,

হবিগঞ্জে ইফতার সামগ্রী নিয়ে ধর্মপ্রান মুসল্লীদের সাথে প্রতারণা : ৩টি রেষ্টুরেন্টকে জরিমানা ও সতর্কতামূলক নির্দেশনা

রফিকুল হাসান চৌধুরী তুহিন ॥ বিশুদ্ধ খাবার বিক্রির নামে পবিত্র রমজান মাসেও ধর্মপ্রান মুসল্লীদের প্রিয় ইফতার সামগ্রী নিয়ে হবিগঞ্জ শহরে চলছে একশ্রেনীর ব্যবসায়ীর প্রতারণা। আর তার সাথে জড়িত যদি হন খোদ নব-নির্বাচিত এক ব্যবসায়ী নেতা সহ বেশ কয়েকটি হোটেল-রেষ্টুরেন্টের মালিক, তবে আর্শ্চয্য হবারই কথা। বৃহস্পতিবার বিকেলে হবিগঞ্জ জেলা কালেক্টরটের অধীনস্থ সদর ইউএনও এ, টি, এম আজহারুল ইসলাম ও এ্যাসিল্যান্ড বিজন কুমার সিংহ’র নেতৃত্বাধীন ভ্রাম্যমান আদালতের একটি টীম হবিগঞ্জ শহরে অভিযান পরিচালনাকালে জনস্বার্থ ও ভোক্তা অধিকার আইন বিরোধী ব্যবসা চালিয়ে যাবার এমনি এক ভয়াবহ সচিত্র পরিস্থিতি তাদের সম্মুখে ফুটে উঠলে সরকারী কর্মকর্তা-কর্মচারী ও সাংবাদিক সহ সাধারন মানুষের গা রীতিমত শিউরে উঠে। বিকেল পৌনে ৪ টার দিকে ওই দুই কর্মকর্তার নেতৃত্বে বের হওয়া ভ্রাম্যমান আদালতের সদস্যরা শহরের কলাপাতা রেষ্টুরেন্টে আকস্মিক অভিযান চালায়। এসময় সংশ্লিষ্ঠ রেস্টেুরেন্টের মালিক-কর্মচারীগণ মুসল্লীদের নিকট তাদের তৈরীকৃত নানা ইফতার পন্য সামগ্রী বিক্রি করছিলেন। তখন সংশ্লিষ্ঠ আদালতের সদস্যরা দেখতে পান ময়লা-আবর্জনার স্তুপের মাঝেই শুধু নয়, স্বাস্থ্যের জন্যও ক্ষতিকর এমন সবজি সহ বিভিন্ন দুষিত সামগ্রী দিয়ে ইফতার তৈরীর কাজ চলছে। সংশ্লিষ্ঠ আদালতের বিজ্ঞ বিচারকদ্বয় অনুসন্ধানে বের করে আনেন, নস্ট শুধু নয় বরং পোকা নড়াচড়া করছে এমন বেগুন ব্যবহার করে পুরাতন তেলে বেগুনী তৈরী করা হচ্ছে। শুধু তাই নয়, অন্যান্য ইফতার সামগ্রীও নানাবিধ কারনে খাবার অনুপযোগী। ফলে জনসাধারনের সাথে প্রতারনা করার জন্য ভোক্তা অধিকার সংরক্ষন আইন ২০০৯ এর ৫৩ ধারায় বিজ্ঞ আদালত এই প্রতিষ্ঠানকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা সহ ভবিষ্যতের জন্য সতর্কতামূলক দিক নির্দেশনা প্রদান করেন। এদিকে নস্ট হয়ে যাওয়া বেগুন দিয়ে বেগুনী তৈরী করে রোজদারদের মাঝে বিক্রি সহ অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে সবজি কাটা, ব্যবহার ও তা মজুদ করে রাখার অপরাধে শহরের এম সাইফুর রহমান টাউন হল সড়কস্থ হবিগঞ্জ ব্যবসায়ী কল্যান সমিতি (ব্যাকস) এর নব-নির্বাচিত সাধারন সম্পাদক আলমগীরের প্রতিষ্ঠান মধুবন হোটেল এন্ড রেস্তোরাকে ৩ হাজার টাকা জরিমানা প্রদান করে একই আদালত। সেই সাথে খাবার অনুপযোগী সামগ্রীও ধ্বংস করে ভবিষ্যতে নিয়ম বহির্ভূত ব্যবসা না করা এবং সবজি কাটার নোংরা ঘরটি না রাখার নির্দেশ দেন আদালত। এছাড়া একই ভাবে নষ্ট ও পোকাক্রান্ত বেগুন দিয়ে বেগুনী তৈরী ও নোংরা পরিবেশে ব্যবসা কারতে দেখে সংশ্লিষ্ঠ ভ্রাম্যমান আদালত শহরের বানিজ্যিক এলাকাস্থ জলযোগ মিষ্টান্ন ভান্ডারের মালিকদ্বয়ের ওপর অসন্তোষ প্রকাশ করেন এবং ৩ হাজার টাকা জরিমানা সহ স্বাস্থ্যকর পরিবেশে ব্যবসা চালানোর নির্দেশ দেয়া হয়। এদিকে সংশ্লিষ্ঠ আদালতের বিজ্ঞ বিচারক সদর ইউএনও এ, টি, এম আজহারুল ইসলাম ও এ্যাসিল্যান্ড বিজন কুমার সিংহ জানান, রোজার মাস জুড়ে জনস্বার্থে এই ধরনের অভিযান জেলা প্রশাসন চালিয়ে যাবে।


     এই বিভাগের আরো খবর