,

নবীগঞ্জে কেমিষ্ট্র এন্ড ড্রাগিস্ট সমিতির মধ্যে দ্বন্দের সৃষ্টি

সংবাদদাতা ॥ আন্ডার রেইটে ঔষধ বিক্রিকে কেন্দ্র করে নবীগঞ্জ কেমিষ্ট্র এন্ড ড্রাগিস্ট সমিতির মধ্যে দ্বন্দের সৃষ্টি হয়েছে। গত ফেব্র“য়ারি মাস থেকে এ বিরোধ চলে আসছে। কেমিষ্ট্র এন্ড ড্রাগিস্ট সমিতির অভিযোগ, নবীগঞ্জ শহরের অজিত ড্রাগ হাউজ, আশালতা মেডিকেল হল, পুষ্প মেডিকেল হল-১ ও পুষ্প মেডিকেল হল-২ গ্রাহকদের কাছে এমআরপি মূল্যের চেয়ে কম দাম ঔষধ বিক্রি করছে। এর প্রেক্ষিতে কেমিষ্ট্র এন্ড ড্রাগিস্ট সমিতির নেতৃবৃন্দ নবীগঞ্জ ফারিয়াকে ওই ৪ ফার্মেসিতে ঔষধ না দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেয়। ফারিয়া এসোসিয়েশন এর কারন জানতে চাইলে কেমিষ্ট্র এন্ড ড্রাগিস্ট সমিতির সভাপতি রঞ্জু রায়, সাধারণ সম্পাদক এড. জালাল আহমদ, সহ-সভাপতি এড. অলক কুমার রায় ও বিধান ধর কারন না বলে তাদের নির্দেশ পালন করার কথা বলেন। কোন কারন ছাড়া ফারিয়া এসোসিয়েশন ও নবীগঞ্জ ম্যানেজার এসোসিয়েশন তাদের এ দাবী মানতে অপারগতা প্রকাশ করলে কেমিষ্ট্র এন্ড ড্রাগিস্ট সমিতি জানায় উল্লেখিত ৪টি ফার্মেসি এমআরপি মূল্যের চেয়ে কম দামে ঔষধ বিক্রি করছে, তাই তাদেরকে ঔষধ না দেওয়ার জন্য নিষেধাজ্ঞা দেন। তখন ফারিয়া এসোসিয়েশন কেমিষ্ট্র এন্ড ড্রাগিস্ট সমিতির নেতৃবৃন্দকে পরামর্শ দেন, কেমিষ্ট্র এন্ড ড্রাগিস্ট সমিতি থেকে ওই ৪টি ফার্মেসিকে বহিস্কার করে ফারিয়া এসোসিয়েশন বরাবরে একটি লিখিত অভিযোগ দেয়ার জন্য। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে কেমিষ্ট্র এন্ড ড্রাগিস্ট সমিতির নেতৃবৃন্দ ফারিয়া এসোসিয়েশনের সদস্যদের নবীগঞ্জের কোথাও কোন ফার্মেসিতে ঔষধ বিক্রি করতে দেবেনা মর্মে হুমকি প্রদান করেন এবং ফারিয়া এসোসিয়েশন কাছ থেকে ঔষধ না কেনার জন্য নবীগঞ্জের বিভিন্ন স্থানীয় বাজারে কমিটি গঠন করেন। কেমিষ্ট্র এন্ড ড্রাগিস্ট সমিতির নির্দেশে উল্লেখিত ৪টি ফার্মেসিতে ঔষধ না দেয়ার খবর ছড়িয়ে পড়লে নবীগঞ্জের আরো স্বনামধন্য ১৮টি ফার্মেসি তাদের অনৈতিক দাবীর বিপক্ষে অবস্থান নেয় এবং একটি আহবায়ক কমিটি গঠন করে। তারা ফারিয়াকে জানায় ওই ৪টি ফার্মেসিতে ঔষধ না দিলে তারাও ফারিয়ার কাছ থেকে ঔষধ ক্রয় করবেনা। যদি ঔষধ দেয়া হয় তাহলে নবীগঞ্জের সব ফার্মেসিতে ঔষধ দিতে হবে। কেমিষ্ট্র এন্ড ড্রাগিস্ট সমিতির এ দ্বন্দের কারনে ফারিয়া এসোসিয়েশন নবীগঞ্জের সব ফার্মেসি থেকে ঔষধের অর্ডার আনার জন্য সিন্ধান্ত নেয়। এ সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে ক্ষিপ্ত হয়ে কেমিষ্ট্র এন্ড ড্রাগিস্ট সমিতির সভাপতি রঞ্জু রায়, সাধারণ সম্পাদক এড. জালাল আহমদ, সহ-সভাপতি এড. অলক কুমার রায় ও কোষাধ্যক্ষ বিধান ধর এর নেতৃত্বে ফারিয়া এসোসিয়েশন বকেয়া পাওনা না দেওয়ার জন্য ও কোন ফার্মেসিতে ফারিয়ার কোন সদস্যদের ঢুকতে ও ডাক্তার ভিজিট না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। এরই প্রেক্ষিতে নীলিমা ড্রাগ হাউজ, নয়ন ফার্মেসি ফারিয়ার কোন সদস্যদের ডাক্তার ভিজিট করতে দেয়নি এবং মুক্তলতা, ওহি ফার্মেসি, স্বস্তিকা মেডিকেল হল, দি সেন্ট্রাল ফার্মেসি, মেডিসিন কর্নার, কলি, সাম্মী, শান্তি ফার্মেসির মালিকগণ বিভিন্ন ঔষধ কোম্পানীর বকেয়া টাকা দেয়নি। তারা বলেন আমাদের কেমিষ্ট্র এন্ড ড্রাগিস্ট সমিতির দ্বন্ধ শেষ না হলে আমরা কোন কোম্পানী বকেয়া টাকা দিবনা। কিন্তু বাকী ফার্মেসিগুলো কেমিষ্ট্র এন্ড ড্রাগিষ্ট সমিতির সিদ্ধান্ত মানেনি। এ বিষয়ে নবীগঞ্জ ম্যানেজার এসোসিয়েশ-নবীগঞ্জ ফারিয়ার পক্ষ থেকে কেমিষ্ট্র এন্ড ড্রাগিস্ট সমিতির কাছে জানতে চাইলে ওই সমিতি বকেয়া টাকা দেওয়ার জন্য কয়েকবার সময় নেয়। সর্বশেষ তারা জানায় মার্চ মাসের ১ থেকে ২ তারিখের মধ্যে তাদের বিরোধ নিষ্পতি হয়ে হয়ে গেলে তারা বিভিন্ন কোম্পানীর বকেয়া পাওনা দিয়ে দিবে। কিন্তু আজ অবধি তারা বিভিন্ন টাল বাহানায় সময় ক্ষেপন করতেছে। পুষ্প মেডিকেল হলের স্বত্বাধিকারী রিন্টু কুমার দাশ জানান, কেমিষ্ট্র এন্ড ড্রাগিস্ট সমিতির সদস্য হতে গেলে ড্রাগ লাইসেন্স লাগে। কিন্তু কেমিষ্ট্র এন্ড ড্রাগিস্ট সমিতির সহ-সভাপতি এড. অলক কুমার রায় ও সাধারণ সম্পাদক এড. জালাল আহমেদর কোন ফার্মেসিও নেই ড্রাগ লাইসেন্সও নেই। কিন্তু তারপরেও তারা কিভাবে কেমিষ্ট্র এন্ড ড্রাগিস্ট সমিতির দায়িত্বে আছেন বিষয়টি আমার বোধগম্য নয়। অপরদিকে গত রবিবার নবীগঞ্জ ফারিয়ার সভাপতি মোঃ গোলাম রহমান লিমন ড্রাগ সুপার মোঃ শফিকুল ইসলাম এর সাথে সরাসরি স্বাক্ষাত করে আন্ডার রেইটের বিষয়ে জানাতে চাইলে ড্রাগ সুপার বলেন আন্ডার রেইট বলতে কোন বিষয় নেই। তবে কোন ফার্মেসি যদি এম.আরফি মুল্যের চেয়ে বেশি মূল্যে ঔষধ বিক্রি করে যাকে বলে অবাই রেইট এ ধরনের কোন অভিযোগ থাকলে আমরা তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব। কিন্তু কেউ যদি এম.আরফি মুল্যের চেয়ে কম মূল্যে ঔষধ বিক্রি করে এটি তাদের একান্ত ব্যক্তিগত বিষয়। এব্যাপারে আমার কোন মন্তব্য নেই। আর কেমিষ্ট্র এন্ড ড্রাগিস্ট সমিতির দ্বন্দের সাথে ঔষধ কোম্পানীর বকেয়া টাকা আটকানোর কোন যুক্তি নেই। তাই যত দ্রুত সম্ভব কোম্পানীর বকেয়া টাকা পরিশোধের পরামর্শ দেন তিনি। ড্রাগ সুপার মোঃ শফিকুল ইসলাম আরো বলেন, ড্রাগ লাইসেন্স নিশ্চিতকরণ করেই একজন ফার্মেসি হোল্ডার বৈধভাবে ঔষধ কোম্পানীর কাছ থেকে ঔষধ ক্রয় করবেন এই নির্দেশিকা রয়েছে এবং যাদের ড্রাগ লাইসেন্স নেই তাদের একটি তালিকা তৈরী করে উনার বরাবরে পাঠানের জন্য বলেন।


     এই বিভাগের আরো খবর