,

উদ্ভট কিছু অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া

সময় ডেস্ক ॥ প্রকৃতির নিয়মেই মানুষের মৃত্যু হবে আর মৃত্যু হলে তার মৃত্যু দেহের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া করা হয়। কিন্তু এই অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া কিন্তু স্থান এবং জাতী ভেদে ভিন্ন ভিন্ন হয়। আজ আপনাদের পরিচয় করিয়ে দিব ১০টি উদ্ভট অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া প্রথার সাথে। চলুন তাহলে পরিচিত হয়ে নেওয়া যাক ১০টি উদ্ভট অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সাথে, (১) ফামাদিয়েনাঃ ফামাদিয়েনা (ঋধসধফরযধহধ) প্রথা চালু মাদাগাস্কার মালাগাছি জাতি গোষ্টির মধ্যে। নিকট আত্মীয় মৃত্যবরন করার পরে সাধারন নিয়মেই কফিনে কবর দেওয়া হয়। আর কফিনের মধ্যে থাকায় দেহ মাটির সংগে না মিষে তা শুকিয়ে অনেকটা মমির আঁকার ধারন করে। কয়েক বছর পরে এই মৃত দেহ পুনঃরায় কবর থেকে বের করে তাকে গোছল করিয়ে নতুন জামাকাপড় পরিয়ে দেওয়া হয়। এসময় মৃতদেহকে ঘিরে জাকজমক পূর্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। নাচানাচি এবং গান গাওয়া হয় মৃতদেহের কাছে। এর পরে তাকে পুনঃরায় কবর দেওয়া হয়, তবে কবর দেওয়ার আগে মৃত ব্যাক্তির দেহকে নিয়ে সম্পূর্ন গ্রাম একবার প্রদক্ষিন করা হয়। মালাগাছি এই ভাবে মৃত আত্মীয়দের কথা স্মরন করে। আর এটা তাদের কাছে যেমন পবিত্র তেমনি অনেক আনন্দের। কেননা বহু বছর পরে তাদের ছেড়ে যাওয়া আত্মীয় আবার তাদের কাছে ফিরে আসে। যদিও মৃত অবস্থায়। (২) বৃক্ষ আবদ্ধঃ বৃক্ষ আবদ্ধ (ঞৎবব ইড়ঁহফ) পদ্ধতিতে অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া অনেকটাই সোজা ব্যাবস্থা। এই পদ্ধতিতে মৃত ব্যাক্তির দেহকে চটের ঝুড়ির মধ্যে ভরে, গ্রামের সব থেকে পুরাতন বৃক্ষের উপরের ডালে বেঁধে রাখা হয়। এই পদ্ধতি সাধারনত অনীশ্বরবাদীদের মধ্যে প্রচলিত। যেহেতু তারা কোন সৃষ্টি কর্তায় বিশ্বাস করে না তাই তারা মৃত দেহকে মাটিতে কবর দিতে বা পোড়ানোতে বিশ্বাস করে না। তারা নিজেদের মনের মধ্যেই আপন জনকে মনে রাখে। এছাড়াও এই ভাবে বেঁধে রাখার অন্য আরেকটি কারন আছে। এভাবে মৃত দেহ বেঁধে রাখার ফলে যেহেতু সকলে দেখতে পারে তাই সকলকে মনে করিয়ে দেয় যে মৃত্যু আসছে আর যতটুকু পার নিজের জীবনকে বেঁচে নেও। কেননা মৃত্যুর পরে আর কিছু নেই। (৩) ঝুলন্ত কফিনঃ এই পদ্ধতিতে অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার প্রক্রিয়া চালু ছিল প্রাচীন চায়নাতে। এভাবে অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া করা হত সাধারনত উঁচু বংশ বা রাজ বংশের লোকদের। আর এই অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার পক্ষে তাদের যুক্তি ছিল কিন্তু বেশ সুন্দর। এভাবে অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার ফলে যেহেতু মৃতদেহ আকাশের ধারে কাছে থাকত, তাই খুব সহজেই মৃত ব্যাক্তির আত্মা স্বর্গে যেত পারত, আর অন্যান্য অর্থাৎ নিম্নবিত্ত লোকেদের থেকে তাদের দেহ যেহেতু উপরে থাকত তাই মৃত্যুর পরেও তাদের মর্জাদা টিকে থাকত। আর যেহেতু এই কফিন গুলি অনেক দুরে জংগলে ঘেরা কোন পাহাড়ে ঝুলিয়ে রাখা হত তাই মৃত ব্যাক্তির আত্মারা অনেক পাহাড়, জঙ্গল আর মাঠ পেত ঘুড়ে বেড়ানোর জন্য। কি বলেছিলাম না এই ভাবে অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার পক্ষের যুক্তি গুলি সুন্দর ছিল। (৪) বহমরহম পদ্ধতিতে অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া করার প্রথা চালু ছিল উত্তর আমেরিকার আদিবাসিদের মধ্যে। এই পদ্ধতিতে মৃত ব্যাক্তির দেহকে গ্রাম বা শহরের কোন একটি নির্দিষ্ট বন্য স্থানে রেখে আসা হত, আর বনের মধ্যে থাকা বন্য মাংসাশী প্রানীরা এই মৃত দেহ খেয়ে ফেলত। আর এই কারনে কবর দেওয়া বা পোড়ানোর কোন ঝামেলা ছিল না তাদের। শুধু রেখে আসলেই শেষ। এই সকল আদিবাসিরা বিশ্বাস করত যেহেতু মৃত ব্যাক্তির দেহ থাকে না তাই মৃত ব্যাক্তির আত্মার আর কোন পিছুটান থাকে না, ফলে সে শান্তিতে এবং বিনা বাঁধায় স্বর্গে প্রবেশ করতে পারে। (৫) শকুনের কাছে মৃতদেহ সমার্পনঃ এটা এক অদ্ভুত প্রথা। এই প্রথা কিন্তু আমাদের পাশের দেশ ভারতে প্রচলিত। মুম্বাইয়ের পার্শি সম্প্রদায় এই প্রথায় মৃত দেহের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সম্পন্ন করে। যদিও এই প্রথার প্রচলন প্রথম শুরু করে জরথুস্ট্রীয় (তড়ৎড়ধংঃৎরধহ) ধর্মালম্বীরা। এই প্রথায় মৃত ব্যাক্তিকে প্রথমে সুন্দর ভাবে গোছল করিয়ে পরিস্কার করা হয়, এর পরে তার মৃত দেহ নিয়ে যাওয়া হয় তাদের ধর্মিয় মন্দিরে। মন্দিরের গম্বুজের উপরে মৃতদেহকে রাখা হয় যাতে মন্দিরে থাকা শকুনরা এই মৃতদেহ ভক্ষন করতে পারে। পার্শি সম্প্রদায় বিশ্বাস করে যে, মৃত ব্যাক্তির দেহ থেকে পরিত্রান পাওয়াই এক মাত্র উপায়, যে উপায়ে মৃত ব্যাক্তির আত্মা আধ্যাত্মিক রূপ ধারন করতে পারে। আর এই উপায়েই তাকে থাকতে হবে অনন্ত সময়ের জন্য। (৬) শবদাহঃ মৃত দেহ পোড়ানোর প্রথা বর্তমান আধুনিক যুগেও বহুল প্রচলিত রয়েছে। সনাতন ধর্মালম্বি বাদেও খ্রীষ্ট ধর্মালম্বিদের মাঝে এই প্রথার প্রচল দেখা যায়। এই পদ্ধতিতে কাঠ দিয়ে মঞ্চ তৈরি করে মৃত দেহকে পোড়ানো হয়। আর পোড়ানো মৃত দেহর ছাই একটি পাত্রে করে রেখে দেওয়া হয় মৃত ব্যাক্তির আত্মীয় সজনদের কাছে। অনেক ক্ষেত্রেই মৃত ব্যাক্তি জীবিত থাকা অবস্থায় তার ছাই কোথায় বিসর্জন দেওয়া হবে, সেই ইচ্ছা নিকট আত্মীয়দের কাছে বলে যান। সনাতন ধর্মালম্বিরা সাধারনত মৃত ব্যাক্তির দেহ পোড়ানো ছাই গঙ্গা নদীতে বা অন্য কোন জলাশয়ে বিসর্জন করেন। আর খ্রীষ্টিয় ধর্মালম্বিদের মধ্যে এই ইচ্ছা কিঞ্চিৎ ভিন্ন রকম হয়। যেমনঃ মহাশুন্যে বিসর্জন দেওয়া, পাহাড়ের উপর থেকে বাতাসে উড়িয়ে দেওয়া অথবা ভবিষ্যত প্রজন্মকে তার দেহ পোড়ানো ছাই সংরক্ষনে রাখতে বলা ইত্যাদি ইত্যাদি। (৭) ঝঃৎধহমঁষধঃরড়হ: ঝঃৎধহমঁষধঃরড়হ বা শ্বাস রুদ্ধ করে হত্যা করা, এই পদ্ধতি এক আজব আর অমানবিক পদ্ধতি। সতীদাহ প্রথার মত এই প্রথাও বর্তমান বিশ্বে নিষিদ্ধ ঘোষিত এক পদ্ধতি। এই পদ্ধতি প্রচলিত ছিল ফিজিতে। তারা বিশ্বাস করত কোন ব্যাক্তি মারা গেলে তার আত্মাকে যেন একা রাখা না হয়। তাই তার কাছের এবং সব থেকে প্রিয় ব্যাক্তিকেও তার কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হত, মানে তাকে শ্বাস রুদ্ধ করে হত্যা করা হত। আর এক্ষেত্রে মৃত ব্যাক্তির সব থেকে প্রিয় এবং নিকট আত্মীয় নির্বাচিত হত। ফলে মৃত্যুর পরে দু’জনে সুখে শান্তিতে থাকতে পারবে। শ্বাসরুদ্ধ করে মৃত্যু বরন করাকে সব থেকে কম কষ্টের পদ্ধতি হওয়ায় এই পদ্ধতিকে ব্যবহার করা হত। (৮) নর মাংস ভক্ষণ প্রথাঃ আরেকটি উদ্ভট এবন অমানবিক প্রথা এই নর মাংস ভক্ষণ প্রথা। কোন ব্যাক্তি মারা গেলে তার পরিবারের লোকেরা মৃত ব্যাক্তির মাংস রান্না করে তা দিয়ে উৎসব পালন করত। তারা বিশ্বাস করত এর ফলে মৃত ব্যাক্তির আত্মা আমৃত্যু পর্যন্ত তাদের সাথেই থাকবে। এই পদ্ধতি চালু ছিল গিনি এবং ব্রাজিলের বিভিন্ন অঞ্চলে। বিশেষজ্ঞদের মতে যে জাতী গোষ্টি বনে জঙ্গলে বসবাস করত আর তাদের খাওয়ার মত শাক সবজি বলতে কিছুই থাকত না তাদের মধ্যে এই প্রথার বহুল প্রচলন ছিল। (৯) আকাশ সমাধি ঃ মৃত্যুর পর তিন দিন কেউ মৃতদেহকে স্পর্শ করে না। বৌদ্ধ ভিক্ষুরা মৃতদেহের চারপাশে ঘুরে ঘুরে ধর্মীয় বাণী পাঠ করতে থাকেন। আকাশ সমাধির আগের দিন মৃতদেহকে পরিষ্কার করা হয় ও সাদা কাপড়ে মুড়ে দেয়া হয়। এরপর মৃতদেহকে এমনভাবে রাখা হয় ঠিক যেমন মায়ের গর্ভে শিশুর ভ্রূণ অবস্থান করে। এ শেষকৃত্য অনুষ্ঠান ভোর শুরু হওয়ার সাথে সাথে শুরু হয়। শবযাত্রাকে নেতৃত্ব দেন বৌদ্ধ লামারা। পড়তে থাকেন ধর্মীয় বাণী, যা আত্মাকে পথ দেখায়। তিব্বতে বেশ কিছু সমাধিক্ষেত্র আছে, যেগুলো বিভিন্ন বৌদ্ধ মঠের সাথে থাকে। সাধারণভাবে এসব জায়গায় কেউ তেমন একটা যায় না। শেষকৃত্য অনুষ্ঠানস্থলে পৌঁছানোর পর শববাহকরা মৃতদেহের উপর জড়ানো সাদা কাপড় খুলে ফেলেন। এরপর মৃতদেহটিকে পেছন দিক কুঠার ও কাটারি থেকে কেটে ফেলা হয়। এভাবে খুব ভালোভাবে মৃতদেহটিকে টুকরো টুকরো করে কাটা হয়। আর দেহের হাড়গুলোকে করা হয় চূর্ণ-বিচূর্ণ। এরপর মাংসের টুকরো ছড়িয়ে দেয়া হয়, যেন শকুনরা তা খেতে পারে। তবে পুরো মৃতদেহ টুকরো করার আগ পর্যন্ত শকুনদেরকে ঘেঁষতে দেয়া হয় না। এরপর সবাই সরে গেলে শকুনরা ঝাঁপিয়ে পড়ে টুকরোগুলোর উপর। খাওয়া শেষ হয়ে গেলে হাড়ের টুকরো গুলো পড়ে থাকে মাটির এখানে সেখানে। তবে মৃতের আত্মীয়-পরিবার পরিজন বাদে এ দৃশ্য আর কাউকে দেখার অনুমতি দেয়া হয় না। ছবি তোলা নিষেধ, কারণ তিব্বতিরা মনে করে এতে মৃতের বিদেহী আত্মার কষ্ট হবে। (১০) সীতাদাহ প্রথাঃ এই প্রথার সব থেকে বেশি প্রচলন ছিল সনাতন ধর্মালম্বিদের মধ্যে, এছাড়াও আরো কিছু জাতি গোষ্ঠির মধ্যে এই প্রথার প্রচলন ছিল। এই প্রথায়, কোন ব্যাক্তি যদি মারা যেত তাহলে তার বিধবা স্ত্রীকে বাধ্য করা হত তার মৃত স্বামীর মৃত দেহর সাথে নিজেকে পুড়িয়ে মারতে। যদিও বর্তমানে এই প্রথার প্রচলন আর নেই, আর এই প্রথা কে বন্ধো করেছিলেন জানেন কি? এই প্রথা বন্ধের প্রথম দাবি তোলেন ঈশ্বর চন্দ্র বিদ্যাসাগর। আর আমার যদি ভুল না হয়ে থাকে তাহলে উনি সর্বপ্রথম কোন হিন্দু যিনি তার ছেলেকে বিধবার সাথে বিয়ে দিয়েছিলেন। বর্তমানে এই প্রথা নিষিদ্ধ হলেও ভারতের গ্রাম অঞ্চলে মাঝে মধ্যে একটি দু’টি সতিদাহর ঘটনার কথা আজও শোনা যায়। বিষেশজ্ঞরা মনে করেন, মূলত এই প্রথা চালু হবার কারন ছিল বিধবাকে দেখার কেউ থাকত না, আর একা একা কোন নারীর অধিকার নেই বেঁচে থাকার এই চিন্তা ধারার জন্য অথবা মৃত ব্যাক্তির সম্পত্তির লোভে নিকট আত্মীয়রা বেশি আগ্রহী ছিল। যা হোক বর্তমানে এই প্রথা আর চালু নেই, তা না হলে ভারতে নারীদের যে কি অবস্থা হত তা একমাত্র আল্লাহই জানেন।৩শেষ মুহূতের্র গোলে সর্বনাশসময় ডেস্ক ॥ পরাজয়ের এ কষ্ট কোথায় রাখবেন রায়হান-নাসিররা। মালয়েশিয়ার বিপক্ষে বঙ্গবন্ধু কাপের ফাইনালে হারের পর হতাশ-বিমর্ষ বাংলাদেশ-শিবির। প্রথমার্ধে ২-০ ব্যবধানে পিছিয়ে পড়ে ও দ্বিতীয়ার্ধে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়ায় বাংলাদেশ। ৯০ মিনিটেও স্কোরলাইন ২-২। কিন্তু ৯১ মিনিটেই বাংলাদেশের স্বপ্নের সলিল সমাধি! দারুণ এক হেডে জয়সূচক গোল করেই ছুটলেন মালয়েশিয়ার ফাইজাত। বিষাদের ছায়া নেমে এল বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম থেকে গোটা বাংলাদেশে। দর্শকদের যে গর্জনে কান পাতা দায় ছিল, সেটাই ‘এ কী হলো’র বিমূঢ়তায় স্তব্ধ! প্রথমবারের মতো বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপে ফাইনালে উঠেও মামুনুলদের ছুঁয়ে দেখা হলো না আরাধ্য ট্রফিটি। সোনার যে ট্রফিটা হতে পারত বাংলাদেশের ফুটবলের সোনালি দিন ফিরে আসার দারুণ এক উপলক্ষ। ফাইনালটা ৩-২ গোলে জিতল মালয়েশিয়া। প্রথমার্ধে সেমিফাইনালের সেই দুরন্ত বাংলাদেশকে ঠিক পাওয়া গেল না। স্নায়ুচাপ বেশ জেঁকে বসল মামুনুলের দলের ওপর। জড়তা কাটতেই সময় লেগে গেল অনেক। অবশ্য এলোপাতাড়ি ফুটবল খেলেছে মালয়েশিয়াও। অগোছালো ফুটবলের মধ্যেই ৩১ মিনিটে অসাধারণ এক ফ্রিকিকে মালয়েশিয়াকে প্রথম এগিয়ে দেন নাজিরুল নাইম। ৪০ মিনিটে প্রতি আক্রমণে মালয়েশিয়ার ব্যবধান দ্বিগুণ করেন কুমারন। আলগা রক্ষণ, ছন্নছাড়া মধ্যভাগ আর ভোঁতা আক্রমণ প্রথমার্ধে বাংলাদেশ ছিল ভীষণ ছন্নছাড়া! তবে দ্বিতীয়ার্ধে বাংলাদেশকে দেখা গেল অন্য চেহারায। দুর্দান্তভাবে ম্যাচে ফিরল লাল-সবুজের দল। মাত্র পাঁচ মিনিটে অবিশ্বাস্যভাবে ঘুরে দাঁড়াল মামুনুলরা। ৪৯ মিনিটে বাংলাদেশের প্রথম গোল করেন জাহিদ হোসেন এমিলি আর ৫৪ মিনিটে ইয়াসিনের দুর্দান্ত হেড সমতায় ফেরায় বাংলাদেশকে। প্রথমটি রায়হানের লম্বা থ্রো থেকে বক্সে ফেলা বলে। সেমিফাইনালের নায়ক নাসির উদ্দিন হেড করলে তা ফিরিয়ে দেন মালয়েশিয়ান গোলরক্ষক। ফিরতি শটে জালে বল জড়ান এমিলি। ফাইনালে এসে টুর্নামেন্টে প্রথম গোলের দেখা পেলেন বাংলাদেশ স্ট্রাইকার। দ্বিতীয় গোলটি আসে মামুনুলের কর্নার থেকে। বেশ কয়েক ফুট ওপরে লাফিয়ে জোরালো হেড করেন ইয়াসিন। ফাইনালের মতো তুমুল স্নায়ুুচাপের ম্যাচে প্রথমার্ধেই ২-০ গোলে পিছিয়ে পড়ার পর এভাবে ঘুরে দাড়ানো অবিশ্বাস্য তো বটেই! দর্শকদের আক্ষেপটা এখানেই, দারুণভাবে ঘুরে দাড়ানোর পরও কেন ম্যাচটা হাত থেকে ফসকে গেল ৭ মিনিটে চোটের কারণে মাঠ থেকে উঠে যান ফরোয়ার্ড জাহিদ। এ ছাড়া চোটের কারণে মাঠে অনুপস্থিত ছিলেন দলকে সেমিফাইনালে তোলা হেমন্ত বিশ্বাসও। দু’জনের অনুপস্থিতি ভালোভাবেই অনুভব করেছে বাংলাদেশ। তবে রায়হানের দুরন্ত সব লম্বা থ্রো, মামুনুলের কর্নার, জামাল ভুঁইয়ার স্কিল যেমন মুগ্ধতা ছড়িয়েছে তেমনি কিছু সুযোগ হাতছাড়ার আক্ষেপও অনেক দিন তাড়া করবে বাংলাদেশের। রানার্সআপ হলেও এ টুর্নামেন্টে বাংলাদেশের প্রাপ্তি নেহাত কম নয়। বহুদিন পর গ্যালারিতে দেখা গেল দর্শকের জোয়ার। দেশের রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে মানুষ কিছুটা স্বস্তি খুঁজে পেয়েছিল ফুটবলে। টুর্নামেন্টটা জিততে পারলে প্রাপ্তির ষোলকলা পূর্ণ হতো; মানুষ এ বৈরী সময়ে পেত আনন্দের ছোঁয়া। আফসোস, তুলির শেষ আঁচড়টা সময় মতো দিতে পারলেন না মামুনুল-এমিলিরা!


     এই বিভাগের আরো খবর