,

দু‘দফা বৈঠকেও আপোষের চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসেনি, দেশীয় অস্ত্র উদ্ধারনবীগঞ্জে আইনশৃংখলা বাহিনীর টহলে সাধারণ মানুষের মধ্যে স্বস্তি

মোঃ সেলিম তালুকদার : নবীগঞ্জে দুই সিএনজি ষ্ট্যান্ডের বিরোধের জের নিয়ে সংঘর্ষ, দোকানপাঠ ভাংচুরের ঘটনায় উত্তপ্ত নবীগঞ্জ শহর ও তার আশ-পাশের গ্রামে আইনশৃংখলা বাহিনীর র‌্যাব, থানা পুলিশের টহল ও অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলে বর্তমানে উভয় পক্ষই শান্ত রয়েছেন। গতকাল শনিবার সকাল ১১টায় নবীগঞ্জ থানা কমপ্লেক্স প্রাঙ্গঁনে তিমিরপুর, চরগাঁও, রাজাবাদ, রাজনগর, আনমনু, ও নোয়াপাড়াসহ কয়েকটি গ্রামের বিশিষ্ট লোকজনদের নিয়ে আইনশৃংখলা রক্ষার স্বার্থে বৈঠক করেন হবিগঞ্জের এডিশনাল এসপি আ.স.ম শামসুর রহমান। এতে উপস্থিত ছিলেন, সার্কেল এএসপি পারভেজ আলম চৌধুরী, নবীগঞ্জ পৌর মেয়র আলহাজ্ব ছাবির আহমেদ চৌধুরী, নবীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ এস.এম আতাউর রহমান, উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল জাহান চৌধুরী, জেলা পরিষদ সদস্য আব্দুল মালিক, প্যানেল মেয়র এটিএম সালাম, কাউন্সিলর মোঃ আলাউদ্দিন, কাউন্সিলর আব্দুস সালাম, কাউন্সিলর সুন্দর আলী, বিশিষ্ঠ মুরব্বি আব্দুস সহিদ সাহিদ মিয়া, বশির আহমদ চৌধুরী, মিজানুর রহমান চৌধুরী নিলু, শওকত আলী, মকছদ চৌধুরী, এড.ফারুক আহমেদ, মিনিবাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম সুমন,সাবেক ইউপি সদস্য এনাম উদ্দিন, বর্তমান ইউপি সদস্য ভুট্টো মিয়া, আব্দুস সুবহান, আবুল মিয়া, নুর উদ্দিন, আবু সালেক, বেলাল আহমেদ প্রমূখ। দিনব্যাপী উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভ‚মি) ও ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী অফিসার মোঃ আতাউল গনি ওসমানীর নেতৃত্বে র‌্যাব ও পুলিশ নিয়ে শহরে টহল দেন। আইনশৃংখলা বাহিনী তৎপর থাকায় কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি বলে জানা গেছে। ফলে শহরবাসীর মধ্যে স্বস্তি ফিরে আসে। দিনের প্রথমে নবীগঞ্জ বাজারে আশ-পাশের লোকজন না আসলেও বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত লোকজনদের নির্বিঘেœ চলাচল করতে দেখা গেছে। এমনকি র‌্যাব ও পুলিশ গুরুত্বপূর্ণ স্থানে টহল দিচ্ছেন। এরই মধ্যে বিভিন্ন গ্রামে আইনশৃংখলা বাহিনী বিশেষ অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করেছে। গত দু‘দিনের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনায় আতঙ্কের জনপদে পরিণত হয়েছিল নবীগঞ্জ শহর ও আশপাশের গ্রামগুলি। খবর মূহুর্তেই চাওর হওয়ায় দোকানপাট বন্ধ করে দিয়েছিলেন ব্যবসায়ীরা। আতঙ্কিত লোকজন নিরাপদ আশ্রয় খুঁজছিল। শহরজুড়ে থমথমে অবস্থা বিরাজ করায় সাধারণ মানুষের চলাফেরাও সীমিত হয়ে পড়েছিল। এক শ্রেনীর লোকদের গুঞ্জন আর গুজবে সাধারণ মানুষের মধ্যে অস্বস্থি বিরাজ করছিল। এ ধরণের সংবাদ উত্তেজনার পারদকে আরো বাড়িয়ে দিচ্ছিল। উত্তেজনার আর আতঙ্ক যেনো কিছুতেই কাটছিল না বরং তা বেড়ে গিয়ে নতুন মাত্রা সংযোজন করছিল। নবীগঞ্জ পৌর এলাকায় সিএনজি অটোরিক্সা ষ্ট্যান্ডের আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে গত বৃহস্পতিবারে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনাটি আপোষে মীমাংসার জন্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ডাঃ মুশফিক হুসেন চৌধুরীর প্রচেষ্টায় গত শুক্রবার সন্ধ্যায় শহরের শেরপুর রোডস্থ জেলা পরিষদ সদস্য আব্দুল মালিকের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে বৈঠকে বসেন। কিন্তু সমাধান আসেনি। যে যার মতো হাল ছেড়ে চলে যান। পরে গতকাল শনিবার সকালে নবীগঞ্জ থানা কমপ্লেক্স প্রাঙ্গঁনে বৈঠকে এক পক্ষ সালিশের পক্ষে মতামত দিলেও অপর পক্ষ তিমিরপুর ও চরগাঁও গ্রামের লোকজন দুইদিন পর তাদের মতামত জানাবে বলে বৈঠক সূত্রে জানা গেছে। এছাড়া বৈঠকে উভয়পক্ষকে শান্ত থাকার জন্য এবং যাতে করে অপ্রীতিকর কোন ঘটনা না ঘটে সে বিষয়ে সর্তক থাকার জন্য বলা হয়। উল্লেখ্য যে, গত বুধবার তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুই স্ট্যান্ডের দুই শ্রমিকের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এ সংবাদটি তিন গ্রামে ছড়িয়ে পড়লে চরগাঁও ও রাজাবাদ-রাজনগর গ্রামের শত-শত লোক দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়লে সংঘর্ষটি রক্তক্ষয়ী রূপ ধারন করে। এ সময় শহরের মধ্য বাজারের মাছ বাজার, পোল্ট্রি ফার্ম, দোকানপাটসহ বেশ কয়েকটি দোকান ভাংচুর করা হয়। এতে পুলিশসহ প্রায় ৭০ জন লোক আহত হয়। এ ঘটনায় উত্তপ্ত হয়ে উঠে নবীগঞ্জ শহরতলীর রাজাবাদ, আনমনু, নোয়াপাড়া, চরগাঁও ও তিমিরপুর গ্রাম।


     এই বিভাগের আরো খবর