,

নবীগঞ্জে এক মাদকসেবীর বিরুদ্ধে চেয়ারম্যানসহ এলাকাবাসীর অভিযোগ

সংবাদদাতা ॥ নেশার কারণে ৪ বছরের কন্যা সন্তান সহ স্ত্রী-কে তালাক। শুধু তাই নয় তার বিরুদ্ধে সিএনজি ও অটোরিক্সা নিয়ে মাদক ব্যবসায়ীদের কাছে গিয়ে ইয়াবা, ফেনসিডিল, মদ ও গাজাঁ ক্রয় করে সেবন করে আসার পথে অটোরিক্সা বা সিএনজি যোগে এসে তাদের বাড়া না দিয়ে মারধর করে চালকের কাছ থেকে তাদের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন ও টাকা পয়সা নিয়ে বিদায় করে দেয়। এসবের প্রতিবাদ যেই করে তার উপর হামলা ও মামলা করে শিপন। এক পর্যায়ে প্রতিবাদকারী তার দুই মামা ও স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতাকে প্রকাশ্যে মাথা ফাটিয়ে গুরুতর আহত করে হাসপাতাল পাঠায় এবং বাজার এলাকা সহ আরো অনেকেরই উপর হামলা ও লুটপাটের অভিযোগ পাওয়া গেছে। অবেশেষে স্থানীয় চেয়ারম্যান, ইউপি সদস্য, আত্মীয়-স্বজন অতিষ্ঠ হয়ে হবিগঞ্জ পুলিশ সুপার বরাবরে গণস্বাক্ষর করে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযোগ বিবরনে ও এলাকাবাসী সূত্রে প্রকাশ, হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জ উপজেলার ১০নং দেবপাড়া ইউনিয়নের জালালসাপ গ্রামের নুরুল হোসেন নিলু প্রায় দিন যুগ বছর পূর্বে বিয়ে করেন, আউশকান্দি ইউনিয়রে উত্তর দৌলতপুর গ্রামের আমেরিকা প্রবাসী লাল (মুন্সি) মিয়ার কন্যা তাহমিনা বেগমকে। বিয়ের পর তাদের একটি পুত্র সস্তান জন্ম নেয়। আদর করে তার নাম রাখা হয় মোবারক হোসেন শিপন। সন্তান জন্মের ২ মাস পর তার মা তাহমিনা বেগম তাকে নিয়ে বাবার বাড়িতে আসেন এবং সেখানেই শিপনকে লালন পালন করেন। তার বয়স ২ বছরের মাতায় শিপনের মা ইন্তিকাল করেন। এরপর তার নানা-নানী তাকে লালন পালন ও বরণ-পোষণ করেন। এক পর্যায়ে সু-শিক্ষায় শিক্ষিত করতে লাগেন। তার নানা তার নামে আউশকান্দি মহাসড়ক সংলগ্ন প্রায় কোটি টাকা মূল্যের জায়গা দান করেন। পরে উচ্চ শিক্ষার জন্য তার নানা-নানী ও খালা সাইপাস পাঠান। সেখানে প্রায় বছর খানেক থাকার পর সে মাদক সেবনে জড়িয়ে পড়ে এবং পড়ে সে দেশে চলে আসে। দেশে আসার পর শিপনের আত্মীয়-স্বজন তাকে বিয়ে করান পাশ্ববর্তী ৪নং দীঘলবাক ইউনিয়নের ফাদুল্লাহ গ্রামের সমসুর নুরের কন্যা রিপা আক্তারকে। তাদের দাম্পত্য জীবনে একটি কন্যা সন্তান জন্ম নেয়। বিয়ের পর থেকেই প্রায়ই শিপন তার স্ত্রীর সাথে ঝগড়া বিবাদে লিপ্ত থাকতো। প্রতিদিনই সে মাদক সেবন করে স্ত্রীর সাথে ঝগড়া করে এবং বাজারে গিয়েও বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে লুটপাট ও দোকান মালিকদের সাথে অশুভ আচরণ করার অভিযোগ অহরহ রয়েছে। এ নিয়ে শিপনের নানার বাড়ির লোকজনের কাছে বিচার দিলে তারা শিপনকে কিছু জিজ্ঞাস করলেই তাদের উপর উল্টো চলে হামলা ও মামলা। এসবের  ভয়ে কেউ তার বিরুদ্ধে মুখ খুলে কথা বলতে সাহস পাননা। এক পর্যায়ে মাদকের টাকার জন্য তার স্ত্রীকে প্রচন্ড চাপ দেয় এবং মারধর করে। আত্মীয় স্বজন ও স্থানীয় মুরুব্বিয়ান তার স্ত্রীকে বুঝিয়ে আবার শশুর বাড়ি থেকে এনে তার বাড়িতে দেন। এর কিছুদিন পর তার স্ত্রীকে চাপ দেয় যে যৌতুকের জন্য! না দিতে পারলে তাকে মেরে ফেলবে হুমকি দেয়। এতে সে অপারগতা প্রকাশ করলে তাকে আরো মারধর করে। স্বামীর জ্বালা যন্ত্রনা সইতে না পেরে সে তার বাবার বাড়ি চলে যায়। সেখানে গিয়ে তার বাবাকে নিয়ে হবিগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে গত ১৩ অক্টোবর ২০১৬ইং একটি মামলা করে। এ মামলার খবর পেয়ে মামলার থেকে রক্ষা পেতে এর ৫ দিন পর শিপন হবিগঞ্জ নোটারী পাবলিক কার্যালয়ে এফিডেভিটের মাধ্যমে ১৮ অক্টোবর ২০১৬ইং তার স্ত্রীকে তালাক প্রদান করে। এর পূর্বে ১০ অক্টোবর ২০১৬ইং উত্তর দৌলতপুর গ্রামের কয়েকজন নারী-পুরুষকে আসামী করে হবিগঞ্জ নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট মামলা দায়ের করে শিপন। উল্লেখ্য, তার অত্যাচারে ওই এলাকার অনেক লোক নির্যাতনের শিকার হয়েছে। বিভিন্ন সময় স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে নবীগঞ্জ হাসপাতালে চিকিৎসা করান। তার বিভিন্ন ঘটনায় অতিষ্ট হয়ে এলাকাবাসী ও চেয়ারম্যান, মেম্বার, গণস্বাক্ষর দিয়ে গত ২০ আগষ্ট হবিগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার বরাবরে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। এছাড়া নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নবীগঞ্জ, চেয়ারম্যান আউশকান্দি ইউনিয়ন পরিষদ বরাবরে অনুলিপি প্রেরণ করেন। এ ব্যাপারে প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তার আশু হস্তক্ষেপ কামনা করছেন আউশকান্দি এলাকার সচেুন লোকজন।


     এই বিভাগের আরো খবর