,

মাধবপুরে শিক্ষা কর্মকর্তা অবরুদ্ধ, শিক্ষকদের নিবার্চন নিয়ে দুই শিক্ষককে হেনস্থা

মাধবপুর প্রতিনিধি: মাধবপুরে প্রাথমিক শিক্ষক কল্যাণ সমিতির নির্বাচন এবং দুই শিক্ষককে হেনস্থা করাকে কেন্দ্র করে প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও শিক্ষকদের মধ্যে ক্ষোভ ও উত্তেজনা দেখা দেয়। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার হস্তক্ষেপে সৃষ্ট ঘটনার নিষ্পত্তি হয়। গত মঙ্গলবার দুপুরে মাধবপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে এ ঘটনা ঘটে। ক্ষুব্ধ শিক্ষকদের অভিযোগ মাধবপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ছিদ্দিকুর রহমানের নির্দেশে ১৪ সেপ্টেম্বর মাধবপুর প্রাথমিক শিক্ষক কল্যাণ সমিতির নির্বাচনের তফসিল ঘোষনা করা হয়। নির্বাচনের তফসিল অনুযায়ী বিভিন্ন পদে প্রার্থীরা নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়ে আসছিলেন। প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মঙ্গলবার সকালে নির্বাচন কর্মকর্তা শিক্ষক সৈয়দ শামসুর রহমানকে অফিসে ডেকে এনে নির্বাচনের আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে নির্বাচন স্থগিত করার জন্য চাপ সৃষ্টি করেন। এ সময় প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শিক্ষক আখতারুল ইসলাম এবং বিজয় ভট্টাচার্য্যকে তার অফিসে হেনস্থ করেন। নির্বাচন স্থগিতের পায়তারা এবং দুই শিক্ষককে হেনস্থ করার সংবাদটি দুই শিক্ষক উপজেলা পাইলট স্কুলে সভা চলাকালীন সময় প্রকাশ করলে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। উপস্থিত অর্ধশতাধিক শিক্ষক প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করে তার অফিস ঘেরাও দিয়ে অবরুদ্ধ করে রাখে। খবর পেয়ে মাধবপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মল্লিকা দে দ্রæত প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে গিয়ে প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এবং শিক্ষকদের নিয়ে সমঝোতা বৈঠকে বসেন। বৈঠকে শিক্ষকরা জানান, নির্বাচনের জন্য তারা প্রস্তুত ছিল না। প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নির্বাচন করার জন্য তাদের উৎসাহিত করেছেন। কিন্তু প্রার্থীরা প্রচার শেষ করে নির্বাচনের চূড়ান্ত মুহুর্তে নির্বাচন স্থগিতের জন্য চাপ সৃষ্টি এবং দুই জন শিক্ষককে হেনস্থ করায় শিক্ষকদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। অভিভাবকদের অভিযোগ সরকারি বিদ্যালয়ের কোন কর্মকর্তা কর্মচারী এভাবে নির্বাচন করতে পারে না। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে প্রার্থী ও তাদের সমর্থক শিক্ষকরা বিদ্যালয়ের পাঠদান থেকে বিরত থেকে নির্বাচনী প্রচারণায় নেমে পড়েছে। এতে করে ছাত্রছাত্রীদের  লেখাপড়া মারাত্মক ভাবে ব্যাহত হচ্ছে। প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ছিদ্দিকুর রহমান জানান, শিক্ষকদের নির্বাচন এ ধরনের নিয়মের মধ্যে পড়ে না। কিন্তু মাধবপুরের শিক্ষকরা কয়েকভাবে বিভক্ত। শিক্ষকদের বিভক্তি কমিয়ে আনার জন্য এই নির্বাচনের আয়োজন করা হয়। তবে শিক্ষকরা বিদ্যালয়ে পাঠদান থেকে বিরত থেকে প্রচার প্রচারণায় অংশগ্রহণ করে আচরণবিধি লঙ্ঘন করে আসছিল। এ কারণে বিভিন্ন দিক বিবেচনা করে নির্বাচন স্থগিত করা যায় কি না বিষয়টি ভাবা হয়েছিল। এরই মধ্যে শিক্ষকরা ভুল বোঝে আমার প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করে। সেজন্য কেউ কষ্ট পেয়ে থাকলে আমি দুঃখ প্রকাশ করি। মাধবপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মল্লিকা দে সভায় জানান, প্রাথমিক সমাপনী পরীাকে সামনে রেখে শিক্ষকদের এ ধরনের নির্বাচন দেওয়া ঠিক হয়নি। যেহেতু নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়ে গেছে সেহেতু ১৪ সেপ্টেম্বর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া শিক্ষক ও প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার মধ্যে যে ভুলবোঝা বুঝি সৃষ্টি হয়েছিল তা আলোচনা করে সমাধান করা হয়েছে। হবিগঞ্জ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাক জানান, বিদ্যালয় চলাকালীন সময় কোন শিক্ষক বিদ্যালয় ফাঁকি দিয়ে কোন কাজ করতে পারে না। এমনকি সমিতির নিবার্চন প্রচারেও বাধা রয়েছে। কর্মদিবসে নির্বাচনী কাজে শিক্ষকরা উপজেলায় যেতে পারে না। মোট কথা ছুটির দিনে নিবন্ধিত সমিতি হলে নির্বাচন করতে পারে।


     এই বিভাগের আরো খবর