,

চুনারুঘাটে শ্বাশুড়ি হত্যা দুই মাস পর জামাতা গ্রেফতার

চুনারুঘাট প্রতিনিধি ॥ চুনারুঘাট চাঞ্চল্যকর শ্বাশুড়ি হত্যার দায় স্বীকার করেছে জামাতা। হত্যার ২ মাস পর আশুগঞ্জ থেকে গ্রেফতার করেছে সিআইডি পুলিশ। শ্বাশুড়ি হত্যা মামলায় আটক ওলিউর রহমান (৩৬) আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। গতকাল শনিবার বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত হবিগঞ্জের অতিরিক্ত চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শাহীনূর বেগম এর  আদালতে এ জবানবন্দি দেন তিনি। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সিআইডির ইন্সপেক্টর আব্দুর রাজ্জাক বলেন, জবানবন্দিতে উল্লেখ করেছেন, প্রায়ই তার শ্বাশুড়ি জাহানারা বেগমের সাথে টাকা পয়সা নিয়ে ঝগড়া হত। একপর্যায় শ্বাশুড়িকে প্রলোভন দিয়ে স্বর্ণের কানের দুল কিনে দেয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে প্রথমে নিয়ে যায় নোয়াপাড়া, সেখান থেকে নাস্তা করে নিয়ে যায় চুনারুঘাটেরর কথা বলে সাতছড়ি সেখানে ওয়াচ টাওয়ার দেখানোর কথা বলে টাওয়ারের দক্ষিণ দিকে নিয়ে রশিদিয়ে বেধেঁ হত্যা করে।  হত্যার ব্যবহৃত রশি ও আলামত জব্দ করা হয়েছে। ব্যাংক থেকে ৮০ হাজার টাকা ঋণ তুলে না দেয়ায় অতিষ্ঠ হয়ে তিনি শ্বাশুড়ি জাহানারা (৪৫) কে হত্যা করে। হত্যার পরে ওলিউর তার স্ত্রী নিলুফাকে নিয়ে আশুগঞ্জ তালশহর চলে যায় সেখানে ছদ্মবেশে একটি বেকারীতে ভ্যান চালক হিসেবে কাজ নেয়। তদন্তকারী কর্মকর্তা কল লিস্টের মাধ্যমে ওই এলাকায় অনুসন্ধান চালান দীর্ঘদিন অনুসন্ধান এরপর গতকাল দুপুরে তাকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের পর তার দেয়া তথ্যমতে তার স্ত্রী নিলুফা (২৪) কে উদ্ধার করা হয়। নিলুফা জানায় আমার স্বামীর বাড়ি মাধবপুর উপজেলার ২নং চৌহমুনীর ইউনিয়নের তুলশীপুর, গ্রামে। আমার মা মারাগেছেন আমি জানিনা আমি আমার মায়ের সাথে কথা বলতে চাইলে দেয়া হয়নি বলা হয় আমার মায়ের মোবালই বন্ধ অথচ মাকে হত্যা করে ফোন বন্ধ করে তার কাছে ফোন রেখে দেয়। আমি ফোন করতে চাইলে বলে মোবাইল বন্ধ। এত নিষ্ঠুর মানুষ হতে পারেনা, আমার মা আমার সুখের জন্য তাকে মোটর সাইকেল ও একটি দোকান দিয়ে  দিয়েছেন, আমার স্বামীর সব কথাই আমার মা শুনেছেন, মাকে সে বলেছিল এনজিও থেকে ঋন তোলে দিতে নিয়ম অনুযায়ী টাকা ব্যাংক দেয়নি, তাই মাকে সে ভূল বুঝতে শুরু করে আমরা বুঝতেও পারিনি এমন করবে মায়ের সাথে খুবই ফ্রি ছিল, তাই মাকে যেখানে বলত মা তার কথায় যেতেন অবশেষে মাকে হত্যা করল। আমি আমার মায়ের হত্যার বিচার চাই বলে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। মামলার বাদী জাহানারা বেগমের ছেলে ব্যাংক কর্মকর্তা মোঃ মিজানুর রহমান বলেন, আমার  মা নিখোজের পর আমি সিলেট থেকে এসে মাধবপুর থানায় জিডি এন্ট্রি করি, এর কিছু দিন পরই পত্রিকায় চুনারুঘাট অজ্ঞাত নারীর লাশের সংবাদ পাই, সংবাদ পেয়ে চুনারুঘাট থানায় গিয়ে মায়ের বোরখা, জোতা, ব্যাগসহ তথ্য দিয়ে মায়ের লাশ সনাক্ত করে, মামলা দায়ের করেছি। যার মামলা নং জিআর ১৭৮/১৮ মামলা নং ৬, মামলার তদন্তে কোন অগ্রগতি না হওয়ায় অধিকতর তদন্তের জন্য মামলাটি সিআইডিতে নেয়ার জন্য আবেদন করেছি, পরে সিআইডির মাধ্যমে আমার মায়ের খুনীকে গ্রেফতার  করা হয়। মাকে হত্যা করে আমার বোনকেও হত্যার পরিকল্পনা করেছিল। আমার মায়ের খুনীর ফাসি চাই। এদিকে আদালত জবানবন্দি শেষে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। উল্লেখ্য গত ২৯ মে সাতছড়ির থেকে অজ্ঞাত নারীর লাশ উদ্ধার করে মর্গে গ্রেফতার করে চুনারুঘাট থানা পুলিশ। সে মাধবপুর উপজেলার দেবপুর গ্রামের আহাম্মদ জামানের স্ত্রী।


     এই বিভাগের আরো খবর