,

অবশেষে কলরেট সমাধান

সময় ডেস্ক ॥ এক বছরেরও বেশি সময় ধরে টানাপড়েনের পর অবশেষে সমাধান হয়েছে মোবাইল কলরেটের। নতুন কলরেট অনুযায়ী, মোবাইল অপারেটরগুলো ৪৫ পয়সার নিচে কোনো কলরেট নির্ধারণ করতে পারবে না। এই কলরেট সর্বোচ্চ ২ টাকা পর্যন্ত হতে পারবে। মোবাইল ফোনের নতুন এই কলরেট নির্ধারণ করেছে সরকার। আজ থেকেই এই কল রেট চালু হচ্ছে। এর আগে দেশের সব মোবাইল ফোন অপারেটরকে বিষয়টি নিয়ে নির্দেশনা পাঠায় নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। অপারেটরগুলো এই নির্দেশনা কার্যকরের উদ্যোগ নিয়েছে। সরকারের এই সিদ্ধান্ত দেশের প্রায় ১৪ কোটি গ্রাহকের ওপর সরাসরি প্রভাব পড়বে বলেই মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। সরকারের বেঁধে দেয়া ভয়েস কলের এই নতুন রেট অপারেটরদের জন্য লাভজনক কি না তা খতিয়ে দেখছে অপারেটররা। তারা জানান, এখনও এ নিয়ে হিসাব করার সময় আসেনি। এদিকে বিটিআরসির নির্দেশনার সময়সীমা নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করেছেন অপারেটররা। তারা জানান, বিষয়টি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও প্রযুক্তিবিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের সঙ্গে বৈঠক হয় গত ১লা আগস্ট। গত ১৩ দিনে বিটিআরসি থেকে এ নিয়ে কিছু জানানো হয়নি। গতকাল দুপুরে হঠাৎ চিঠি দিয়ে বলা হলো কয়েক ঘণ্টার মধ্যে বাস্তবায়ন করতে। সংশ্লিষ্টরা জানান, দেশে দুই ধরনের কলরেট চালু আছে, অননেট ও অফনেট। অননেট হলো একই মোবাইল নেটওয়ার্কে কল করার (কথা বলার) পদ্ধতি এবং অফনেট কল হলো এক নেটওয়ার্ক থেকে অন্য নেটওয়ার্কে ফোন করা। নতুন নিয়মে এই অননেট ও অফনেটের কলরেট পদ্ধতি আর থাকছে না। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ৪৫ পয়সা হলো নতুন কলরেটের ফ্লোর প্রাইস (ইউনিফায়েড ফ্লোর প্রাইস)। এই রেটের কমে কোনো মোবাইল নম্বরে কল করা যাবে না। তবে মোবাইল ফোন অপারেটররা তাদের পছন্দমতো রেট সাজিয়ে নতুন কলরেট গ্রাহকদের অফার করতে পারবে। কলরেটের সর্বোচ্চ সীমা হবে ২ টাকা, যা আগেও ছিল। কোনো অপারেটর গ্রাহকের কাছ থেকে প্রতি মিনিটের কলের জন্য ২ টাকার বেশি চার্জ করতে পারবে না। বর্তমানে বিটিআরসির নির্ধারণ করে দেয়া সর্বনিম্ন অননেট চার্জ প্রতি মিনিট ২৫ পয়সা ও অফনেট ৬০ পয়সা। সর্বোচ্চ চার্জ প্রতি মিনিটে ২ টাকা। মোবাইল ফোন অপারেটররা এই সীমার মধ্যে থেকে নিজেদের অপারেটরের চার্জ নির্ধারণ করেছে। ফলে একেক অপারেটরের চার্জ ছিল একেক রকম। নতুন কলরেট প্রসঙ্গে মোবাইল অপারেটর গ্রামীণফোনের চিফ করপোরেট অ্যাফেয়ার্স অফিসার মাহমুদ হোসেন বলেন, আমরা কলরেট সংক্রান্ত বিটিআরসির চিঠি পেয়েছি। তাদের নির্দেশনা অনুযায়ী বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।  অপারেটরগুলো একেক প্রডাক্টের জন্য একে রেট নির্ধারণ করবে। তাই আমাদের জন্য এটা কতটা লাভ বা ক্ষতি হবে তার হিসাবের সময় হয়নি। বিষয়টি বাস্তবায়নের পর আমরা দেখার অপেক্ষায় থাকবো। একই ইস্যুতে বাংলালিংকের চিফ কর্পোরেট অ্যান্ড রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স অফিসার তাইমুর রহমান বলেন, বাংলালিংক সরকারের এই উদ্যোগকে আন্তরিকভাবে স্বাগত জানায়। আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি যে, এটি গ্রাহকদের নেটওয়ার্ক বেছে নেয়া ও একই কলরেটে অননেট ও অফনেট কল করার স্বাধীনতা দেয়ার মাধ্যমে তাদের জীবনযাত্রা আরও সহজ করতে ভূমিকা রাখবে, যা আগে সম্ভব ছিল না। আমরা কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে আজ (সোমবার) দুপুরে চূড়ান্ত আদেশ পেয়েছি এবং সব ধরনের নির্দেশ মেনে এটি বাস্তবায়নের জন্য প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। বাংলালিংক তার গ্রাহককে সবসময় বেশি সুবিধা দেয়ার ব্যাপারে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। সংশ্লিষ্টরা জানান, মোবাইল ফোনের অননেট ও অফনেট নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে কারসাজি করা হয়েছে। এতে ভোগান্তির শিকার হন গ্রাহকরা। কম খরচে সেবা দেয়ার সক্ষমতা থাকলেও অপারেটররা গ্রাহকদের কাছ থেকে আদায় করেছেন বেশি টাকা। আবার অননেট ও অফনেট নিয়ে অপারেটরদের মধ্যেও ছিল কারসাজি।


     এই বিভাগের আরো খবর