,

নবীগঞ্জে মহিলা মেম্বারের শ্লীলতাহানী : করগাঁও ইউনিয়নের প্রভাবশালী আলতাব আলীসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা

নবীগঞ্জ প্রতিনিধি ॥ নবীগঞ্জে মহিলা মেম্বারের শ্লীলতাহানীর অভিযোগে উপজেলার করগাঁও ইউনিয়নের শেরপুর গ্রামের প্রভাবশালী আলতাব আলীসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে হবিগঞ্জের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতে মামলা হয়েছে। মামলাটি দায়ের করেছেন শেরপুর গ্রামের বাসিন্দা ও করগাঁও ইউনিয়নের ৭,৮ ও ৯নং ওয়ার্ডের মহিলা মেম্বার মোছাঃ ওয়ারিছা বেগম। মামলাটি তদন্ত করে প্রতিবেদন দেয়ার জন্য আদালত নবীগঞ্জ থানার ওসিকে নির্দেশ প্রদান করেছেন। মামলার এজাহারে ওয়ারিছা বেগম উল্লেখ করেন, আসামী শেরপুর গ্রামের মৃত হাজী আঞ্জব আলীর পুত্র মোঃ আলতাব আলী, মৃত আবু মিয়ার পুত্র সিরাজুল ইসলাম, মৃত আব্দুল কাদিরের পুত্র মোঃ রেজাউল মিয়া ও মোঃ ময়না মিয়া, মৃত রঞ্জু মিয়ার পুত্র লায়েক মিয়া বাদীনির পাশাপাশি বাড়ীর বাসিন্দা হিসেবে দীর্ঘদিন যাবৎ বসবাস করে আসছেন। বিগত নির্বাচনে তিনি মহিলা মেম্বার পদে প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলে আসামীগণ তার প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থীর পক্ষে ছিলেন। কিন্তু তিনি বিপুল ভোটে নির্বাচিত হওয়ায় এবং আসামীদের সমর্থিত প্রার্থী পরাজিত হওয়ায় তারা বাদীনির ক্ষতি সাধনের চেষ্টায় লিপ্ত থাকে। তিনি বাড়ী থেকে ইউনিয়ন অফিসে আসা যাওয়ার পথে বিভিন্নভাবে অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি, গালিগালাজ, টিটকারী ও মশকরা করে। স্কুলে আসার পথে তার মেয়ের সাথেও অনুরূপ আচরণ করে এবং কুপ্রস্তাব দিয়ে উত্যক্ত করে। বিষয়টি তিনি স্থানীয় মুরুব্বীয়ান এবং করগাঁও ইউপি চেয়ারম্যান ছাইম উদ্দিনকে অবগত করেন। চেয়ারম্যান তাকে পঞ্চায়েত আয়োজন করার পরামর্শ দেন। পঞ্চায়েতে আসামীগন দোষী সাব্যস্থ হয় এবং তারা এ ধরনের কার্যকলাপ করবেনা বলে অঙ্গীকার করে। কিন্তু পঞ্চায়েতের পরদিন হতেই সকল আসামীগণ একজোট হয়ে মহিলা মেম্বার ওয়ারিছা বেগমের সর্বনাশ করার হীন উদ্দেশ্যে সুযোগ খুঁজতে থাকে। এরই ধারাবাহিকতায় গত ২২ মার্চ বুধবার বিকাল ৪টায় বাদীনির বাড়ীর উত্তর পাশে সেজলু মিয়ার দোকানের পশ্চিমপাশে আসামীগণ পূর্ব পরিকল্পনা ও প্রস্তুতিমূলে প্রধান আসামী আলতাব আলীর নেতৃত্বে ও হুকুমে তাকে চতুর্দিক থেকে ঘেরাও করে ফেলে। এসময় আসামী রেজাউল মিয়া বাদীনিকে বেইজ্জতি করে বিগত নির্বাচনে পরাজয়ের প্রতিশোধ নেওয়ার হুংকার দেয়। অপর আসামী সিরাজুল ইসলাম ও ময়না মিয়া বাদীনির শরীরের স্পর্শকাতর স্থানে হাতাহাতি করে তার বোরকা ও ব্লাউজ ছিড়ে ফেলে। আসামী লায়েক মিয়া তার কাপড় ছোপড় টেনে শ্লীলতাহানী করে। এসময় তার শোর চিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে আসলে আসামীরা দৌড়ে পালিয়ে যায়। উল্লেখ্য, ওয়রিছা বেগম গত ৩ এপ্রিল নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট আদালত-২ হবিগঞ্জের আদালতে আলতাব আলী, সিরাজুল ইসলাম, লায়েক মিয়া, ময়না মিয়া সহ ৯ জনের বিরুদ্ধে ফৌজদারী কার্যবিধির ১০৭/১১৪/১১৭ (সি) ধারায় আরেকটি মামলা দায়ের করেন। এতে তিনি উল্লেখ করেছিলেন আসামীরা তাকে খুন করে লাশ গুম করে ফেলার প্রচারণা করছে। তার ঘরে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে সর্বশান্ত করে কিংবা আসামীরা নিজেরা নিজেদের ঘরে আগুন লাগিয়ে যেকোন অঘটন ঘটিয়ে মিথ্যা মামলা দিয়ে তাকে হয়রানি করবে বলে প্রচার করে। এরই ধারাবাহিকতায় গত ১ এপ্রিল ওয়ারিছা বেগম শেরপুর বাজারস্থ ঈদগাহের কাছে প্রকল্পের কাজ করানোর জন্য গেলে পূর্ব থেকে ওৎ পেতে থাকা আসামীরা তাকে অশ্লীষ ভাষায় গালিগালাজসহ দেশীয় প্রাণনাশক অস্ত্র নিয়ে আক্রমন করতে উদ্যত হয়। এসময় তার শোর চিৎকারে আশাপাশের লোকজন এসে তাকে রক্ষা করে। বর্তমানে তিনি আসামীদের ভয়ে ভীত সন্ত্রস্ত। তিনি কিংবা তার আত্মীয়-স্বজনের যদি আঘাত জনিত কারনে মৃত্যু হয় বা গুরুতরভাবে জখমপ্রাপ্ত হয় তাহলে আসামীগণ দায়ী থাকবে বলে তিনি ওই মামলার এজাহারে উল্লেখ করেন।


     এই বিভাগের আরো খবর