,

নবীগঞ্জে ছাত্র-ছাত্রীরা জীবন গড়ছে নোট-গাইড পড়ে

সরকারী বইয়ের চেয়ে নোট-গাইড বইয়ের সয়লাভ

শাহ সুলতান আহমেদ ॥ প্রাইমারি স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের সৃজনশীল পদ্ধতিতে পাঠদান করার আদেশ থাকলে ও এখনো অনেক শিক্ষক/শিক্ষিকা ছাত্র-ছাত্রীদের নোট ও গাইড বই পড়ার তাগিদ দিচ্ছেন। অনেকে পাঠ্যবই রেখে শুধুই বিভিন্ন প্রকাশনার নোট-গাইড বই পড়াচ্ছেন এবং পড়তে বলছেন। কোমলমতি ছাত্র-ছাত্রীরা সরকারের দেয়া স্কুলের পাঠ্য বই বাড়িতে রেখে নিজ নিজ ক্লাসে নোট ও গাইড বই আনার অভিযোগ রয়েছে দীর্ঘদিন যাবত। নবীগঞ্জ উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে বিভিন্ন প্রাইমারি স্কুলেঅধ্যয়নরত ছাত্র-ছাত্রীর অভিভাবক ও সচেতন মহল এমন অভিযোগ করছেন। তারা দেখছেন দীর্ঘদিন যাবত কোমলমতি ছাত্র-ছাত্রীরা শিক্ষকদের তাগিদে লাইব্রেরী থেকে নোট ও গাইড বই ক্রয় করছেন। তার সাথে এক শ্রেনীর অসাধু শিক্ষকগন গভীরভাবে জড়িত রয়েছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ছাত্রীর মা-বলেন, তিনি বিধবা ও অসহায় ভাবে তার দুই মেয়েকে নিয়ে জীবন যাপন করছেন। তার মেয়ে মুক্তা পঞ্চম শ্রেণীতে পড়ছে। কিন্তু তার স্কুলের প্রধান শিক্ষক  লেকচার গাইড কিনে দেয়ার তাগিদে অবশেষে লোকজনদের সাহায্যের টাকা দিয়ে তিনশ পঞ্চাশ টাকায় গাইড বই কিনে দিয়েছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন সহকারী শিক্ষিকা জানান, তার স্কুলের প্রধান শিক্ষক পঞ্চম শ্রেনীর ছাত্র- ছাত্রীদের ”পাঞ্জেরী’ গাইড ক্রয় করতে রোল জারি করেছে ।ত ারই প্রেক্ষিতে ছাত্র-ছাত্রীরা ওই গাইড বই ক্রয় করতে হচ্ছে। কারণ লাইব্রেরীর মালিকের সাথে তার গভীর সম্পর্ক রয়েছে। তিনি গাইড বই বিক্রি সাথে জড়িত। কারণ বই ক্রয়ে লাইব্রেরী মালিক গ্রিফট দেন। চতুর্থ শ্রেণীতে অধ্যয়নরত সালমা বেগম নামের এক ছাত্রী জানায়, সে ক্লাসে গাইড বই দেখাতে না পারায় শিক্ষিকার বেত্রাঘাত খেতে হয়েছে। অবশেষে সে বাধ্য হয়েছে পাঞ্জেরী গাইড কিনতে। নবীগঞ্জ বাজারের নোট-গাইড বিক্রেতা অনেক পুরানো লাইব্রেরী ব্যবসায়ী জানান, বাজারে বিভিন্ন ধরনের প্রকাশনার গাইড রয়েছে, তার মধ্যে লেকচার, পাঞ্জেরী, অনুপম, সংসদ, জুপিটার, দিগন্ত, পপি গাইড অন্যতম। কিন্তু সবচেয়ে লেকচার ও পাঞ্জেরী গাইড বেশী বিক্রি হচ্ছে। উপজেলার দীঘলবাক ইউনিয়নের দাউদপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীর কাছে জানতে চাইলে তারা জানায়, শিক্ষকগন নোট-গাইড পড়তে সব সময় তাদের তাগিদ দিচ্ছেন। স্কুলের পঞ্চম শ্রেনীর ক্লাসের বেঞ্চে দেখা গেছে প্রতিটি ছাত্র-ছাত্রীদের সামনে বিভিন্ন প্রকাশনার নোট-গাইড বই রয়েছে। অপরদিকে উপজেলার বিভিন্ন বাজারের লাইব্রেরীতে সাজানো রয়েছে বিভিন্ন প্রকাশনা, যেমন লেকচার, পাঞ্জেরী, অনুপম, সংসদ, জুপিটার, দিগন্ত ও পপি গাইড। এমন ও দেখা গেছে লাইব্রেরীতে যত বই আছে তার অর্ধেক বই হচ্ছে বিভিন্ন প্রকাশনার নোট-গাইড বই। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে নবীগঞ্জ উপজেলার প্রাথমিক সহকারী শিক্ষা অফিসার অজয় কুমার দাশ বলেন, বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষকদেরকে বলা হয়েছে এমনকি চিঠি দিয়ে জানানো হয়েছে তারা যেন ছাত্র- ছাত্রীদেরকে নিষেধ করেন নোট-গাইড না পড়ানোর জন্য। সচেতন মহল মনে করেন। বিভিন্ন প্রতিষ্টানে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের লোকজন অভিযান চালিয়ে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলে তাহা রোধ সম্ভব। নতুবা বন্ধ করা সম্ভব নয়।


     এই বিভাগের আরো খবর