,

নবীগঞ্জের আলোচিত সেই পাগলীকে চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নিয়ে গেলেন ব্যাংকার শামীম

শাহ্ সুলতান/ছনি চৌধুরী ॥ নবীগঞ্জ উপজেলার আউশকান্দি হীরাগঞ্জ বাজারে গতকাল শুক্রবার এক ব্যতিক্রমধর্মী অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়েছে। পাগল খুঁজে বেড়ানো শামীম আহমদ ও তার লোকজন জনপ্রতিনিধি, প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও সাংবাদিকদের সামনে আনুষ্ঠানিকভাবে একটি এ্যাম্বুলেন্সে করে এক মানসিক ভারসাম্যহীন (পাগলী) কে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য ঢাকা নিয়ে যান। এসময় স্থানীয় সংসদ সদস্য, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ এলাকাবাসী উপস্থিত ছিলেন। এ উপলক্ষে সংক্ষিপ্ত একটি অনুষ্ঠানে ব্যাংকার শামীম আহমেদ পাগল খুঁজে বেড়ানোর লক্ষ উদ্দেশ্য তুলে ধরেন। জানা যায়, গত প্রায় তিন মাস ধরে আউশকান্দি বাজার এলাকায় এক মানসিক ভারসাম্যহীন (পাগলী) এই মহিলা ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন। রাস্তায় পড়ে থাকা নোংরা খাবার খায় এবং রোদ কিংবা ঝড় বৃষ্টির মধ্যেও রাস্তায় ঘুমিয়ে রাত কাটায়। কেউ কিছু জিজ্ঞাসা করলে স্পষ্ট করে কিছু বলতেও পারেনা। একেক বার একেক নাম ঠিকানা বলে। তবে বেশির ভাগই তার নাম সুমি বলে জানায়। বাড়ি কোথায় জিজ্ঞাস করলে বলে টাঙ্গাইল কখনো বলে আব্দুল্লাপুর এলাকায়। এখানে কেন এসেছেন এমন প্রশ্ন করলে জানায় সে তার বাড়ি খুঁেজ বেড়াচ্ছে, সে বাড়ি যেতে চায়। স্বামী ও ছেলে মেয়ে আছে তবে তাদের নাম ও নির্দিষ্ট ঠিকানা বলতে পারছেনা। ওই মহিলা অনেক সময় ইংরেজিতে কথা বার্তা বলে। এদিকে, সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে নবীগঞ্জের আউশকান্দি এলাকায় এসেছিলেন ঢাকাস্থ যমুনা ব্যংকের সিনিয়র এক্সিকিউটিভ অফিসার শামীম আহমদ। তখন দি লার্নিং পয়েন্ট ক্যাডেট স্কুলের প্রধান শিক্ষক শেখ কায়সার আহমদ এর মাধ্যমে ওই পাগলীর সন্ধান পান। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ৩টায় ব্যাংকার শামীম আহমেদ ও যমুনা ব্যাংকে কর্মরত তার বন্ধু আলী সাব্বির, শফিকুল ইসলাম, জাগো নিউজ ২৪ এর সহকারী বার্তা সম্পাদক মাহাবুর আলম সোহাগ, সাংবাদিক আবেদুর শাহীন নবীগঞ্জে এসে পৌছান। পরে শুক্রবার সকাল ১১ টায় নবীগঞ্জের আউশকান্দি থেকে ওই পাগলীকে ঢাকা শেরে বাংলানগর জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনষ্টিটিউটে চিকিৎসার্থে নিয়ে যান। পাগলীকে নিয়ে যাওয়ার আগে সংক্ষিপ্ত এক আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন, স্থানীয় সংসদ সদস্য এম এ মুনিম চৌধুরী বাবু, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাজিনা সারোয়ার, আউশকান্দি ইউপি চেয়ারম্যান মুহিবুর রহমান হারুন, পৌরসভার প্যানেল মেয়র এটিএম সালাম, গোপলার বাজার তদন্ত কেন্দ্রের অফিসার ইনর্চাজ মোহাম্মদ আলী আশরাফ, আউশকান্দি বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মুর্শেদ আহমেদ, সাংবাদিক মতিউর রহমান মুন্না, সুলতান মাহমুদ, মহিবুর রহমান চৌধুরী তছনু, মিজানুর রহমান সোহেল, বুলবুল আহমদ, ব্যবসায়ী শাহ মোস্তাকিম আলী, ইউপি সদস্য খালেদ আহমেদ জজ, আব্দুল মুকিত, দি লার্নিং পয়েন্ট ক্যাডেট স্কুলের পরিচালক কাজী আব্দুল বাছিত, ব্যবসায়ী আব্দুর রহিম প্রমুখ। উল্লেখ্য, ইতিপূর্বে ব্যাংকার শামীম আহমেদ রাস্তায় পড়ে থাকা ভারসাম্যহীন মানসিক রোগি এরকম ৪টি মেয়ে অন্তরা, আদুরী, পারুলী, সাহেদাকে চিকিৎসা সেবা দিয়ে সুস্থ্য করে পরিবারের নিকট হস্তান্তর করেন। এ ব্যাপারে শামীম আহমদ এ প্রতিনিধিকে বলেন, আমার ভবিষ্যত স্বপ্ন হলো একটি মানসিক হাসপাতাল ও পূর্নবাসন কেন্দ্র প্রতিষ্টা করা। যেখানে রাস্তায় পড়ে থাকা ভারসাম্যহীন মানুষদের বিনামূল্যে চিকিৎসা দিয়ে সুস্থ্য করে তোলা হবে। প্রসঙ্গত, রাস্তার পাশে ঘুরে বেড়ানো মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যাক্তিদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনতে শামিম আহমেদ দীর্ঘ দিন ধরে ঘুরে বেড়ান দেশের এক প্রান্থ থেকে আরেক প্রান্থে। এরই ধারাবাহিকতায় নবীগঞ্জের আউশকান্দিতে এই মানসিক ভারসাম্যহীন মহিলার সন্ধান পেয়ে তিনি নবীগঞ্জের এই মহিলাকে নিয়ে যান।


     এই বিভাগের আরো খবর