,

নবীগঞ্জে কৃষক আবুল মিয়া হত্যা মামলায় ৭ জনের ফাঁসির আদেশ ॥ প্রত্যেককে ১ লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি বাজেয়াপ্তের নির্দেশ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ নবীগঞ্জে উপজেলার দীঘলবাগ ইউনিয়নের দাউদপুর গ্রামে কৃষক আবুল মিয়া হত্যা মামলায় মহিলাসহ ৭ জনের ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আদালত। সেই সাথে প্রত্যেককে ১ লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি বাজেয়াপ্তের নির্দেশ দেয়া হয়। গতকাল বুধবার বিকেল ৩টায় হবিগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ মাফরোজা পারভীনের আদালত এ রায় দেন। রায় ঘোষণাকালে আসামীরা হাজিরা দিয়ে এজলাসে না উঠে সটকে পড়ে। দন্ডপ্রাপ্ত আসামীরা হল ওই গ্রামের মর্তুজ আলী (৬০), ফয়ছল মিয়া (৩০), ফজলু মিয়া (৩২), ময়নুল হক (২২), শিফা আক্তার (৩০), সুন্দর আলী (৪৫) ও বশির মিয়া (৩৫)। মামলার বিবরণে জানা যায়, ওই গ্রামের কৃষক মোঃ আবুল মিয়ার সাথে জমিজমা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে মর্তুজ মিয়ার বিরোধ চলছিল। এ বিরোধের জের ধরে উভয়পক্ষের মাঝে একাধিক মামলা মোকদ্দমা চলছিল। ২০০৮ সালের ২১ জুন বিকেলে আবুল মিয়ার একটি ধান ক্ষেত মর্তুজ আলীর একটি গরু খেয়ে ফেলে। নিহত আবুল মিয়া গরুটি ধরে খোয়ারে দিয়ে দেয়। এ নিয়ে মর্তুজ আলী ও আবুল মিয়ার মাঝে বাকবিতন্ডা হয়। উভয়পক্ষে সংঘর্ষের রূপ নিলে স্থানীয় লোকজনের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়। পরের দিন ২২ জুন জোয়ালভাঙ্গা হাওরে কাজ শেষে বাড়ি ফেরার পথে দাউদপুর কাকিনী ব্রীজের নিকট পৌছামাত্র পূর্ব পরিকল্পিতভাবে আসামীরা হামলা চালায়। তারা ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাকে ফিকল ও শাবল মিয়ে তাকে মারাত্মক জখম করে। তার চিৎকারে স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে নবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং পরে হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিয়ে আসে। এখানে তার অবস্থার অবনতি হলে সিলেট এমএজি
ওসমানি মেডিকেলে প্রেরণ করলে আউশকান্দি এলাকায় মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় নিহতের ছোট ভাই ছাদিক মিয়া বাদি হয়ে ২৩ জুন নবীগঞ্জ থানায় ৮ জনের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পুলিশ তদন্ত শেষে চম্পা বেগমকে বাদ দিয়ে উল্লেখিত ৭ জনের বিরুদ্ধে আদালতে তৎকালীন ওসি আলী ফরিদ ২০০৯ সালের ৩১ জুন চার্জশিট দাখিল করেন। মামলায় ২২ জন সাক্ষির মধ্যে ১৪ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে গতকাল উল্লেখিত রায় দেন। মামলার বাদি ছাদিক মিয়া জানান, রায়ে তিনি সন্তুষ্ট। সবার ফাঁসি দ্রুত কার্যকরের দাবি জানিয়েছেন তিনি। রাষ্ট্রপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর আব্দুল আহাদ ফারুক ও সালেহ উদ্দিন আহমেদ। তিনিও রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। আসামীপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন এডভোকেট খালিকুজ্জামান চৌধুরী। তিনি বলেন এ বিষয়ে আপিল করা হবে।


     এই বিভাগের আরো খবর