,

নবীগঞ্জের ১৩ ইউপি চেয়ারম্যান ও অন্যান্য সদস্যদের বয়কট : আইন শৃংখলা কমিটির সভায় প্রেসক্লাব সভাপতির আমন্ত্রন নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া

স্টাফ রিপোর্টার ॥ নবীগঞ্জে উপজেলা আইন শৃংখলা কমিটির সভায় নবীগঞ্জ প্রেস ক্লাবের বিদ্যমান তিনটি গ্র“পের একটিকে অনৈতিক ভাবে আমন্ত্রণের ঘটনায় তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। গতকাল সোমবার উপজেলা পরিষদের সভা কক্ষে আয়োজিত সভায় প্রেস ক্লাবের এক গ্র“পের সভাপতি পৌর যুবলীগ থেকে বহিস্কৃত (সাবেক) আহমদ আজাদকে আমন্ত্রন জানানোর খবর পেয়ে অপর দুই গ্র“পের নেতা নবীগঞ্জ প্রেস ক্লাবের একাংশের সভাপতি মুরাদ আহমদ এবং অপর অংশের সাধারন সম্পাদক মোঃ আলমগীর মিয়া সভাস্থলে উপস্থিত হন। ঐক্য প্রক্রিয়ায় নির্বাচন ছাড়া কাউকে আমন্ত্রন না জানানোর সিদ্ধান্ত রহিত করার কারণ জানতে চান দুই সাংবাদিক নেতা। এছাড়াও ১৮ মার্চ শহরের জেকে উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে আয়োজিত সালিশ বৈঠকের সিদ্ধান্ত মোতাবেক প্রেসক্লাবের ৫ সদস্য বিশিষ্ঠ নির্বাচন কমিশন গঠন ও প্রকৃত সাংবাদিক বাচাই করে ভোটার তালিকা প্রণয়নের বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে অবহিত করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সংসদ সদস্য এম এ মুনিম চৌধুরী বাবু, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এডভোকেট আলমগীর চৌধুরী। সাংবাদিক নেতাদের প্রশ্নের জবাবে উপজেলা নির্বাহী অফিসার তাজিনা সারোয়ার বলেন, সংসদ সদস্য ও উপজেলা চেয়ারম্যান কাউন্সিলের পূর্বে একটি গ্র“পের সভাপতি হিসেবে আহমদ আজাদকে দুই মাসের জন্য সুযোগ দেয়ার অনুরোধ করেন। এরই প্রেক্ষিতে উপজেলা প্রশাসন চিঠি ইস্যু করেছে। এখবর ছড়িয়ে পড়লে পৌরসভার মেয়রসহ ১৩ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান, আইন শৃংখলা কমিটির সদস্য আওয়ামীলীগ সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাক আহমদ মিলু, শ্রমিক ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দসহ কেউই গতকালের বৈঠকে উপস্থিত হননি। এসময় উপস্থিত সংসদ সদস্য মুনিম চৌধুরী বাবু, উপজেলা চেয়ারম্যান আলমগীর চৌধুরী, সহকারী কমিশনার (ভূমি) জীতেন্দ্র কুমার নাথ, উপজেলা আওয়ামীলীগ সম্পাদক সাইফুল জাহান চৌধুরী, সাংবাদিক আহমদ আজাদসহ কয়েকজন সভা শুরুর জন্য অপেক্ষা করেন। এরপর কোরাম সংকট নিয়েই সভা শুরু হয়। পরে তাদের বক্তব্য শুনে এনিয়ে ১৮ মাচের্র আয়োজিত সালিশ বৈঠকে উপস্থিত বিভিন্ন শ্রেণী পেশার লোকজন ও সাংবাদিক মহলে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। এবিষয়ে হবিগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাধারন সম্পাদক চ্যানেল আই ও বাংলাদেশ প্রতিদিনের হবিগঞ্জ প্রতিনিধি চৌধুরী মোহাম্মদ ফরিয়াদ বলেন, নবীগঞ্জে তিন ভাগে বিভক্ত প্রেস ক্লাবের কমিটি নিয়ে বিরোধের জের হিসেবে ১৮মার্চ আয়োজিত সালিশ বৈঠকে আগামী জুলাই মাসে প্রেস ক্লাবের কাউন্সিলের নিমিত্তে ৫ সদস্য বিশিষ্ট নির্বাচন কমিশন গঠিত হয়েছে। এতে কমিশনার মনোনীত হয়েছেন, হবিগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মোস্তফা রফিক, সদস্যরা হলেন, সংসদ সদস্য এম এ মুনিম চৌধুরী বাবু, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এড. আলমগীর চৌধুরী, উপজেলা নির্বাহী অফিসার তাজিনা সারোয়ার এবং হবিগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাধারন সম্পাদক চৌধুরী মোহাম্মদ ফরিয়াদ। আয়োজিত সালিশে সভাপতিত্ব করেন কেন্দ্রীয় জাপার সাংগঠনিক সম্পাদক এম এ মুনিম চৌধুরী বাবু এমপি। এ ব্যাপারে সিনিয়র সাংবাদিক ও ২০১২ সালের ঐক্যবদ্ধ প্রেসক্লােেবর সভাপতি আনোয়ার হোসেন মিঠু বলেন, ৩ মাস যাবত গ্র“পিং লবিং এর কারণে কাউকে আইনশৃংলা কমিটিতে নেয়া হয়নি এ জন্য উপজেলা প্রশাসনকে ধন্যবাদ। কিন্তু নির্বাচন কমিশন গঠন করার পর কাউকে তুষ্ট করার জন্য অনৈতিক পন্থা গ্রহণ করা খুবই দুঃখজনক! তিনি উপজেলার অভিভাবক হিসেবে সংসদ সদস্য এবং উপজেলা চেয়ারম্যানকে নিরপেক্ষ ভূমিকা রাখার আহবান জানান। এদিকে ১৩ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের আইন শৃংখলা কমিঠির সভায় উপস্থিত করতে উপজেলা পরিষদ হল রুমে নবীগঞ্জ-বাহুবল নির্বাচনী এলাকার সংসদ সদস্য মুনিম চৌধুরী বাবু, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এড. আলমগীর চৌধুরী, উপজেলা নির্বাহী অফিসার তাজিনা সারোয়ার ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) জীতেন্দ্র কুমার নাথ বৈঠকে বসেন এবং তাদেরকে সভায় আনতে চেষ্টা চালান। তখন তাদের প্রস্তাবে চেয়ারম্যানগণ জানান যে, আমরা যাব কিনা পরে জানাব। এর কিছুন পরে নব-গঠিত উপজেলা চেয়ারম্যান সমিতির সভাপতি মোঃ ইজাজুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক মোঃ ইমদাদুর রহমান মুকুল উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এর কক্ষে যান এবং বিস্তারিত আলোচনা করেন। আলোচনায় তারা বলেন যেহেতু আইন শৃংখলা কমিটির সভাটি আমাদের ছাড়াই শেষ করা হয়েছে সেহেতু উন্নয়ন সভাটিও আমাদের ছাড়াই শেষ করেন। তখন এর জবাবে এমপি ও উপজেলা চেয়ারম্যান বলেন প্রয়োজনে ওই মিটিং বাতিল করা হবে অথবা স্থগিত রাখা হবে। সর্বশেষ খবরে জানাগেছে চেয়ারম্যানদের সাথে সৃষ্ট বিরোধের মীমাংসার জন্য আগামী শুক্রবার উপজেলা পরিষদে বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।


     এই বিভাগের আরো খবর