,

বাহুবলে দুইশত পঞ্চাশ জন ছাত্রের মাধ্যমিক শিক্ষাজীবন নিয়ে পড়েছে বিপাকে

বাহুবল প্রতিনিধি ॥ বাহুবল উপজেলা সদর ও আশপাশের দুইশত পঞ্চাশ জন পিইসি পাশ শিক্ষার্থীদের মাধ্যমিক শিক্ষাজীবন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। উপজেলা সদরস্থ ডিএনআই মডেল হাই স্কুলের ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তি কার্যক্রমে কড়াকড়ি আরোপের ফলে এ আশঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে। উপজেলা সদরের পাঁচ বর্গকিলোমিটারের মধ্যে আর কোন মাধ্যমিক বিদ্যালয় বা দাখিল মাদরাসা না থাকায় স্থানীয় অভিভাবকরা বিড়ম্বনায় পড়েছেন। গত রবিবার ওই বিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত ভর্তি পরীক্ষায় ৩ শত ৭৬ জন কৃতকার্য হয়েছে। অকৃতকার্য হয়েছে ১ শত ৪৫ জন এবং পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারেনি আরো শতাধিক শিক্ষার্থী। বাহুবল উপজেলা সদর ও আশপাশের প্রায় ৫ বর্গকিলোমিটার এলাকাজুড়ে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বলতে ডিএনআই মডেল হাই স্কুল (দীননাথ ইনস্টিটিউশন সাতকাপন) ও ছদরুল হোসেন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়। এছাড়া অত্র এলাকায় কোন দাখিল মাদরাসাও নেই। ফলে ডিএনআই মডেল হাই স্কুলে ভর্তিতে চাপ সবসময়ই থাকে। ফলে প্রতিবছর ৬ষ্ঠ শ্রেণিতেই ৫ শতাধিক শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয়। গত বছরের শেষ দিকে বিদ্যালয়টি জাতীয়করণের জন্য তালিকাভূক্ত হয়। জাতীয়করণ চূড়ান্ত না হলেও এখন থেকেই বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ নতুন শিক্ষাবর্ষে ভর্তিতে কড়াকড়ি আরোপ করে। মনগড়া মতে ১০০ নম্বরের ভর্তি পরীক্ষার উদ্যোগ নেয়া হয়। এ লক্ষ্যে একশত টাকা মূল্যে ফরম বিক্রি শুরু হয়। ৬১৫ জন ফরম ক্রয় করলেও যথা সময়ে ফরম জমা পড়ে ৫ শত ৬৭টি। রবিবার সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত ভর্তি পরীক্ষায় ৫ শত ২১ জন অংশগ্রহণ করে। যথাসময়ে ফরম জমা দিতে পাড়েনি ৪৮ জন এবং পরীক্ষায় অনুপস্থিত ছিল ৪৬ জন। আব্দুস সালাম নামের এক অভিবাবক জানান, আমার ছেলে সরকারি পরীক্ষায় পাশ করে হাইস্কুলে ভর্তির জন্য অধীর আগ্রহ দেখাচ্ছিল। কিন্তু রবিবারের অনুষ্ঠিত ভর্তি পরীক্ষায় ফেল করে তার সব আগ্রহ মলিন হয়ে যায়। তিনি আরও বলেন ডিএনআই স্কুল কর্তৃপক্ষের কঠিন সিদ্বান্ত ও আশ-পাশে মাধ্যমিক স্কুল বা মাদরাসা না থাকার কারণে আমার ছেলের লেখা পড়া কি এখানেই শেষ হয়ে যাবে? সরকার যেখানে শিশু শিক্ষার্থীদের ঝড়েপড়া রোধে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিচ্ছে, সেখানে ডিএনআই স্কুল ভর্তি কার্যক্রমে কড়াকড়ি আরোপ করে শিশুদের শিক্ষাজীবন অনিশ্চিতের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। একই কথা বলেছেন আরো অনেক অভিবাবক। দীননাথ ইনস্টিটিউশন সাতকাপন মডেল হাই স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক প্রণয় চন্দ্র দেব বলেন, ভর্তি পরীক্ষায় ৫ শত ২১ জন অংশগ্রহণ করেছিল। এর মধ্যে ৩ শত ৭৬ জন কৃতকার্য হয়েছে। অকৃতকার্য শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবন সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে তিনি কোন উত্তর দেননি। ভর্তি ফরম বিক্রি বাবদ ৬১ হাজার ৫ শত টাকার কি হবে জানতে চাইলে তিনি জানান, ভর্তি কার্যক্রমে খরচ করে যা থাকে তা স্কুল ফান্ডে রাখা হবে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ জসিম উদ্দীন বলেন, ডিএনআই মডেল হাই স্কুলটি ইতিমধ্যে জাতীয়করণের তালিকাভুক্ত হয়ে গেছে। তাই সরকারি নিয়ম অনুযায়ী কক্ষ অনুসারে যেখানে ১ শত ৮০ জন নেয়ার কথা সেখানে আমার পরামর্শ অনুযায়ী ভর্তি পরীক্ষায় কৃতকার্য ৩ শত ৭৬ জন শিক্ষার্থীকে নেয়া হয়েছে। শিক্ষাজীবন অনিশ্চিত হয়ে পড়া আড়াই শতাধিক শিক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, উপজেলায় এ ছাড়া ২২টি মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আছে। এ বছর কষ্ট করে ওই প্রতিষ্ঠানগুলোতে ভর্তি হোক। স্থানীয় সুশীল সমাজকে সাথে নিয়ে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে সদরে আরেকটি মাধ্যমিক স্কুল প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করব।


     এই বিভাগের আরো খবর