,

হবিগঞ্জে বহু প্রত্যাশিত দুদকের গণশুনানী অনুষ্ঠিত ॥ জনগনের সেবা সুনিশ্চিতে সকল দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দুর্নীতি পরিহারের আহবান

রফিকুল হাসান চৌধুরী তুহিন ॥ জনগনের সেবা সুনিশ্চিতে জেলা দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ও জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির যৌথ উদ্যোগে সরকারী-আধা সরকারী ও স্বায়ত্বশাসিত দপ্তর গুলোর কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অনিয়ম-দুর্নীতি পরিহারের মাধ্যমে আরও দায়িত্ববান এবং সাধারন মানুষকে সচেতন হওয়ার আহবান জানিয়ে গতকাল বুধবার হবিগঞ্জে অনুষ্ঠিত হলো বহুল প্রত্যাশিত দুর্নীতি দমন কমিশনের ‘গণশুনানী’। জেলা প্রশাসক সাবিনা আলমের সভাপতিত্বে ও সদর ইউএনও এ, টি, এম আজহারুল ইসলাম এবং নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট শামসাদ বেগমের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত এই গণশুনানীর ১ম পর্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, দুর্নীতি দমন কমিশনের কমিশনার (তদন্ত) এ,এফ,এম আমিনুল ইসলাম (মহামান্য সুপ্রীমকোর্ট আপিল বিভাগের বিচারপতি পদমর্যাদা সম্পন্ন)। বিশেষ অতিথি ছিলেন, সিলেট বিভাগীয় কমিশনার ড. নাজমারানারা খানুম, সিলেট র‌্যাঞ্জের ডিআইজি মোঃ কামরুল ইসলাম, সিলেট মেট্রোপলিটিন পুলিশ কমিশনার মোঃ গোলাম কিবরিয়া ও জেলা পুলিশ সুপার জয়দেব কুমার ভদ্র। এসময় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, জেলা দুদক এর ডেপুটি ডাইক্টের মোঃ খোন্দকার খলিলুর রহমান ও জেলা দুপ্রক এর ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ডাঃ জমির আলী। এদিকে অনুষ্ঠানের ২য় পর্বে শুরু হয় সেবা বঞ্চিত জনগনের বহু প্রতিক্ষিত দুদক এর গণশুনানী। এতে মডারেটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন জেলা প্রশাসক সাবিনা আলম এবং সহযোগীতায় ছিলেন সিলেট বিভাগীয় দুদক এর ডাইরেক্টর শিরীন পারভীন, সদর ইউএনও এ,টি,এম আজহারুল ইসলাম, জেলা দুদক ডিপুটি ডাইরেক্টর খলিলুর রহমান ও দুপ্রক মেম্বার সাংবাদিক রফিকুল হাসান চৌধুরী তুহিন। এতে ব্যাপক অনিয়ম-দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত সরকারী-আধাসরকারী এবং স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠানের সর্বমোট ১৮টি দপ্তর প্রধানদেরকে সেবা বঞ্চিত জনগনের মুখোমুখি করে জবাব দিহিতার আওতায় আনা হয়। এসব দপ্তরে নানা কাজে সাধারন মানুষ সেবা পেতে গিয়ে এক শ্রেনীর কর্মকর্তা-কর্মচারী কর্তৃক অনিয়ম-দুর্নীতি সহ দালালদের খপ্পরে নানা হয়রানীর শিকার হওয়া সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের অভিযোগ উত্থাপন এবং দুদক কমিশনার (তদন্ত) এ,এফ,এম আমিনুল ইসলাম ও সিলেট র‌্যাঞ্জের ডিআইজি মোঃ কামরুল ইসলামের প্রশ্নবানে জর্জরিত হন অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা। এসময় লক্ষনীয় বিষয় ছিল, সেবা বঞ্চিত জনগণ এবং অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠান কর্মকর্তাদের বক্তব্য শুনে বিচারপতি পদমর্যাদা সম্পন্ন ওই কমিশনার আমিনুল ইসলাম ও সিলেট র‌্যাঞ্জের ডিআইজি কামরুল ইসলাম তাৎক্ষনিক সমাধান দেন এবং সংশ্লিষ্ট দপ্তর প্রধানদেরকে নিদিষ্ট সময় বেঁধে নির্দেশ দেন এইসব সেবা বঞ্চিত মানুষের সমস্যা দ্রুত সমাধানের। শুধু তাই নয়, দু’একটি দপ্তর প্রধানদেরকেও তাদের দায়িত্বহীনতা ও হয়রানীর জন্য তিরস্কার করেন। সাধারন মানুষও প্রথমবারের মতো হবিগঞ্জে অনুষ্ঠিত এই গণশুনানী উপলক্ষে তাদের সেবা পেয়ে বেজায় খুশী হয়ে বলেন, অতীতে শুধু আমরা দুদক এর নাম শুনেছি। যা ছিল সরকারের অজ্ঞাবহ এবং সাইনবোর্ড সর্বস্ব। কিন্তু এখন আমরা বুঝতে পারছি দুদক অনেক স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারছে। সাহসী ভূমিকাও রাখছে। আর আমরা আজ বুঝতে পারলাম দুদক সাধারন মানুষের সেবা নিশ্চিতে আন্তরিকভাবেই কাজ করছে। ফলে জনগনের আস্থাও ফিরে আসবে। এদিকে দুদক কমিশনার আমিনুল ইসলাম অভিযুক্ত ওইসব প্রতিষ্ঠান দপ্তর প্রধানদের সর্তক করে দিয়ে বলেন, এমন মনে করার কোন কারন নেই যে, অনিয়ম-দুর্নীতির কারনে অভিযুক্ত করে দুদক কারো বিরুদ্ধে মামলা করেছে, আর এজহার বা চার্জশীট ক্রটিযুক্ত থাকায় তারা আদালত থেকে বেরিয়ে আসবে। দুদক এখন শতভাগ ক্রটিমুক্ত করেই কোন ব্যক্তির বিরুদ্ধে এজাহার বা চার্জর্শীট দিচ্ছে। ফলে কেউ পাড় পাওয়া সম্ভব নয়। তিনি এইসব কর্তাদের স্মরন করিয়ে আরও বলেন, অনিয়ম-দুর্নীতি থেকে আপনি বা আপনার প্রতিষ্ঠান বেরিয়ে আসুন-সেবা দিন জনগণকে। নইলে কারো নিস্তার নেই। তিনি এই ধরনের গণশুনানী আরও হবিগঞ্জ সহ সিলেট বিভাগে পর্যায়ক্রমে হবে বলে জনগণকে আশ্বস্থ করেন।


     এই বিভাগের আরো খবর