,

আনন্দ স্কুলের নামে নিরানন্দ, নবীগঞ্জে আনন্দ স্কুলের টিসি ও তার সহযোগীর বিরুদ্ধে শিক্ষক ও ছাত্র/ছাত্রীর টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

শাহ্ সুলতান আহমেদ ॥ নবীগঞ্জ উপজেলায় রস্ক ফেইজ-২ প্রকল্প (আনন্দ) স্কুলের  দায়িত্ব থাকা টিসি, তার সহযোগী ও সংশ্লিষ্ট ব্যাংক কর্মকর্তার যোগসাজসে অবৈধ উপায়ে শিক্ষক ও ছাত্র/ছাত্রীদের টাকা আত্মসাত করায় ওই প্রকল্পের শিক্ষকগণ এর প্রতিকার চেয়ে প্রকল্প পরিচালকসহ রস্কের অতিরিক্তি প্রকল্প পরিচালক, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা শিক্ষা অফিসার এর কাছে গত ৩১ মে অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী শিক্ষক ও শিক্ষিকাগণ। অভিযোগে জানা যায়, রস্ক ফেইজ-২ প্রকল্পের অধীনে বিগত ২০১৪ সাল থেকে হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জ উপজেলার ৩৫ টি স্কুলে ৬ শত ২৫ জন শিক্ষার্থী লেখা পড়া করে যাচ্ছেন। এসব স্কুলের টিসির দায়িত্ব পালন করছেন রজব আলী। তিনি দায়িত্ব পাবার পর শুরু করেন অবৈধ পন্তায় বাড়তি আয়। এরই মধ্যে ওই সকল স্কুলের শিক্ষক ও শিক্ষিকাদের কাছ থেকে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ এনে বাড়তি ফাঁয়দা হাসিলে ব্যস্ত থাকেন। চলতি বছরের এসব প্রতিষ্টানে শিক্ষার্থীদের শিক্ষা ভাতা এসেছে। এতে জনপ্রতি ছাত্র/ছাত্রীর নামে টাকা এসেছে ৭ শত ২০ টাকা। টিসি রজব আলী তাদের দিয়েছেন ৫ শত ২০ টাকা করে। এতে তিনি পকেটস্থ করেছেন ১ লক্ষ ২৫ হাজার টাকা। অপরদিকে ওই সব স্কুলে ৭০ জন ছাত্র/ছাত্রী অনুপস্থিত ছিল। তাদের অভিভাবকদের সেই টাকা না দিয়ে তিনি বাড়তি ৫০ হাজার ৪ শত টাকা পকেটস্থ করেছেন। শিক্ষার্থীদের পোশাক বাবত এসেছে জনপ্রতি ৫ শত টাকা । এতেও তিনি চল-চাতুরী করে আরো ৩ লক্ষ ১২ হাজার ৫ শত টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। শিক্ষকদের সম্মানী ভাতা, শিক্ষা উপকরন, পরীক্ষার ফি উত্তোলনের জন্য শিক্ষকদের নিকট থেকে ৩ টি করে স্বাক্ষরে চেক গ্রহন করেন। পরে তিনি শিক্ষকদের একটি করে চেক ফেরত দিয়েছেন। শিক্ষকদের তাদের ভাতা উত্তোলন করার একটি চেক দিয়ে অবশিষ্ট দুটি স্বাক্ষর করা চেক তার কাছে রেখেছেন। একটি চেক দিয়ে শিক্ষা উপকরনের টাকা অভিনয় দাশ নামের লোক নিজে স্বাক্ষর করে ব্যাংক থেকে টাকা তুলেছেন। যা সংশ্লিষ্ট ব্যাংকে অনুসন্ধান করলে প্রমান পাওয়া যাবে বলে অভিযোগে উল্লেখ করেন ভুক্তভূগীরা। উপকরণ ও পরীক্ষার ফি বাবত ১ লক্ষ ৫৬ হাজার ২ শত ৫০ টাকা তুলে নিয়েছেন। সব মিলিয়ে টিসি রজব আলী ও তার সহযোগী অভিনয় চন্দ্র দাস আত্মসাত করেছেন। এমন কি তাদের সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তারাও সহযোগীতা করছেন। এ ছাড়া বর্তমানে তিনি অবশিষ্ট একটি চেক দিয়ে জি,পি এস শিক্ষকদের সম্মানী তুলে নেয়ার অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছেন বলেও অভিযোগে রয়েছে। আনন্দ স্কুলের  শিক্ষক/শিক্ষিকারা অত্যান্ত অবহেলিত শ্রেনীর শিক্ষার্থীদের পাঠদান করাচ্ছেন। তাদের গরীব বাবা-মা, সন্তানদের বয়স একটু বেশী হওয়ায় তাদের পরিবারকে নানান কাজে সহযোগীতা করতে হয়। এই সমস্ত বাচ্চাদের টাকা যখন টিসি নিয়ে যান, অবশেষে বাচ্চাদের টাকা কোথায় গেল এমন প্রশ্নের উত্তর দিতে শিক্ষক/শিক্ষিকাগণ হিমশিম খাচ্ছেন অভিভাবকদের কাছে। কেন তাদের টাকা কেটে নেয়া হল এই পরিস্থিতিতে এখন ছাত্র/ ছাত্রীদের  স্কুলে ধরে রাখা কঠিন হচ্ছে। এ ছাড়াও টিসি রজব আলী চার জন বদলী শিক্ষকদের তাদের সম্মানী থেকে জনপ্রতি ২ হাজার টাকা নিয়েছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। এমনকি তিনি অতিরিক্ত দায়িত্ব প্রাপ্ত বলে নবীগঞ্জে কাজ না করে তার অনুগত ভুয়া শিক্ষক অভিনয় চন্দ্র দাশকে দিয়ে কাজ করাচ্ছেন। বিগত দিনে শিক্ষকরা এই সব বিষয়ে কথা বললে তাদের সাথেও অকথ্য ভাষায় গালি-গালাজসহ বরখাস্ত করার হুমকি দিয়েছেন তিনি। এমনকি তার পিতার সমতুল্য  তিন জন পুল শিক্ষকদের সাথে অত্যান্ত খারাপ ভাষায় ব্যবহার করেছেন । সব মিলিয়ে টিসি রজব আলী ও তার সাথে থাকা ভুয়া শিক্ষক অভিনয় চন্দ্র দাশ এর দুর্নীতির ব্যাপারে তদন্ত পুর্বক ব্যবস্থা গ্রহন এবং ওই উপজেলার রস্কের(আনন্দ) স্কুলের অধ্যয়নরত ৬ শত ২৫জন শিক্ষার্থীদের শিক্ষা জীবন রক্ষার জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরের দায়িত্বশীল কর্মতাদের সুদৃষ্টি রাখার আবেদন জানিয়েছেন সমাজের সচেতন মহল। অনেকে বলছেন ওই টিসি রজব আলী ও তার সহযোগী ভুয়া শিক্ষক অভিনয় চন্দ্র দাশ এর খুঁটির জোড় কোথায়?


     এই বিভাগের আরো খবর