,

৫৭ ধারা থাকছে কি? সিদ্ধান্ত রোববার

সময় ডেস্ক ॥ তথ্যপ্রযুক্তি আইনের সমালোচিত ও বিতর্কিত ৫৭ ধারা কি থাকছে? না বাতিল হচ্ছে। আগামী রোববার বেলা ১১টায় আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উচ্চ পর্যায়ের সভায় এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। ওই সভায় ২১ সরকারি ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের মতামত নেবে লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগ। একই সঙ্গে গত ১৬ই মে ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, ২০১৬’-এর খসড়া নিয়ে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভার সিদ্ধান্তও আলোচনায় স্থান পাবে। এ সভায় উপস্থিত থাকতে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, অ্যাটর্নি জেনারেলের অফিস, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়, তথ্য মন্ত্রণালয়, আইন ও বিচার বিভাগ, জননিরাপত্তা বিভাগ, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ, বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এটুআই প্রকল্প, ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ফোর্সেস ইন্টেলিজেন্স (ডিজিএফআই), র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ান (র‌্যাব), কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট, সিআইডি, পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি (আইসিটি), বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল ও বেসিসকে অনুরোধ করা হয়েছে। আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ডিজিটাল ডিভাইস বা প্রযুক্তিগত সরঞ্জাম ব্যবহার করে পরিচালিত যেকোনো ধরনের নেতিবাচক কার্যক্রম আইনের আওতায় আনতে সরকার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন করছে। এই আইনে রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা লঙ্ঘন সংক্রান্ত বিষয়ে সর্বোচ্চ ১৪ বছর কারাদণ্ডের প্রস্তাব করা হয়েছে। এছাড়া, অপরাধের গুরুত্ব বিবেচনা করে আলাদা শাস্তির ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। নতুন ওই আইন প্রণয়নের পাশাপাশি তথ্যপ্রযুক্তি আইন থেকে সমালোচিত ও বিতর্কিত ৫৭ ধারা ছাড়াও তথ্যপ্রযুক্তি আইনের ৫৪, ৫৫ ও ৫৬ ধারা বাতিল করা হতে পারে। এসব ধারা বাদ দিয়ে তথ্যপ্রযুক্তি আইন থেকে ডিজিটাল সংক্রান্ত বিষয়গুলো সরিয়ে নেয়া হবে। একই সঙ্গে তথ্যপ্রযুক্তি আইনের নাম পরিবর্তনসহ বেশকিছু ধারায় সংশোধনী আনা হতে পারে। এর আগে ২০০৬ সালে তথ্যপ্রযুক্তি আইন প্রণয়ন করা হয়। ২০১৩ সালে আইনটি সংশোধন করা হয়। আইনটি সংশোধনের পর ৫৭ ধারাটির অপব্যবহার ও প্রয়োগে স্বেচ্ছাচারিতা নিয়ে রাজনৈতিক দল, নাগরিক সমাজ ও মানবাধিকার সংগঠনগুলো সোচ্চার হয়ে উঠে। আইনজ্ঞ ও বিশেষজ্ঞরা এটাকে অসাংবিধানিক অভিহিত করে তা সংশোধনের দাবি তোলেন। সংবাদপত্রের প্রকাশক, মালিক ও সম্পাদকদের সংগঠন বাংলাদেশ সম্পাদক পরিষদ এবং বাংলাদেশ নিউজ পেপার ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন (নোয়াব) ৫৭ ধারা বাতিলের দাবি জানায়। তথ্যপ্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারায় অপরাধের শাস্তি সর্বোচ্চ ১৪ ও সর্বনিম্ন ৭ বছর কারাদণ্ড এবং অনধিক এক কোটি টাকা অর্থদণ্ড। এদিকে গত ১৬ই মে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে অনুষ্ঠিত মত বিনিময় সভার পরদিন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, নতুন ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) আইনের ৫৭ ধারার সব বিভ্রান্তি দূর করা হবে। বাক-স্বাধীনতার ব্যাপারে যাতে কারো মনে কোনো দ্বিধা-দ্বন্দ্ব না থাকে, এ নিয়ে কারো মনে কোনো প্রশ্ন না ওঠে তা ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনে পরিষ্কার করা হবে। আইনমন্ত্রী বলেন, ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনের খসড়ায় মন্ত্রিপরিষদ ইতিমধ্যেই নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে। আইন মন্ত্রণালয় এখন আইনটি যাচাই-বাছাই করছে। এ নিয়ে সমপ্রতি একটি আন্তঃমন্ত্রণালয় সভাও হয়েছে। সার্বিক দিক পর্যালোচনা করে সভায় উপস্থিত সকলেই এ আইন প্রণয়নের প্রয়োজনীয়তার বিষয়ে একমত হন। এর ভিত্তিতেই উচ্চ পর্যায়ের সরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের মতামত নেয়ার জন্য ডাকা হয়েছে।


     এই বিভাগের আরো খবর