,

নবীগঞ্জ শহর রণক্ষেত্র

সিএনজি ষ্ট্যান্ডে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ৩ গ্রামের সংঘর্ষ

দোকান ভাংচুর ।।পুলিশসহ আহত ৭০

মোঃ সেলিম তালুকদার : নবীগঞ্জ শহরে সিএনজি অটোরিকশা ষ্ট্যান্ডের আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে চরগাঁও ও রাজাবাদ-রাজনগর গ্রামবাসীর মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়েছে। এতে পথচারীসহ উভয়পক্ষের প্রায় ৭০ জন লোক আহত হয়েছেন। গুরুতর আহত অবস্থায় ২ জনকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল ও দুইজনকে হবিগঞ্জ আধুনিক সদর হাসপাতালে হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। অপর আহতদের নবীগঞ্জ উপজেলা হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। সংঘর্ষের সময় শহরের মাছ বাজার, পোল্ট্রি ফার্ম, রেস্টুরেন্টসহ ৮/১০টি দোকান ঘর ভাংচুর করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুর ১টার দিকে নবীগঞ্জ পৌর শহরে এ ঘটনাটি ঘটে। এ ঘটনায় শহরজুড়ে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। সংঘর্ষ এড়াতে পুরো শহর এবং গুরুত্বপূর্ণ স্থানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। নবীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এড. আলমগীর চৌধুরী, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভ‚মি) ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) আতাউল গনি ওসমানী, হবিগঞ্জের সহকারী পুলিশ সুপার পারভেজ আলম চৌধুরী, নবীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ এস.এম আতাউর রহমান, ঘটনাস্থলে গিয়ে  নবীগঞ্জ থানা পুলিশের মাধ্যমে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনেন। জানা যায়, গত বুধবার বিকেলে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুই স্ট্যান্ডের দুই শ্রমিকের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এ সংবাদটি তিন গ্রামে ছড়িয়ে পড়লে চরগাঁও ও রাজাবাদ-রাজনগর গ্রামের শত শত লোক দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়লে সংঘর্ষটি রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে রূপ নেয়। সংঘর্ষের সময় মধ্য বাজারে অবস্থিত মৎস্যজীবিদের মাছ বিক্রির মাছের হাট, শুটকির হাট, সবজির হাট, পোল্ট্রি ফার্ম, রেস্টুরেন্টসহ ৮/১০টি দোকান ঘর ভাংচুর করা হয়। উভয়পক্ষের ইট পাটকেল নিক্ষেপে এক ভীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। প্রায় তিন ঘন্টা ব্যাপী হামলা পাল্টা হামলার ঘটনায় শহরের আতংক ছড়িয়ে পড়ে। ব্যবসায়ীরা দোকানপাট বন্ধ করে নিরাপদ থাকার চেষ্টা করে। সংঘর্ষে পুলিশসহ প্রায় ৭০ জন লোক আহত হয়। এ সময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে গিয়ে খাইরুল ইসলাম নামের এক পুলিশ কনস্টেবল ভ‚লবসত নিজের পায়েই গুলি নিক্ষেপ করেন। গুরুত্বর আহত অবস্থায় তাকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। সংঘর্ষে আহত লোকজন নবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেসহ বিভিন্ন ক্লিনিকে চিকিৎসা নিয়েছেন। আহত কনস্টেবল খাইরুল ইসলাম (২২) ও ফয়েজ (২৮)কে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং আব্দুল জলিল (৪০), সাজিদুর রহমান (২৪) কে হবিগঞ্জ আধুনিক সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। এছাড়াও নবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছেন, নুরুল আমিন (৩৫), সতেন দাশ (৩৮), আবুল হোসেন (২৪), বুলবুল (৩৮), আলী হোসেন (৩০), সোনা মিয়া (৩০), শেখ সেজু (৩২), ছাবু মিয়া (২২), বাদশা মিয়া (৫৫), ইব্রাহিম চৌধুরী (৫৫), নুর মিয়া (৩৫), লোকমান মিয়া (৫০), ইব্রাহিম মিয়া (২৫), আলম চৌধুরী (২৮), সুমন আহমদ (২৬), টিটু চৌধুরী (২৮), তাবু দাশ (২৬), লেবু মিয়া (৬৫), শেখ রফিকুল ইসলাম (৪৫), জাবেদ চৌধুরী (৩৫), হিলাল চৌধুরী (৩৮), আব্দুর রউফ (২৬), আমিন হাসান রিপন (২৮), শাহাজাহান চৌধুরী (৩৫), সুজন চৌধুরী (৫২), টিপল চৌধুরী (২৬), শামীম মিয়া (৪০), রিপন চৌধুরী (৩৫), মকবুল হোসেন (৩০), বিপ্রজিৎ দাশ (৩২), রয়েল চৌধুরী (৩০), হারিসুল মিয়া (৩০), জুয়েল মিয়া (২৪), মিলাদ মিয়া (১৯), আবুল কালাম (৪৪), সত্তার চৌধুরী (৬১), টিপু চৌধুরী (২৮), সফিক মিয়া (২৬), শিপু চৌধুরী (২৬), আহমেদ জাবেদ (২২), সুরুজ মিয়া (২৩), পাবলু মিয়া (১৮), জুয়েল মিয়া (২৮), মাছুম আলী (৪০), আশাদুল (২৪), তাজুল ইসলাম (২৪), শেখ হেলাল (২৮), আমিন চৌধুরী (৩৫), আবুল কালাম চৌধুরী (৫০), আব্দুল করিম চৌধুরী (৩৫) প্রমুখ। খবর পেয়ে নবীগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান এড. আলমগীর চৌধুরী, উপজেলার ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা আতাউল গনি ওসমানী, সহকারী পুলিশ সুপার পারভেজ আলম চৌধুরী, পৌর মেয়র আলহাজ্ব ছাবির আহমদ চৌধুরী, নবীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ এস.এম আতাউর রহমান উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল জাহান চৌধুরী, উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান সেফু, জেলা পরিষদের সদস্য এড. সুলতান মাহমুদ, প্যানেল মেয়র-১ এটি সালাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বিশিষ্ট লোকজনের সাথে পরামর্শক্রমে বিষয়টি শালিসের মাধ্যমে দেখবেন বলে পরিস্থিতি শান্ত করেন। তবে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত কোন পক্ষই আপোষ পক্রিয়ায় আসেনি বলে সূত্রে জানা গেছে। এ ঘটনায় উভয় পক্ষে উত্তেজনা বিরাজ করছে।


     এই বিভাগের আরো খবর