,

খেলাফত মজলিসের সঙ্গে জাতীয় পার্টির নির্বাচনী সমঝোতা

ইমামতির দায়িত্বে এরশাদ

সময় ডেস্ক ॥ আগামী জাতীয় নির্বাচনে এইচ.এম এরশাদকে ইমামতির দায়িত্ব দিয়েছেন বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন ইসলামি মহাজোটের চেয়ারম্যান আবু নাছের ওয়াহেদ ফারুক। তিনি বলেন, ‘ইমামতির জন্য কিছু যোগ্যতার প্রয়োজন, সেটা এরশাদের আছে। আমরা তাঁকে আমাদের নেতৃত্ব বা ইমামতির দায়িত্ব দিয়েছি। কারণ, কোনো মহিলাকে ইমামতির দায়িত্ব দেওয়া যায় না।’ গতকাল শনিবার দুপুরে রাজধানী ঢাকার কাকরাইলের ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে প্রয়াত শায়খুল হাদীস আল্লামা আজিজুল হকের প্রতিষ্ঠিত দল বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের সঙ্গে জাতীয় পার্টির নির্বাচনী সমঝোতা অনুষ্ঠানে আবু নাছের ওয়াহেদ এ কথা বলেন। তিনি ৩৪টি ইসলামি দল নিয়ে জোট গঠন করে গত বছর এরশাদের সঙ্গে ইসলামি মহাজোট করেন। আবু নাছের ওয়াহেদ ফারুকের এই মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে এরশাদ বলেন, ইসলামের চেয়ে বড় শক্তি আর নেই। কিন্তু অনৈক্যের কারণে ইসলাম আজ ধ্বংসের মুখে। ইসলামকে এ দেশে সুপ্রতিষ্ঠিত করতে হবে। সংঘবদ্ধ প্রচেষ্টার মাধ্যমে ইসলামের আওয়াজকে বুলন্দ করতে হবে। প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত এইচ এম এরশাদ খেলাফত মজলিসের সঙ্গে ছয় দফা চুক্তির ভিত্তিতে নির্বাচনী সমঝোতা করেন। ছয় দফার চুক্তির উল্লেখযোগ্য হচ্ছে পবিত্র কোরআন-সুন্নাহবিরোধী আইন না করা, সংবিধানে আল্লাহর প্রতি আস্থা ও বিশ্বাস কথাটি পুনঃস্থাপন করা, কওমি শিক্ষার সনদের স্বীকৃতি দিয়ে জাতীয় সংসদে আইন পাস করা, সব ধর্মের লোকদের ধর্মীয় স্বাধীনতা নিশ্চিত করা। খেলাফত মজলিসের সঙ্গে নির্বাচনী সমঝোতায় নিজের সন্তুষ্টি প্রকাশ করে এরশাদ বলেন, ‘খেলাফত মজলিস একটি অভিজ্ঞ রাজনৈতিক দল। তারা আমাদের সঙ্গে নির্বাচনী ঐক্য করায় খুব খুশি হয়েছি। এতে আমরা কত শক্তিশালী হয়েছি পরে বুঝবেন। আমরা ৩০০ আসনে প্রার্থী দেব। প্রমাণ করব, আমরা ক্ষমতায় আসতে পারি।’ এ সময় এরশাদ দাবি করেন, ইসলামের জন্য সবচেয়ে বেশি কাজ করেছেন তিনি ও তাঁর দল জাতীয় পার্টি। তিনি বলেন, ‘ইসলামকে রাষ্ট্রধর্ম করেছি। শুক্রবারকে সাপ্তাহিক ছুটি করেছি। সব মসজিদের পানি ও বিদ্যুতের বিল মাফ করে দিয়েছি।’ এরশাদের আগে খেলাফত মজলিসের আমির সিলেটের কাজীরবাজার মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল হাবিবুর রহমান বলেন, ‘ইনশা আল্লাহ আমরা সবাই মিলে বাংলাদেশে ইসলামি শাসন কায়েম করব। বিজয়ের নিশানা উড়িয়ে দেব।’ জাপার কো-চেয়ারম্যান জি.এম কাদের খেলাফত মজলিসের নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে বলেন, ‘আপনারা সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আশা করি, যে আশা নিয়ে এসেছেন, তা আশা সফল হবে।’ জাপার মহাসচিব এ.বি.এম.রুহুল আমিন হাওলাদার দলের চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদকে ‘ইসলামি উম্মাহর অনন্য নেতা’ অভিহিত করেন। তিনি বলেন, ‘হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ইসলামি মূল্যবোধে বিশ্বাস করেন, এটা আমাদের সৌভাগ্য। তাই যাঁরা ইসলামি মূল্যবোধে বিশ্বাস করেন, তাঁরা এরশাদের নেতৃত্বে আসুন। আমি মনে করি, খেলাফত মজলিস তাদের বিবেকের তাড়নায় এসেছে।’ অনুষ্ঠানে খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওঃ মাহফুজুল হক তাঁর বাবা প্রয়াত শায়খুল হাদীস আল্লামা আজিজুল হকের বাংলায় অনুবাদ করা কয়েক খন্ডের বোখারি শরিফ এরশাদকে উপহার দেন। পরে খেলাফত মজলিসের আমির নির্বাচনী সমঝোতার সাফল্য কামনা করে মোনাজাত করেন। সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় নেতা ও সাংসদ সৈয়দ আবু হোসেন, সুনীল শুভ রায়, ইসলামি ফ্রন্টের মহাসচিব এম.এ মতিনসহ সম্মিলিত জাতীয় জোটের নেতারা উপস্থিত ছিলেন। এরশাদের নেতৃত্বে বর্তমানে ৫৮ দলের সম্মিলিত জাতীয় জোট আছে। খেলাফত মজলিস এর সঙ্গে যুক্ত হওয়ায় সম্মিলিত জাতীয় জোটে জাতীয় পার্টিসহ মোট দলের সংখ্যা দাঁড়াল ৬০।


     এই বিভাগের আরো খবর