,

বাড়ি-গাড়ির স্বপ্ন দেখিয়ে ধোকা দিয়ে বোকা বানিয়ে গ্রাহকদের করেছে নিঃস্ব, নবীগঞ্জে হায় হায় কোম্পানী ‘আপনজন’ এর ফাঁদে পড়ে অনেকেই প্রতারিত হচ্ছেন

শাহ সুলতান আহমেদ ॥ নবীগঞ্জ উপজেলায় সবার জন্য শিক্ষা। এই শ্লোগানকে সামনে নিয়ে আপনজন ইন্টারন্যাশনাল এম.এল.এম কোম্পানীর নামে সমাজের সহজ-সরল লোকদের ধোকা দিয়ে বোকা বানিয়ে কয়েক লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ উঠেছে সহায় সম্পত্তি বিক্রি করে গ্রাহক হয়ে অনেকে এখন নিঃস্ব হয়েছেন। এমনকি বাড়ি-গাড়ি গড়ার স্বপ্ন দেখিয়ে তাদের গ্রাহক করা হয়েছে। ভুক্তভোগীগণ অভিযোগ করেন, ওই কোম্পানীর হাল ধরে আছেন ওই উপজেলার কুর্শি ইউনিয়নের এনাতাবাদ গ্রামের মোঃ কাছন মিয়ার পুত্র মোঃ ফরিদ উদ্দিন এবং তার সাথে বানিয়াচং উপজেলার বড়ইউড়ি ইউনিয়নের গুনই গ্রামের বর্তমানে নবীগঞ্জ শহরতলীর রুদ্র গ্রাম রোডস্থ মুজিব এন্ড ব্রাদার্স এর মালিক মোঃ আব্দুল আউয়াল মিয়ার পুত্র মোঃ রাবেল মিয়া। হবিগঞ্জ শহরের ফারইষ্ট ইসলামী লাইফ ইন্সুরেন্স এর ইনচার্জ মোঃ শরিফ উদ্দিন, সিলেট জেলার গোলাপগঞ্জ উপজেলার মসকাপুর গ্রামের মোঃ সাইফুল আলমের পুত্র মোঃ খালেদ মিয়া। তারা এভাবে গ্রাহক করেছেন যে, আপনজন ইন্টারন্যাশনাল কোম্পানীতে কাজ করলে কোন চাকুরির প্রয়োজন হবে না। প্রতি মাসে ২০ হাজার থেকে সর্বোচ্চ লক্ষ টাকা আয় করা সম্ভব এবং এমনও হতে পারে দৈনিক ৫ হাজার টাকা আয় ও অবশেষে ওই কোম্পানীর মালিক বানিয়ে দেয়া হবে মর্মে গ্রাহকদের কাছ থেকে টাকা আদায় করা হয়। তাদের কথা বিশ্বাস করে সহজ-সরল লোকজন নগদ টাকা বা পন্য ক্রয়ের মাধ্যমে গ্রাহক হয়েছেন। এখন কোন গ্রাহক ফোন দিলে তারা ফোন রিসিভ করেননি। বরং তাদের সাথে টালবাহানা করা হচ্ছে। তাদের খপ্পরে পড়ে যারা ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন তাদের মধ্যে-করগাঁও ইউপি যুবলীগের আহবায়ক আব্দুল কদ্দুছ সাগর মিয়ার তার কাছ থেকে নেয়া হয়েছে ৪২ হাজার টাকা, কাজীগঞ্জ বাজারের ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আনোয়ার হোসেন (মেম্বার) তার কাছ থেকে নেয়া হয়েছে ৪২ হাজার টাকা। নবীগঞ্জ বাজারের ব্যবসায়ী এস.এম ক্লথ ষ্টোর এর মোঃ রেজাউল করিম মানিক তার কাছ থেকে নেয়া হয়েছে ৫০ হাজার টাকা। ইনাতগঞ্জ ইউনিয়নের ঘোলডুবা গ্রামের মোঃ জামেউল আলম এর কাছ থেকে নেয়া হয়েছে ৪২ হাজার টাকা ওই গ্রামের খোকন মিয়ার কাছ থেকে নেয়া হয়েছে ৪২ হাজার টাকা, নবীগঞ্জ পৌর এলাকার সালামতপুর গ্রামের নিলুফা বেগম এর কাছ থেকে নেয়া হয়েছে ২০ হাজার টাকা। বাউসা ইউনিয়নের বাউসা গ্রামের মোঃ নুর উদ্দিনের কাছ থেকে নেয়া হয়েছে ২০ হাজার টাকা,  ইনাতগঞ্জ ইউনিয়নের মোস্তফাপুর মাদ্রাসার শিক্ষক মোঃ রফিকুল ইসলামের কাছ থেকে নেয়া হয়েছে ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা। বাউসা ইউনিয়নের নিজ চৌকি গ্রামের আব্দুল শুকুর মিয়ার পুত্র সাইদুল হক এর কাছ থেকে নেয়া হয়েছে ১ লক্ষ ৩৫ হাজার টাকা। শুধু তারা নন, এদের মতো আরো অনেকের কাছ থেকে কয়েখ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয়া হয়েছে আপনজন ইন্টারন্যাশনাল কোম্পানীর লোকজন। অনেকে মনে করেন-দেশের প্রশাসন তাদের বিরুদ্ধে অবস্থান না নিলে এদের দমানো সম্ভব হবে না। উল্লেখ্য যে, বিভিন্ন সভা সেমিনারে গ্রাহকদের কোম্পানীর এমডির নাম জিলানি খন্দকার এবং চেয়ারম্যান মেহদি হাসান প্রধান এবং প্রধান অফিসের ঠিকানা  ইস্টার্ণ কমপ্লেক্্র-৬৪-৬৮ নর্থ কমলাপুর ২য় তলা, কক্ষ নং ২২২ মতিঝিল ঢাকা-১০০। এই পরিচিতি গ্রাহকদের জানিয়ে দেওয়া হয়ছে বলে ভুক্তভোগীগণ জানান। এদিকে, অভিযোগের প্রেক্ষিতে এনাতাবাদ গ্রামের মোঃ কাছন মিয়ার পুত্র মোঃ ফরিদ উদ্দিন এর সাথে যোগাযোগ করা হলে বলেন, তিনিও এই আপনজন কোম্পানীর একজন গ্রাহক, প্রত্যেক ইউনিয়নে তাদের লোক আছে। তার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উঠেছে তা সম্পূর্ন ষড়যন্ত্র। এ ব্যাপারে মোঃ রাবেল মিয়ার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন একটি কুচক্রি মহল সম্পূর্ন ভিত্তিহীন ভাবে এগুলি প্রকাশ করে আসছে। এগুলি সম্পূর্ন ষড়যন্ত্রমূলক।


     এই বিভাগের আরো খবর