,

হবিগঞ্জে জরুরি ফি দিয়ে দুই মাসেও মিলছে না পাসপোর্ট

স্টাফ রিপোর্টার ॥ মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট (এমআরপি) যেন সোনার হরিণ। অতিরিক্ত জরুরি ফি দিয়ে দুই মাসেও মিলছে না পাসপোর্ট। হবিগঞ্জের পাসপোর্ট অফিসে পাসপোর্ট পেতে রীতিমতো হাহাকার চলছে। পাসপোর্ট অফিস ঘুরে দেখা যায়, অতি জরুরি ফি দিয়েও ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। তাদের প্রতিদিনই অপেক্ষায় থাকতে হয় কখন হাতে পাবেন পাসপোর্ট। কিন্তু বেঁধে দেয়া নির্দিষ্ট সময় পার হয়ে যাওয়ার পরও তা পাচ্ছেন না আবেদনকারীরা। কয়েক জন আবেদনকারী জানান, ৩০ দিনের মধ্যে যে পাসপোর্ট পাওয়ার কথা সেটা হাতে পাচ্ছেন দুই মাসের মাথায়। কারো কারো ক্ষেত্রে সময় এর চেয়েও বেশি লেগে যাচ্ছে। শায়েস্তাগঞ্জ পৌরসভার চরনূর আহমদ গ্রামের আবিদা খাতুন ওমরা হজ্ব পালনের জন্য প্রায় দুই মাস আগে মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট (এমআরপি) এর জন্য আবেদন করেছিলেন। সাধারণ পাসপোর্ট এক মাসের মধ্যে পাওয়ার কথা। অথচ দুই মাসেও পাসপোর্ট পাননি আবিদা খাতুন। শুধু এই একজনই নয়, পাসপোর্টের জন্য হবিগঞ্জে কয়েক শ’ মানুষ এখন হাহাকার করছেন। হবিগঞ্জ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস সূত্র জানায়, মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট (এমআরপি) বইয়ের সংকট থাকায় আবেদনকারীদের যথাসময়ে পাসপোর্ট সরবরাহ করা সম্ভব হচ্ছে না। এ সমস্যা শুধু হবিগঞ্জেই নয়, সারাদেশেই বিরাজ করছে। সূত্র জানায়, বর্তমানে দেশে পর্যাপ্ত পরিমাণ পাসপোর্ট বই নেই। পাসপোর্ট বইয়ের সংকট থাকায় গত প্রায় মাস তিনেক ধরে হবিগঞ্জে ভোগান্তী পোহাচ্ছেন আবেদনকারীরা। আবেদন করে নির্ধারিত সময় পেরিয়ে গেলেও হাতে আসছে না কাঙ্খিত পাসপোর্টটি। নির্ধারিত সময়ে পাসপোর্ট না পাওয়ায় অনেকের বিদেশযাত্রাও বাধাগ্রস্থ হচ্ছে। এদের কেউ কেউ কাজের জন্য বিদেশগামী, কেউ আবার উচ্চশিক্ষার্থে বিদেশগামী। অনেকেই চিকিৎসার জন্য বিদেশ যেতে পাসপোর্ট তৈরীর আবেদন করে দীর্ঘ অপেক্ষায় পড়েছেন। বানিয়াচঙ্গের নতুন বাজার এলাকার ব্যবসায়ী উবায়দুল্লাহ মাসুদ বলেন, আমার ভাইকে বিদেশ পাঠাতে তার পাসপোর্টের আবেদন করেছিলাম প্রায় আড়াই মাস আগে। দালালের মাধ্যমে পাসপোর্ট করতে গিয়ে তিনি বলছিলেন এক মাসের মধ্যেই পাসপোর্ট পেয়ে যাব। সাড়ে পাঁচ হাজার টাকা খরচ করে নির্ধারিত সময়ের দেড় মাস পেরিয়ে গেলেও এখনো পাইনি পাসপোর্ট। পাসপোর্ট আবেদনকারীরা বলছেন, সাধারণ পাসপোর্ট পেতে যেখানে সর্বোচ্চ এক মাস সময় লাগার কথা, সেখানে দুই-আড়াই মাসেও মিলছে না। আর জরুরী (আর্জেন্ট) পাসপোর্ট এক সপ্তাহের মধ্যে পাওয়া কথা থাকলেও সেটিতে তিন-চার সপ্তাহ লেগে যাচ্ছে। আবেদনকারী কয়েকজন জানান, ডেলিভারির নির্ধারিত তারিখে তারা পাসপোর্ট অফিসে গিয়েও তা হাতে পাননি। অফিস থেকে পাসপোর্ট পেতে দেরি হবে বলে জানানো হয়েছে। পাসপোর্ট অফিসের একটি সূত্র জানিয়েছে, পাসপোর্ট বই সংকট কাটানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। জরুরী ভিত্তিতে ইংল্যান্ড থেকে পঞ্চাশ লাখ পাসপোর্ট বই ছাপিয়ে আনা হচ্ছে। তন্মধ্যে দশ লাখ বই ইতিমধ্যেই বাংলাদেশের পথে রয়েছে। এসব বই পৌঁছানোর পর চলমান সংকট কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হবে। এ ব্যাপারে হবিগঞ্জ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের সহকারি পরিচালক সালাহ উদ্দিন বলছেন, ‘পাসপোর্ট আবেদন পাওয়ার পর প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে সাত-আট দিনের মধ্যে ঢাকায় পাঠিয়ে দেয়া হয়। ঢাকা থেকে পাসপোর্ট বই এলে আমরা তা আবেদনকারীর হাতে পৌঁছে দেই। ঢাকা থেকে বই আসতে দেরি হলে হবিগঞ্জ অফিসের কিছু করার থাকে না।’ তবে পাসপোর্ট আসতে ‘কিছুটা দেরি’ হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।


     এই বিভাগের আরো খবর