,

নবীগঞ্জ যোগল-কিশোর উচ্চ বিদ্যালয়ের শতবর্ষ পূর্তি ও আমাদের প্রত্যাশা……রতœদীপ দাস (রাজু)

মানব জীবনে কিছু কিছু সময় আসে কালের সাী হয়ে থাকার এক নতুন পটভূমি রচনার অংশিদার হওয়ার। যে পটভূমি ব্যক্তি ও সমাজ জীবনে স্মরনীয় হয়ে থাকে। তেমনি আমাদের সামনে আসছে নবীগঞ্জ যোগল-কিশোর উচ্চ বিদ্যালয়ের শতবর্ষ পূতি উদ্যাপন করার এক ঐতিহাসিক সুযোগ। ১৯১৬ সালে নবীগঞ্জ থানার আদিত্যপুর গ্রামের শিক্ষানুরাগী সহোদর দশরথ দে ও প্রকাশ দে তাঁদের পিতা যোগল চন্দ্র দে ও কাকা কিশোর চন্দ্র দে’র নামানুসারে নবীগঞ্জ যোগল-কিশোর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রতিষ্টা করেছিলেন। প্রতিষ্ঠার অল্প সময়ের মধ্যেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি তৎকালীন আসাম প্রদেশের শ্রীহট্ট জেলার এক ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে রূপলাভ করে। শুধু নবীগঞ্জেরই নয়, দিরাই, জগন্নাথপুর, বানিয়াচং, আজমিরীগঞ্জের শিক্ষার্থীদের পদচারনায় মূখরিত হতো উচ্চ বিদ্যালয়টি। প্রাচীন এ বিদ্যাপীঠ থেকে জন্ম হয়েছে অনেক প্রতিভাবান গুনীজনের। শিক্ষক, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক ব্যাক্তিত্ব সহ বিভিন্ন পেশাজীবিদের। যাঁরা শুধুমাত্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গৌরব বৃদ্ধি করেননি, সমৃদ্ধ করেছেন দেশ ও জাতিকে। খ্যাতিলাভ করেছেন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে। তাঁদের অনেকেই আজ আমাদের মাঝে নাই। তাঁদেরকে শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি। স্মরণ করছি তাঁদেরও, যাঁরা শুরু থেকে উচ্চ বিদ্যালয়েক্ষর শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির দায়িত্ব অতি দক্ষতার সাথে পালন করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটিকে পরিচালনা করছেন। যাঁরা জীবিত রয়েছেন তাঁদের কাছে আশাপ্রকাশ করব, আগামী ২০১৬ সালে শতবর্ষ পূর্তি উদযাপনকে সামনে রেখে প্রাক্তন ছাত্রদের (যাঁরা প্রবাশে রয়েছেন তাঁদেরকেও) সুসংঘটিত করে প্রবীণের অভিজ্ঞতা ও নবীনের তারুন্যের সমন্বয়ে একটি গ্রহনযোগ্য ও সুশৃঙ্খল কমিটি গঠনের। কারন একটি শক্তিশালী কমিটিই পারে ঐতিহাসিক এই অনুষ্ঠানকে সাফল্যমন্ডিত করে জাতীয় পর্যায়ে এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও এই অঞ্চলের খ্যাতি তুলে ধরতে। এর লক্ষ্যে এখন থেকেই কাজ করতে হবে, এর দায়িত্ব আমাদের সবার। আমার দৃড় বিশ্বাস অত্র উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রত্যেক শিক্ষার্থীদের মনেই প্রতিষ্ঠানটিকে ঘিরে আবেগ, অনুভূতি ও স্বপ্ন আঁকা রয়েছে। যে আবেগ মুছা যায় না, স্বপ্নের জাল বৃহৎ থেকে বৃহত্তম হয়ে উঠে দিনের পর দিন অনুভূতি গাঢ় থেকে গাঢ় হয়ে যায় মনের গভীরতর প্রদেশে। আমাদের সৌভাগ্য যে, আমরা আমাদের স্বপ্ন ঘেরা নবীগঞ্জ জে.কে উচ্চ বিদ্যালয়ের শতবর্ষ উদ্যাপনের সুযোগ পাচ্ছি। যে সুযোগ অতীতে অনেকে পাননি, ভবিষ্যতেও অনেকেই পাবেন না। কারণ আরেকটি শতবর্ষ আসতে আরও একশত বছর লাগবে। আর বাঙ্গালিদের গড় আয়ূতে তা অনেকেই উদ্যাপন করা সম্ভব হবে না। তাই শতবর্ষ পূর্তি অনুষ্ঠানকে সফল করতে জীবিত প্রাক্তন ও বর্তমান সকল শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ একান্ত দায়িত্ব। শতবর্ষ পূর্তি এই অনুষ্ঠানকে আরো স্মরনীয় ও অর্থবহ করতে বর্তমান শিক্ষা বান্ধব সরকারকে উচ্চ বিদ্যালয়ের সকল শিক্ষার্থীদের পক্ষে বিনীত আবেদন জানাব সরকারি করণের। বর্তমান শিমন্ত্রী শ্রদ্ধেয় নূরুল ইসলাম নাহিদ একজন সফল শিক্ষামন্ত্রী এবং একজন সজ্জন ও আলোকিত মানুষ হিসাবে আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে সমাদৃত। আমরা আশাকরব হাজার হাজার শিক্ষার্থীদের আবেগময় ও শ্রদ্ধার স্থল এই প্রতিষ্ঠানটির প্রতি তাঁর সুনজর পড়বে। পরিশেষে আগামী শতবর্ষ পূর্তি অনুষ্ঠানে কার্যাক্রমে গতিশীল তার আশা করিব এবং প্রত্যাশাকরি আজকের মূল্যবোধহীন সমাজে দশরথ দে ও প্রকাশ দে’র মতো সজ্জন ও আলোকিত ব্যক্তিদের জীবনী পাঠ তরুন সমাজের কর্তব্য, যা আমাদের আলোর পথ দেখাবে। শতবর্ষ পূর্তি অনুষ্ঠানটি আমি তাঁদের পূণ্য স্মৃতির উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করার জন্য কর্তৃপক্ষের কাছে দাবী জানাচ্ছি এবং উচ্চ বিদ্যালয়ে যোগল-কিশোর এর ভাষ্কর্য নির্মানের আবেদন জানাচ্ছি। ঐতিহ্যের প্রতীক এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে আরো দশরথ দে ও প্রকাশ দে’র মতো শিক্ষানুরাগী ও আলোকিত কর্মবীর জন্ম নিয়ে দেশ ও জাতিকে সমৃদ্ধ করুক, এই হোক আমাদের প্রত্যাশা।


     এই বিভাগের আরো খবর