,

বঙ্গবন্ধু হত্যার পরিকল্পনাকারীদের চিহ্নিত করতে কমিশন হবে: প্রধানমন্ত্রী

সময় ডেস্ক: জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পরিকল্পনাকারীদের চিহ্নিত করতে কমিশন গঠনের কথা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল বুধবার সংসদে প্রধানমন্ত্রী তার জন্য নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্বে মো. আবদুল্লাহর প্রশ্নের জবাবে এ কথা জানান। এর আগে বিকেল ৫টায় স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদের বৈঠক শুরু হয়। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ পরপর দু’বার সরকার গঠনের পর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পূর্বে ষড়যন্ত্রের ব্যাপারে অনেক তথ্য প্রকাশ পেয়েছে। এতে দেখা যায়, পরোক্ষভাবে দেশি ও বিদেশি কিছু লোক ও সংস্থা বঙ্গবন্ধু হত্যার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ছিল। এ জন্য জাতির পিতা হত্যার পরিকল্পনাকারীদের চিহ্নিত করতে একটি কমিশন গঠনের বিষয়টি সরকারের সক্রিয় বিবেচনায় রয়েছে। বঙ্গবন্ধুর পলাতক খুনিদের ফিরিয়ে আনার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে উল্লেখ করে সংসদ নেতা বলেন, বঙ্গবন্ধুর যেসব খুনি বিভিন্ন দেশে পালিয়ে আছে এবং আশ্রয় গ্রহণ করেছে তাদের দেশে ফিরিয়ে আনার সব প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে। এ বিষয়ে আন্তঃমন্ত্রণালয় কমিটি সম্মিলিতভাবে কাজ করছে। এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, কানাডায় বসবাসরত পলাতক আসামি নূর চৌধুরীর তথ্য দিতে ফেডারেল কোর্ট অব জাস্টিসের আদালতে আবেদন করা হয়েছে। পলাতক রাশেদ চৌধুরীকে আমেরিকা থেকে ফিরিয়ে আনতে কূটনৈতিক ও আইনি কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। সেখানে আইনজীবী নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া পলাতক আসামিদের গ্রেফতারে ইন্টারপোলের মাধ্যমে রেড অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে। আন্দোলনের পরও রাস্তা পারাপারে সচেতনতা বাড়েনি: সড়ক দুর্ঘটনা এড়াতে পথচারীদের সচেতনতা আরও বাড়ানোর ওপর গুরুত্ব আরোপ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এত বড় আন্দোলনের পর রাস্তা পারাপারে পথচারীদের সচেতনতা বাড়েনি। এখনও যত্রতত্র রাস্তা পার হতে দেখা যায়। শিক্ষার্থীদের নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলন সম্পর্কিত সংরক্ষিত নারী আসনের সাংসদ নূর ই হাসনা লিলি চৌধুরীর এক সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, এখনও রাস্তা পারাপারে দেখা যায়— অনবরত গাড়ি চলাচলের মধ্যেই একটা ছোট্ট শিশুর হাত ধরে মা রাস্তা পার হচ্ছেন অথবা বাবা বাচ্চাদের নিয়ে হেঁটে যাচ্ছেন। অথচ খুব কাছেই ফুটওভার বা আন্ডারপাস তারা ব্যবহার করছেন না। এমনকি যুবকরাও এসব ব্যবহার না করে দৌড়ে রাস্তা পার হতে চাচ্ছে। ফলে দুর্ঘটনা ঘটছে। রাস্তা পারাপারে পথচারীদের দোষ কতটুকু— সেটাও দেখা দরকার বলে মন্তব্য করেন তিনি। দুর্ঘটনার পর আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়ার প্রবণতার কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, যে কোনো দুর্ঘটনার পরে আহত ব্যক্তিকে চিকিৎসা দেওয়ার চেষ্টার তুলনায় চালককে ধরে মারার আগ্রহটাই সবাই বেশি দেখায়। যে কারণে দুর্ঘটনার পরে চালকরা আহত ব্যক্তিকে চাপা দিয়ে হলেও পালানোর চেষ্টা করে। ফলে যার বাঁচার সম্ভাবনা থাকে তিনিও আর বাঁচার সুযোগ পান না। তিনি বলেন, মারধর যদি বন্ধ হয় তাহলে অনেক দুর্ঘটনা কমে যায়। এটা হলো বাস্তবতা। রাস্তা পারাপারের সময় সবার অন্তত ট্রাফিক আইন মেনে চলা উচিত। প্রধানমন্ত্রী বলেন, চালকদের বিরুদ্ধে সরকার ব্যবস্থা নিচ্ছে, কিন্তু এসব পথচারীর বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া যাবে? তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিতে হবে। তাহলেই এটা থামবে। ট্রাফিক নিয়মটা স্কুল থেকে সবাইকে শেখানো উচিত। এর আগে তারকা চিহ্নিত প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ছাত্রছাত্রীদের নিরাপদ সড়ক আন্দোলন সংক্রান্ত ৯ দফা দাবির অধিকাংশই বাস্তবায়িত হয়েছে। এ প্রসঙ্গে তিনি মৃত্যুদন্ডের বিধান রেখে নিরাপদ সড়ক আইন প্রণয়ন কার্যক্রম গ্রহণসহ নানা উদ্যোগের কথা জানান। সাংসদ একেএম রহমতুল্লাহর প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী ঢাকা শহরে এলিভেটেড রিংরোড করার পরিকল্পনার কথা জানান। এ প্রসঙ্গে তিনি বুড়িগঙ্গা, শীতলক্ষ্যা, বালু, তুরাগে নৌপথ ও এর পাড় ধরে ভবিষ্যতে রিংরোড করে দেওয়ার পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করেন। সব দেশের রাজধানীতেই যানজটের সমস্যা রয়েছে: স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য রুস্তম আলী ফরাজীর সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী তার লন্ডনে বসবাসের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে বলেন, ‘পৃথিবীর বড় বড় শহরেও যানজটের সমস্যা রয়েছে। সব দেশের রাজধানীতেই যানজটের সমস্যা রয়েছে। ‘৬৯ সালে যখন লন্ডনে ছিলাম তখনও এই যানজটের সমস্যা। আশিতে যখন ছিলাম তখনও এই সমস্যা। এখনও গেলে সমস্যা।’ ঢাকার যানজট সমস্যা সম্পর্কে তিনি বলেন, মানুষের অর্থনৈতিক উন্নতি যত হচ্ছে তারা তত বেশি গাড়ি ব্যবহার করছে। আর যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। আগে যে পরিবারের একটিও গাড়ি ছিল না, এখন তাদের মধ্যে কোনো কোনো পরিবার দুটিও গাড়ি চালাচ্ছে। যার একটি গাড়ি ছিল তার এখন তিনটি গাড়ি। নিজে চালানোর পরিবর্তে চালকদের দিয়ে গাড়ি চালনোর প্রবণতার ফলে গাড়ি রাস্তায় অনবরত ঘুরতে থাকে। আর যানজট লেগেই থাকে। যানজট যেমন সমস্যা, তেমনি যানজটে কিন্তু এটাও বোঝায় যে— বাংলাদেশের মানুষ অর্থনৈতিকভাবে অনেক উন্নত হচ্ছে। তাদের আর্থিক সচ্ছলতা বাড়ছে এবং তারা গাড়ি ব্যবহার করতে পারছে। ঢাকায় এটাকে নিরসনের চেষ্টা করা হচ্ছে।


     এই বিভাগের আরো খবর