,

সৌদিতে হাজতবাস শেষে অবশেষে দেশে ফিরলো বানিয়াচংয়ের সীমা

জুয়েল চৌধুরী ॥ এক সপ্তাহ সৌদি কারাগারে হাজতবাস করে অবশেষে দেশে ফিরে এসেছে সীমা আক্তার (২৫) নামের বানিয়াচংয়ের এক যুবতী। সে ছাড়াও তাহমিনা আক্তার (২২) নামের অপর এক যুবতী নিখোঁজ রয়েছে বলে জানিয়েছেন তার স্বজনরা। গতকাল সোমবার হবিগঞ্জ শহরের ২নং পুল এলাকার হাজরে আসওয়াদ ট্র্যাভেলসের মালিকের খোঁজে আসে বানিয়াচংয়ের যাত্রাপাশা গ্রামের আইনুল হকের কন্যা সীমা আক্তার। এ সময় ট্র্যাভেলস মালিক ও দালালরা তাকে লাঞ্ছিত করলে শুরু হয় উত্তেজনা। খবর পেয়ে স্থানীয় লোকজন ও সাংবাদিকরা ঘটনাস্থলে ছুটে গেলে সৌদি আরবে তার উপর অমানসিক নির্যাতনের বর্ণনা প্রদান করে সীমা। সে কান্নাজড়িত কণ্ঠে সাংবাদিকদের জানায়, হবিগঞ্জ শহরের ২নং পুল এলাকার পুলিশ সুপার কার্যালয়ের প্রধান ফটকের হাজরে আসওয়াদ নামের ট্র্যাভেলসের মালিক খন্দকার মাহবুব, তার সহযোগি বহুলা গ্রামের আবুল মিয়া ও আগুয়া গ্রামের নাজিরা বেগম গত বছর তাদের বাড়ি বানিয়াচংয়ের যাত্রাপাশা গ্রামে যায়। সেখানে গিয়ে তাকে ও তার পরিবারকে বিভিন্নভাবে প্রলুব্দ করে তারা যেন সীমাকে বিদেশ পাঠান। দরিদ্র পিতার সংসারে অভাব অনটনের সুযোগটি কাজে লাগিয়ে উল্লেখিত তিন দালাল ঘন ঘন যাত্রাপাশা গ্রামে যাতায়াত করতো। এক পর্যায়ে সংসারের স্বচ্ছলতা ফেরাতে তাদের কথায় সীমাকে বিদেশ পাঠাতে রাজি হয় তার পরিবার। এ সময় উল্লেখিত তিন জন সীমার পরিবারকে জানায়, সৌদি আরবে ২০ হাজার টাকা বেতনে তাকে চাকুরী দেয়া হবে। এক পর্যায়ে পাসপোর্ট করিয়ে সীমাকে ট্রেনিংয়ের জন্য নিয়ে যাওয়া হয় ঢাকার মিরপুরের দারুস সালাম এলাকায়। এক মাস ট্রেনিংয়ের পর গত ২২ ফেব্র“য়ারি সৌদি আরব যায় সীমা। সেখানে ১ সপ্তাহ থাকার সময় বাসার মালিক দ্বারা বিভিন্নভাবে নির্যাতনের শিকার হতে থাকে সে। দিন দিন নির্যাতনের মাত্রা বাড়তে থাকে সীমার উপর। এক পর্যায়ে সীমা নির্যাতনের বিষয়ে প্রতিবাদ জানালে বাসার মালিক ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাকে ছুরিকাঘাত করে আহত করে। আহত সীমাকে ওই দেশের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসা শেষে তাকে সেখানকার পুলিশ তাদের হেফাজতে নিয়ে যায়। ৭ দিন কারাবাসের পর গত ২ এপ্রিল পুলিশ তাকে দেশে ফেরত পাঠায়। উল্লেখ্য, পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সামনে ট্র্যাভেলস এজেন্সি খুলে মানব পাচার শুরু করেছে এক শ্রেণীর দালালচক্র। তাদের খপ্পরে পড়ে মোটা অংকের টাকার লোভনীয় অফারে শত শত নারী বিদেশে গিয়ে শারিরীক, মানসিকসহ বিভিন্নভাবে নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন। নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে তাদের কেউ কেউ কারাবাস করে দেশে ফেরত আসছেন। আবার অনেকেই দীর্ঘদিন ধরে নিখোঁজও রয়েছেন। যাদের অনেক সন্ধান পাচ্ছে না পরিবার। ইতোপুর্বে উল্লেখিত তিনজনসহ ওই চক্রের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হলেও রহস্যজনক কারণে আইন শৃংখলাবাহিনী তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করছে না।


     এই বিভাগের আরো খবর