,

নবীগঞ্জে ইজারাবিহীন জনতার বাজার পশুর হাট নিয়ে হৈ চৈ

ইউএনও বলছেন মামলা নিষ্পত্তি হলে ইজারা দেয়া হবে
বাজার কমিটি বলছে ২০১৫ সালেই মামলা নিষ্পত্তি হয়েছে

মতিউর রহমান মুন্না ॥ পবিত্র ঈদুল আযহাকে সামনে রেখে নবীগঞ্জ উপজেলার সর্ববৃহত্তম পশুর হাট দিনারপুর জনতার বাজার পুরো ধমে জমে উঠেছে। প্রতি বছর ওই পশুর হাট থেকে কোটি কোটি টাকার গরু-ছাগল বিক্রি হয়। বিশেষ করে ঈদুল আযহা উপলক্ষে প্রতি বছর ওই বাজারে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে হাজার হাজার গরু-ছাগল নিয়ে আসেন বিক্রেতারা। প্রতি সপ্তাহে তিন দিন (শনিবার, সোমবার ও বৃহস্পতিবার) পশুর হাট বসে। গত সোমবার সরজমিনে গিয়ে দেখা যায় ঢাকা সিলেট মহাসড়কের উভয় পাশে মাঠ দখল করে জনতার বাজারে পশুর হাটে ক্রেতা বিক্রেতার প্রচন্ড ভীড় ছিল। পশু ও আগত জনসাধারণের গাদাগাদির ফলে মহাসড়কে
যান চলাচলে বিঘœ ঘটে। স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রতি বছর ওই বাজার থেকে লক্ষ লক্ষ টাকার রাজস্ব আদায় হলেও রহস্যজনকভাবে ইজারা দেওয়া হচ্ছেনা। আদায়কৃত রাজস্বের টাকা নিয়ে নানা প্রশ্ন তুলেছেন সমাজের সচেতন মহল। রাজস্ব আদায়কারী ইউএনও অফিসের সহকারী সুব্রত চক্রবর্ত্তীর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সরকারী হিসেবে প্রতি হাজারে ৬০ টাকা হারে রাজস্ব নির্ধারণ করা আছে। তবে সরকারের নীতি মোতাবেক অনেকেই রাজস্ব দিচ্ছেন না। জনতার বাজার ব্যবস্থাপনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক কাজী তোফায়েল আহমেদ জানান, ‘প্রতি বছরই (ঈদুল আযহা) কোরবানির ঈদের বাজারে ও সারা বছরে পশুর হাটে লক্ষ লক্ষ টাকা রাজস্ব আদায় হয়। প্রতি বছর আদায়কৃত রাজস্ব সরকারের কোষাগারে জমা হওয়ার কথা রয়েছে।’ তিনি আরো বলেন, ‘বাজার থেকে এতো টাকা রাজস্ব আদায় করা হলেও ওই বাজার উন্নয়নে এক টাকাও ব্যয় হয় না। ফলে কাদা ও পানির মধ্যে অনেক ক্রেতা-বিক্রেতা পশু কেনা-বেচা করছেন। এমনকি বাজার নিয়ে বিবদমান মামলাগুলো বিগত ২০১৫ সালে নিষ্পত্তি হলেও উপজেলা প্রশাসন বাজার ইজারার কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। এ ব্যাপারে নবীগঞ্জের ইউএনও তৌহিদ-বিন-হাসান বলেন, ওই বাজারের পশুর হাট থেকে রাজস্ব আদায় করা হচ্ছে। উত্তোলনকৃত টাকা উপজেলা হাট-বাজার তহবিলে জমা হয় এমনকি নীতিমালা অনুযায়ী ব্যয় হয়। ইউএনও আরো জানান, ওই বাজার নিয়ে মামলা রয়েছে। মামলাটি এখনো নিষ্পত্তি হয়নি। মামলা নিস্পত্তি হলে নীতিমালা অনুযায়ী ইজারার ব্যবস্থা করা হবে। ঈদের আর মাত্র হাতে গুনা কয়েক দিন বাকী তাই পশুর হাটের ভীড় ও আস্তে আস্তে বেড়েই চলছে। জনতার বাজার ছাড়াও ইতোমধ্যেই নবীগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন স্থানে পশুর হাট বসতে শুরু করেছে। এর মধ্যে উল্লেখ যোগ্য কয়েকটি পশুর হাট হচ্ছে পৌর এলাকার সালামতপুর, ইনাতগঞ্জ, গোপলার বাজার, সৈয়দপুর বাজার, নতুন বাজার। হাটগুলোতে ক্রেতাদের পদভারে সরগরম থাকলেও দাম সাধ্যের বাইরে থাকায় অনেক ক্রেতাই দাম কমার অপেক্ষা করছেন। শেষ মুহূর্তে আরো বেশী ভীড় বাড়বে এবং রাত ১২-১ পর্যন্ত বেচা কেনা চলবে বলে জানিয়েছেন ক্রেতা-বিক্রেতা ও গরুর বাজার কর্তৃপক্ষ। উপজেলার দেবপাড়া গ্রামের ক্রেতা সুরুজ আলী জানান বাজারে দাম খুব বেশী তাই কোরবানির গরু কিনতে হিমশিম খাচ্ছি। আগামী বাজারে দাম আরো কমতে পারে বলে মনে করেন তিনি। উপজেলার ইনাতগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা শহীদ উল্লাহ পশু বিক্রি করতে এসেছেন এ হাটে। তার সাথে কথা হলে তিনি জানান, আমরা আশানুরূপ বিক্রি না করতে পারায় সেগুলো নিয়ে ফিরে যেতে হচ্ছে। একটি গরু ৮০ হাজার টাকা দাম চাইলে ক্রেতারা ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকা দাম করেছেন। তাই বিক্রি করতে পারিনি। তবে ঈদের আগের ৪/৫ দিন বাজার আরো অনেক ভাল হবে বলে আশা করছি। এ ব্যাপারে নবীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও গজনাইপুর ইউপি চেয়ারম্যান ইমদাদুর রহমান মুকুল বলেন, নবীগঞ্জে ঐতিহ্যবাহী দিনারপুর জনতার বাজার পশুর হাটে বিভিন্ন এলাকা থেকে বিক্রেতারা পশু নিয়ে আসেন। প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও নির্বিঘেœ ক্রেতা বিক্রেতারা পশু ক্রয় বিক্রয় করছেন। আইনশৃংখলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পুলিশি টহল জোরদার করা হয়েছে।


     এই বিভাগের আরো খবর