,

সৈয়দ কমর উদ্দিনের শিক্ষা ও কর্ম জীবন

সৈয়দ আখলাক উদ্দিন মনসুর ॥ চুনারুঘাট উপজেলার তরফ রাজ্যের ঐতিহাসিক মুড়ারবন্দ ১২০ আউলিয়ার দরবার শরীফের হযরত সৈয়দ শাহ নাসির উদ্দিন সিপাহ সালাহ (রহঃ) এর উত্তরসূরী বংশের বন্দেগীশাহ হযরত সৈয়দ দাউদ (রহঃ) এর পুত্র শাহ সৈয়দ মহিউল্লাহ
(রঃ) ও শাহ সৈয়দ হাসান উল্লা (রহঃ) ওরফে সৈয়দ নাছির প্রকাশ ছাউয়ালপীর বা জিন্দাশিশু পীর এর উত্তরসূরীবংশধর সৈয়দ কমর উদ্দিন ওরফে মামুদ মিয়া ২৫ ডিসেম্বর ১৯৪৩ ইংরেজীতে হবিগঞ্জ সদর উপজেলার শায়েস্তাগঞ্জ পৌরসভার দাউদনগর (মধ্য সাহেব বাড়ি) গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা ছিলেন মরহুম সৈয়দ আফতাব উদ্দিন, মাতা সৈয়দা হালিমা খানম, পিতা ছিলেন লস্করপুর হাবেলীর কাচারী অফিসের সাব রেজিষ্টার। তিনি চার বোন ও দুই ভাইয়ের মধ্যে সকলের ছোট। সৈয়দ কমর উদ্দিন শিক্ষা জীবনে শায়েস্তাগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তি হয় ১৯৬০ সালে ইস্ট পাকিস্থান শিক্ষাবোর্ড ঢাকা অধীনে মানবিক বিভাগ হতে এসএসসি ১ম বিভাগে পাস করেন।  উক্ত স্কুল জীবনে তিনি খেলা এবং লেখাপড়ায় ভালো ছাত্র ছিলেন। এছাড়া ইংরেজী পারদর্শী। তিনি সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডের সাথে জড়িত ছিলেন। যেমন- শায়েস্তাগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ের কালাচারাল সচিব ছিলেন। কুমিল্লা বোর্ড অধীনে চট্টগ্রাম সিটি কলেজ থেকে ১৯৬৬ ইংরেজিতে মানবিক বিভাগ হতে ১ম বিভাগে এইচ.এস.সি পাস করেন। এবং উক্ত কলেজের কালচারাল অ্যান্ট ডিবেইট সেক্রেটারী। ১৯৭০ ইংরেজী চট্টগ্রাম সিটি বিশ্ববিদ্যালয় হতে বিএ এবং ১৯৭২ ইংরেজী চট্টগ্রাম আইন কলেজ থেকে এলএলবি ডিগ্রী লাভ করেন। ১৯৬২ ইংরেজীতে বাংলাদেশ বন শিল্প উন্নয়ন কর্পোরেশন ডড়ড়ফ ঞৎধরহরহম চষধহঃ  (কালুরঘাট, মোহরা, চট্টগ্রাম) প্রশাসনিক কর্মকর্তা দায়িত্ব পালন করেন। পরে তিনি চট্টগ্রাম জালালবাদ এসোসিয়েশনে সহ-সভাপতি ছিলেন। পরে তিনি চট্টগ্রাম বিভাগীয় বন কর্মকর্তা দায়িত্ব পালন করে ১৯৭৮ ইংরেজীতে চাকুরী ছেড়ে দেন। চাকুরী শেষে তিনি ঢাকা জাতীয় সাপ্তায়িক নয়াবার্তা পত্রিকার সহকারী সম্পাদক সহ বেশ কয়েকটি জাতীয় দৈনিক ইংরেজী এবং বাংলা পত্রিকার ফিচার লেখক ছিলেন। সরকারি চাকুরী থাকাকলীন ইউরোপের বেশ কয়েকটি দেশের সেমিনারে অংশগ্রহন করেন। ১৯৮১ সালে বৃহত্তর সিলেট বিভাগের বিএভিএস এর প্রশাসনিক কর্মকর্তা ছিলেন। বিএভিএস এ ২ বছর চাকুরী করে অব্যাহতি নেন। পরে ঢাকা মালিবাগ ও সিলেট ধোপাদিঘির উত্তর পার উচ্চ শিক্ষার্থে ইউরোপে পাঠানো “ফরেন এডুকেশন গাইড” প্রতিষ্ঠান খুলেন। সেখান থেকে শায়েস্তাগঞ্জ পৌরসভার দাউদনগর বাজারে টোফেল স্টাডি সেন্টার’ প্রতিষ্ঠান খুলে আধুনিক ইংরেজী ভাষা শিক্ষাদান করাতেন। এর পাশে তিনি ইউরোপ মহাদেশের অন্তর্গত সাইপ্রাসের আমেরিকান কলেজসহ বেশ কয়েকটি ইউনিভার্সিটি কাউন্সিল অব মেনেজমেন্ট এর পক্ষে বাংলাদেশের একমাত্র স্থায়ী প্রতিনিধি ছিলেন এবং উক্ত কলেজ হতে মাসিক কমিশন ভাতা ভুক্ত ছিল। তাহার প্রচেষ্ঠায় দেশের শত শত ছাত্র-ছাত্রীকে ইউরোপে পাঠিয়েছেন। ছাত্র-ছাত্রীরা ইউরোপের কলেজগুলোতে পাঠানোর পর উচ্চ ডিগ্রী লাভ ও কর্মজীবি হিসেবে কাজ করে যাচ্ছেন। এদিকে শায়েস্তাগঞ্জ পৌর নাগরিক কমিটি প্রতিষ্ঠাতা সেক্রেটারী ও শায়েস্তাগঞ্জ সমাজ কল্যাণ সোসাইটে প্রতিষ্ঠাতা সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। এর মধ্যে তিনি ২০০১ সাল হতে ২০০৩ সালে বিনা প্রতিদ্বন্ধিতায় হবিগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ৩নং এলাকার পরিচালক এবং পল্লীবিদ্যুতায়ন বোর্ডের সচিব ছিলেন। পরে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান হওয়ার পর ২০০৩ সালে ১৩ ডিসেম্বর স্ত্রী, ৩ পুত্র ও ৩ কন্যা, নাত-নাতনি সহ অসংখ্য আত্মীয় স্বজন ও গুণগ্রাহী রেখে মৃত্যুবরণ করেন।


     এই বিভাগের আরো খবর