,

অস্ট্রেলিয়াকে হারালো বাংলাদেশ ॥ টাইগার বন্দনায় বিশ্ব

সময় ডেস্ক ॥ ইংল্যান্ডের পর এবার নিজেদের মাঠে শক্তিশালী অস্ট্রেলিয়াকেও টেস্ট হারালো বাংলাদেশ। ঢাকার মিরপুর স্টেডিয়ামে সিরিজের প্রথম টেস্টে বাংলাদেশের জয় ২০ রানের। চতুর্থ ইনিংসে ২৬৫ রানের টার্গেট সামনে নিয়ে অস্ট্রেলিয়া ২৪৪ রানে অলআউট হলো। দ্বিতীয় ইনিংসে সাকিব আল হাসান ৫, তাইজুল ইসলাম ৩ ও মেহেদি হাসান মিরাজ নিলেন ২ উইকেট। প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশ ও অস্ট্রেলিয়া যথাক্রমে ২৬০ ও ২১৭ রান করে। ৪৩ রানে এগিয়ে থেকে বাংলাদেশ নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে ২২১ রানে অলআউট হয়। এতে জয়ের জন্য চতুর্থ ইনিংসে অজিদের সামনে টার্গেট দাঁড়ায় ২৬৫ রান। এই টার্গেট সামনে নিয়ে ২ উইকেটে ১০৯ রানে তৃতীয় দিন শেষ করে অস্ট্রেলিয়া। অধিনায়ক স্টিভেন স্মিথ ২৫ ও সহ-অধিনায়ক ডেভিড ওয়ার্নার ৭৫ রানে অপরাজিত থাকেন। আজ চতুর্থ দিন সকাল থেকে দারুণ ব্যাটিং করে যান তারা। তবে তৃতীয় উইকেটে ১৩০ রানের জুটি ভাঙেন সাকিব আল হাসান। ১১২রান করা ডেভিড ওয়ার্নারকে এলবিডাব্লিউ করে ফেরান তিনি। এরপর স্মিথকে মোস্তাফিজের হাতে ক্যাচ দিতে বাধ্য করেন সেই সাকিব। অজি অধিনায়কের রান তখন ৩৭। এরপর হ্যান্ডসকম্বকে ১৫ ও অ্যাশটন অ্যাগারকে ২ রানে ফেরান তাইজুল ইসলাম। চতুর্থ দিন লাঞ্চ থেকে ফিরে প্রথব বলেই গ্লেন ম্যাক্সওয়েলকে বোল্ড করে ফেরান সাকিব হাসান। এরপর নাথান লায়নকে ফেরান মেহেদি হাসান মিরাজ। এর আগে ম্যাচে উত্তেজনা ফেরান সাকিব আল হাসান। সেঞ্চুরিয়ান ডেভিড ওয়ার্নার ও ভয়ঙ্কর স্টিভেন স্মিথকে ফেরান তিনি। এরপর তাইজুল ইসলাম হানেন জোড়া আঘাত। অথচ দিনের শুরুতে ডেভিড ওয়ার্নার ও স্টিভেন স্মিথের ব্যাটিংয়ে মনে হচ্ছিল, জয়ের অপেক্ষায় অস্ট্রেলিয়া। ২০/১। টান টান উত্তেজনাকর এই পরিস্থিতিতে তাইজুলের হাতে অজিদের নীল বিষের ঘড়া পূর্ণ হল। সেই সঙ্গে সঙ্গে অস্ট্রেলিয়ার গণমাধ্যম দ্য অস্ট্রেলিয়ানের শিরোনম, ‘জাতীয় দলের ঐতিহাসিক হার’। আরেক সংবাদমাধ্যমের হাইলাইট, ‘অজিদের জন্য সময়ের সেরা বিপর্যয়’। ভারতের দৈনিক দ্য হিন্দুস্থান ও জার্মানির সংবাদ মাধ্যম ডয়েচে ভেলে টেস্ট সিরিজের মূল ক্রেডিট স্পিনারদের দিতে দেরি করে নি। সর্বশেষ তাইজুল কোপে এলবিডব্লিউ হওয়ার পর এই দুই পত্রিকার হেডলাইন হয়, রোমাঞ্চকর বিজয় স্পিনারদের’ ও ‘স্পিন ফাঁদে আটকে গেছে অস্ট্রেলিয়া’। অস্ট্রেলিয়ার সংবাদ মাধ্যমের আরেক প্রতিবেদনের শিরোনাম হয়, ‘ব্যাটিং ধ্বসে ধাক্কা খেয়েছেন অস্ট্রেলিয় নাগরিকরা’। এতে বলা হয়, ‘ডেভিড ওয়ার্নারের শতরানের পর হঠাৎ করেই ঘুরে গেল ম্যাচের মোড়। ওয়ার্নারের সেঞ্চুরি বাংলাদেশে খেলা দেখতে যাওয়া অস্ট্রেলিয়ার পর্যটকদের মুখে হাসি ফোটাতে পারেনি। ঢাকাতে অস্ট্রেলিয়ার বিপর্যয় দেখেছে তারা। জাতীয় দলের জন্য অন্যতম একটি বিপর্যয় ডেকে আনল বাংলাদেশ।’ এসবিএস এবং বিবিসি সিরিজের মূল নায়ক সাকিবকেই বিজয়ী প্রতিবেদনের শিরোনামে তুলে ধরে। এতে বলা হয়, ‘সাকিব তারায় জ্বলজ্বল করছে বাংলাদেশ।’ বল হাতে ১০ উইকেট ও ব্যাট হাতে ৮৯ রান নিয়ে অজিদের হার্টবিট বাড়িয়ে দিয়েছেন এই টাইগার সদস্য। শতরান পাড়ি দেয়া জুটি ডেভিড ওয়ার্নার ও স্টিভেন স্মিথকে স্পিন টোপে ফেলে সাজঘরে পাঠিয়ে দেন সাকিব। তবে বিশ্ব পরাশক্তির অন্যতম এই দলের বাংলাদেশের কাছে টেস্ট হার সহজে হজম করে নিতে পারে নি অস্ট্রেলিয়া। অস্ট্রেলিয়ার গণমাধ্যম দ্য ডেইলি টেলিগ্রাফের প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘ক্রিকেট মিনোজদের হাতে পরাজয়ের পীড়া ভোগ করছে জাতীয় দল’। ‘মিনোজ’ বা ‘ছোট’ দল বলে যখন বাংলাদেশকে উপহাস করা হচ্ছিল ঠিক তখনই মিরপুরে স্টেডিয়ামে অজি বধের উল্লাস ও ব্রিটিশ দৈনিক দ্য গার্ডিয়ানের হেডলাইন,‘ বাংলাদেশের কাছে আত্মসমর্পণ অস্ট্রেলিয়ার।’ এখন শুধুই ৪ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রামে সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টের অপেক্ষা। ঈদের আনন্দের পর হোয়াইটওয়াশের আরেক তৃপ্তি লাভের প্রত্যাশায় ক্রিকেট পাগল বাঙ্গালি।


     এই বিভাগের আরো খবর