,

নবীগঞ্জ শহরে থমথমে অবস্থা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ফের হামলা

দুই সিএনজি স্ট্যান্ডের বিরোধের জেরে সংঘর্ষ

র‌্যাব ও বিজিবির টহল জোরদার

মোঃ সেলিম তালুকদার \ ভয় আর আতঙ্কের জনপদে পরিণত হয়েছে নবীগঞ্জ শহর। বিবদমান পক্ষগুলোর মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনায় আতঙ্কিত লোকজন দিকবিদিক ছুটোছুটি করে নিরাপদ আশ্রয় খুঁজছেন। এ ঘটনায় মানুষের মধ্যে চরম নিরাপত্তাহীনতা বিরাজ করছে। ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার খবর মূহুর্তেই চাওর হওয়ায় দোকানপাট গুলো বন্ধ করে দিচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। শহরজুড়ে থমথমে অবস্থা বিরাজ করায় সাধারণ মানুষের চলাফেরা ও সীমিত হয়ে পড়েছে। গুঞ্জন আর গুজবে সাধারণ মানুষের মধ্যে অস্বস্থি বিরাজ করছে। বাতাসে খবর আসছে চরগাঁও গ্রামে অনেকগুলো গ্রামের মানুষের বৈঠক চলছে, রাজাবাদ গ্রামে ও আরো অনেক গ্রামের বৈঠক বসছে। এ ধরণের সংবাদ উত্তেজনার পারদকে আরো বাড়িয়ে দিচ্ছে। উত্তেজনার আর আতঙ্ক যেনো কিছুতেই কাটছেনা বরং তা বেড়ে গিয়ে নতুন মাত্রা সংযোজন করেছে। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় লাঠিসোঠাসহ একদল লোক শহরের জুয়েল ম্যানশনে তিমিরপুর গ্রামের একটি দোকানে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাংচুর ও লোটপাটের ঘটনায় বিবদমান বিরোধকে আরো চাঙ্গা করেছে। শহরে এক ধরণের নিরাপত্তাহীনতা বিরাজ করছ্।ে গতকাল রাতে এ ঘটনায়  লোকজনের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়লে মুহুর্তেই দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায়। শহরের রাস্তাগুলো ফাঁকা হয়ে যায়। লোকজন নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যান। আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার টহল জোরদার করলে যে কোন অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা রোধ করা সম্ভব বলে সচেতন মহল মনে করেন। নিরাপত্তা বিঘিœত হয় এমন কার্যক্রম থেকে বিবদমান পক্ষকে বিরত রাখতে শহরে আরো বেশি করে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্য মোতায়েন জরুরী হয়ে পড়েছে। সুত্রে জানা গেছে, নবীগঞ্জ পৌর এলাকায় সিএনজি অটোরিকশা ষ্ট্যান্ডের আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে গত বৃহস্পতিবারে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনাটি আপোষে মীমাংসার জন্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ডাঃ মুশফিক হুসেন চৌধুরীর প্রচেষ্টায় গতকাল সন্ধ্যায় শহরের শেরপুর রোডস্থ জেলা পরিষদ সদস্য আব্দুল মালিকের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে একটি বৈঠক বসে। এতে নবীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এড. আলমগীর চৌধুরী, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল হাই, সাবেক ইউপি মেম্বার আব্দুল হেকিম, উপজেলা বিএনপির সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আবুল হোসেন, উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান সেফু, পৌর আওয়ামীলীগের সভাপতি মোজাহিদ আহমদ, জেলা পরিষদের সদস্য আব্দুল মালিক, উপজেলা পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি ইয়াওর মিয়া, নবীগঞ্জ বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাবেক সভাপতি সুখেন্দু রায় বাবুল, প্যানেল মেয়র এটি.এম সালাম, কাউন্সিলর আব্দুস সালাম, উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শাহ রেজভী আহমেদ খালেদ, কাউন্সিলর মোঃ সুন্দর আলী, সাবেক কাউন্সিলর যুবরাজ গোপ, পৌর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক নির্মলেন্দু দাশ রানা, সাবেক ইউপি মেম্বার রফিক মিয়া, আব্দুস ছুবহান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। বৈঠক চলাকালীন সময়ে খবর আসে চরগাঁও গ্রামের লোকজন রাজাবাদ ও রাজনগর গ্রামের লোকজনের উপর হামলা চালিয়েছে। এছাড়া খবর আসে জেলা পরিষদের সদস্য আব্দুল মালিককে চরগাঁও ও তিমিরপুরের লোকজন গালিগালাজ করেছে। কিন্তু এ দুটি সংবাদই ছিল নিছক গুজব। ঘটনার সত্যতা যাছাই না করেই একদল লোক দেশীয় অস্ত্র শস্ত্র নিয়ে শহরের সোনালী হোটেল সংলগ্ন তিমিরপুর গ্রামর মৃত খোয়াজ উল্লার পুত্র জুনু মিয়ার দোকানে হামলা চালিয়ে ভাংচুর ও লুটপাট চালায়। জুনু মিয়া তার দোকানে হামলার ঘটনার জন্য আনমনু এবং নোয়াপাড়া গ্রামের লোকদের দায়ী করেছেন। জুনু মিয়ার দোকানে হামলার ঘটনায় শান্তির পরিবেশকে অশান্ত করে তুলে। ঘটনা মীমাংসায় বৈঠকরত নেতৃবৃন্দ অনেকটা হাল ছেড়েই যার-যার পথে চলে যান। ফলে বিবদমান পক্ষের মধ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠার একটি সুযোগ হাত ছাড়া হয়ে যায়। রাত সাড়ে ১০ টায় এ রিপোর্ট লেখার সময়  র‌্যাবের একদল সদস্যকে শহরে টহল দিতে দেখা গেছে। র‌্যাবের উপস্থিতিতে সাধারণ মানুষ স্বস্থির নিঃস্বাস ফেলছেন। উল্লেখ্য যে, গত বুধবার তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুই স্ট্যান্ডের দুই শ্রমিকের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এ সংবাদটি তিন গ্রামে ছড়িয়ে পড়লে চরগাঁও ও রাজাবাদ-রাজনগর গ্রামের শত শত লোক দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়লে সংঘর্ষটি রক্তক্ষয়ী রূপ ধারন করে। এ সময় মাছ বাজার, পোল্ট্রি ফার্ম, দোকানপাটসহ বেশ কয়েকটি দোকান ভাংচুর করা হয়। এতে পুলিশসহ প্রায় ৭০ জন লোক আহত হয়।


     এই বিভাগের আরো খবর