,

চিকিৎসা শিক্ষার গুণগত মান উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান

সময় ডেস্ক: দেশের চিকিৎসা শিক্ষার গুণগত মানোন্নয়নের উদ্যোগ নিতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, বেসরকারি খাতে এখন অনেক মেডিকেল কলেজ গড়ে উঠছে। কিন্তু  সেগুলোতে পড়াশোনাটা কেমন হচ্ছে তা আমাদের দেখতে হবে। সেখানে প্রকৃত ডাক্তার গড়ে উঠছে কিনা  সেটা আমাদের দেখা দরকার। একমাত্র মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় পারবে তা নজরদারিতে রাখতে। গতকাল সকালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব  মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বিশ্ববিদ্যালয়ের সুপার  স্পেশালাইজড হাসপাতালের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন ও কনভেনশন  সেন্টার, ডায়াগনস্টিক ও অনকোলজি ভবন এবং ডক্টরস’ ডরমেটরির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, যাতে একটা মানসম্মত শিক্ষা গ্রহণ নিশ্চিত করা যায় সে ব্যবস্থাটা আমরা করতে চাই। চিকিৎসাসেবার মানোন্নয়ন করতে চাই। আর বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়কে সেন্টার অব এক্সিলেন্স হিসেবে গড়ে তুলতে বহুমুখী পরিকল্পনা আমরা বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইতিমধ্যে রাজশাহীতে মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হয়েছে। রাজশাহী এবং রংপুরে যে সমস্তসরকারি এবং বেসরকারি  মেডিকেল কলেজ রয়েছে  সেগুলোকে এই মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে এফিলিয়েটেড হতে হবে। চট্টগ্রামে মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় করেছি। চট্টগ্রাম এবং আশেপাশের জেলার যে ক’টি  মেডিকেল কলেজ রয়েছে সেগুলো এই মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে এফিলিয়েটেড থাকবে। ঠিক  সেইভাবে সিলেটে যে মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হবে তার সঙ্গে সিলেটের সবগুলো মেডিকেল কলেজ এফিলিয়েটেড থাকবে। তিনি বলেন, এখনো যেসব বিভাগে  মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় নাই  সেগুলো বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে এফিলিয়েটেড থাকবে, কেবল ঢাকা মেডিকেল কলেজ বাদে। আর ঢাকা মেডিকেল কলেজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে এফিলিয়েটেড সেটা ওইভাবেই থাকবে। এর বাইরে যেগুলো নতুন সব সরকারি-বেসরকারি মেডিকেল কলেজ যখন ঐ বিভাগে বিশ্ববিদ্যালয় করা হবে তার সঙ্গে এফিলিয়েটেড হয়ে যাবে। শেখ হাসিনা বলেন, এসব  মেডিকেল কলেজে কি পড়াশোনা হচ্ছে, আদৌও সেখানে কোনো পড়াশোনা হচ্ছে কিনা, সত্যিকার ডাক্তার তৈরি হচ্ছে নাকি রোগী মারা ডাক্তার হচ্ছে সেটা আমাদের  দেখা দরকার। তিনি বলেন,  মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে  কেবল পোস্ট গ্রাজুয়েট স্টাডি এবং রিসার্চ হবে আর গ্রাজুয়েশনসহ অন্যান্য কর্মকান্ড সব মেডিকেল কলেজে সম্পন্ন হবে বিশ্বের অন্যান্য দেশে যেভাবে হয়। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী  মোহাম্মদ নাসিম, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি শেখ ফজলুল করিম  সেলিম অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন। বিএসএমএমইউ’র ভিসি অধ্যাপক ড. কনক কান্তি বড়ুয়া অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব জি এম সালেহ উদ্দিন স্বাগত বক্তৃতা করেন এবং ঢাকাস্থ কোরীয় রাষ্ট্রদূতের পক্ষে  চোও মিন জো বক্তৃতা করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ বিশ্ববিদ্যালয়  দেশে মেডিকেল শিক্ষার নতুন নতুন সুযোগ তৈরি করবে বলে আমি বিশ্বাস করি। বিএসএমএমইউ’র উত্তর পাশে ৩ দশমিক ৪ একর জায়গায় এক হাজার ৩৬৬ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হচ্ছে অত্যাধুনিক বিশেষায়িত (সুপার স্পেশালাইজড) হাসপাতালটি। নির্মাণ ব্যয়ের মধ্যে এক হাজার ৪৭ কোটি টাকা ঋণ হিসেবে দিচ্ছে দক্ষিণ কোরিয়া। মাত্র শূন্য দশমিক শূন্য এক শতাংশ সুদে ৪০ বছরে এই ঋণ পরিশোধ করতে হবে, যার মধ্যে গ্রেস পিরিয়ড থাকবে ১৫ বছর। প্রকল্পের আওতায় প্রথম ফেজে দুটি  বেজমেন্টসহ ১১ তলা হাসপাতাল ভবন নির্মাণ করা হবে। বাংলাদেশ সরকারের অর্থায়নে পরবর্তী দুই তলা ঊর্ধ্বমুখী সমপ্রসারণ করা হবে। ১৩ তলা হাসপাতাল ভবনটিতে থাকবে এক হাজার শয্যা। বিএসএমএমইউ সূত্র জানায়, নির্মিতব্য এই হাসপাতালে প্রথমবারের মতো সেন্টার বেইজড  হেলথ কেয়ার ডেলিভারি সিস্টেম চালু হবে। হাসপাতালটিতে প্রত্যেকটি সেন্টারের জন্য নির্দিষ্ট বহির্বিভাগ চালু থাকবে। ইমার্জেন্সি  মেডিকেল কেয়ার সেন্টারটি দিনরাত ২৪ ঘণ্টা জরুরি সেবা দিতে সক্ষম হবে। এখান থেকে  দৈনিক প্রায় ৩-৪ হাজার রোগী বহির্বিভাগে চিকিৎসা পাবে।


     এই বিভাগের আরো খবর