টি বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষকের পদ এখনও খালি আছে। প্রধান শিক্ষকের শূন্যতা ও শিক্ষক সংকটের কারণে এসব প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হওয়ার পাশাপাশি প্রশাসনিক শৃংখলাও ভেঙে পড়েছে। বিভিন্ন বিদ্যালেয়ের শিক্ষকদের সাথে আলাপ করে জানা গেছে, সারা দেশে সকালের শিফটে প্রাক-প্রাথমিক থেকে দ্বিতীয় শ্রেণি এবং দিনের শিফটে তৃতীয় শ্রেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণির পাঠদান দেওয়া হয়। কিন্তু কোনো কোনো বিদ্যালয়ে একজন বা দুজন শিক্ষক থাকায় তাদের পক্ষে এক সঙ্গে তিনটি ক্লাস নেওয়া সম্ভব হয় না। ক্লাস ছাড়াও শিশু জরিপ, উপবৃত্তি তথ্য সংগ্রহসহ সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের নানা তথ্য সংগ্রহের কাজে ব্যস্ত থাকতে হয় শিকদের। শুধু তাই নয় দতা অর্জনের জন্য বিভিন্ন ধরনের প্রশিক্ষণে অংশ নিতে গেলে পাঠদান মারাত্মকভাবে বিঘিœত হয়। পাঠদান ঠিকমতো না হওয়ায় অনেক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা আসা বন্ধ করে দিচ্ছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষকরা। একদিকে শিক্ষক সংকট, অন্যদিকে যারা আছেন তাঁরাও নিয়মিত পাঠদান না করায় শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। এরমধ্যে অনেক নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষকদের বাড়ি অন্য উপজেলায় হওয়ায় নির্ধারিত সময়ে স্কুলে পৌছা সম্ভব হয় না। এদিকে সম্প্রতি বদলীর জটিলতা খোলার পর শিক্ষকরা তাদের সুবিধাজনক স্কুলে যাওয়ার জন্য উপজেলা সদরে শিক্ষা অফিসে ধর্ণা দিতে গিয়ে ঘন্টার পর ঘন্টা সময় কাটাচ্ছেন। ফলে পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে। এ বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকদের সাথে আলাপ করে জানা যায়, প্রধান শিক্ষকের পদ শূণ্য থাকায় প্রায়ই দাপ্তরিক কাজে উপজেলায় যেতে হয়। এতে শিক্ষক এর ঘাটতি পূষিয়ে নিতে কষ্ট সাধ্য হয়ে দাড়ায়। এ ব্যাপারে নবীগঞ্জ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাক জানান, উপজেলা ৪৩টি বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের পদ শূণ্য রয়েছে। তাদের তালিকা সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কতৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে এবং অনেকটা পদোন্নতির পক্রিয়াধীন আছে। প্রাথমিক বিদ্যালয়বিহীন ১৪টি গ্রামের বিষয়ে শিক্ষা কর্মকর্তা জানান, বিদ্যালয়বিহীন গ্রামের বিষয় নিয়ে আমরা একাধিক সভায় আলোচনা করে ১৪টি গ্রামের নাম দিয়ে তালিকা পাঠানো হয়েছে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে।


     এই বিভাগের আরো খবর