মতিউর রহমান মুন্না: নবীগঞ্জের আলোচিত কৃষক আবুল হত্যা মামলার ফাঁসির দন্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামী বশির মিয়া (৫০) কে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গত বৃহস্পতিবার গভীর রাতে উপজেলার দীঘলবাক ইউনিয়নের দাউদপুর গ্রামস্থ নিজ বাড়ি থেকে তাকে গ্রেফতার করে থানা পুলিশ। সে ওই গ্রামের মৃত আরফান উল্লাহর পুত্র। মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, উপজেলার দীঘলবাক ইউনিয়নের দাউদপুর গ্রামের কৃষক মোঃ আবুল মিয়ার সাথে জমিজমা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে মর্তুজ মিয়ার বিরোধ চলছিল। এ বিরোধের জের ধরে উভয় পক্ষের মাঝে একাধিক মামলা মোকদ্দমা ছিল। ২০০৮ সালের ২১ জুন বিকেলে গরুর ধান খাওয়া নিয়ে উভয় পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পরলে স্থানীয় লোকজনের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়। পরদিন ২২ জুন জোয়ালভাঙ্গা হাওরে কাজ শেষে বাড়ি ফেরার পথে দাউদপুর হাকানী খালের ব্রীজের নিকট পৌঁছামাত্র পূর্ব পরিকল্পিতভাবে আসামীরা আবুল মিয়ার উপর হামলা চালায়। তার চিৎকারে স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে নবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং পরে হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিয়ে আসে। এখানে তার অবস্থার অবনতি হলে সিলেট এমএজি ওসমানি মেডিকেলে প্রেরণ করলে সিলেট যাবার পথেই আউশকান্দি এলাকায় তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় নিহতের ভাই ছাদিক মিয়া বাদি হয়ে ২৩ জুন ২০০৮ইং নবীগঞ্জ থানায় ৮ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন। নবীগঞ্জ থানার তৎকালীন ওসি আলী ফরিদ তদন্ত শেষে মরতুজ আলীর স্ত্রী আসামী চম্পা বেগমকে বাদ দিয়ে ৭ জনের বিরুদ্ধে ২০০৯ সালের ৩১ জুন চার্জশিট দাখিল করেন। মামলায় ২২ জন সাক্ষীর মধ্যে ১৪ জনের সাক্ষ গ্রহণ শেষে গত ২৪ জানুয়ারী ৭ জনের ফাঁসির রায় প্রদান করেন বিচারক মাফরোজা পারভীন। আদালত সূত্র জানায়, মামলার ৪ আসামী গত ২৪ জানুয়ারি আদালতে হাজিরা দিয়েছিল। কিন্তু রায় ঘোষণার আগ মুহূর্তে রায়ে সাজা হতে পারে এমন ভয়ে আসামীরা কাঠগড়ায় না দাঁড়িয়ে পালিয়ে যায়। ওই দিনই আদালত তাদেরকে মৃত্যুদন্ডে দন্ডিত করেন। আদালতের রায়ের কিছু দিন পরে দন্ডপ্রাপ্ত আসামী মর্তুজ আলী, তার পুত্র ফজলু মিয়া, মঈনুল মিয়া মেয়ে, শিফা বেগম, আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। পলাতক থাকেন মরতুজ আলীর ভাই বশির মিয়া, ছেলে ফয়সল মিয়া ও মৃত আফছর মিয়ার ছেলে সুন্দর মিয়া। গত বৃহস্পতিবার গভীর রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে নবীগঞ্জ থানার সেকেন্ড অফিসার এস আই মফিজুল হকের নেতৃত্বে এস আই মাজহারুল ইসলাম, এসআই এস এম ফিরোজ আহমেদ, এসআই সাইফুল ইসলামসহ একদল পুলিশ বশির মিয়ার নিজ বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করতে সম হন। গতকাল শুক্রবার সকালে তাকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।